বাংলাদেশে আটকা শতাধিক বিদেশি ফুটবলার

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বিশ্বের প্রায় ১২৬টি দেশে ছড়িয়েছে করোনা ভাইরাস। করোনা ভাইরাসের কারণে স্থগিত হয়ে গেছে দেশের সব খেলাধুলা। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ স্থগিত করেছে ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগেও খেলতে এসেছেন এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ফুটবলাররা। যাদের পরিবার থাকেন নিজ দেশে। এই মুহূর্তে অনেকেই ফিরে যেতে চাইছেন নিজ নিজ পরিবারের কাছে। আতঙ্কিত পরিবারকে সময় দিতে চাইছেন তারা। কিন্তু বিদেশের সঙ্গে অধিকাংশ ফ্লাইট বন্ধ থাকায় পারছেন না যেতে।

তবে সব সময় তারাও আতঙ্কে থাকেন করোনা ভাইরাস নিয়ে।
বাংলাদেশের পেশাদার শীর্ষ ফুটবল লীগে অংশ নিচ্ছে ১৩টি ক্লাব। প্রত্যেক ক্লাবেই আছেন পাঁচজন করে বিদেশি ফুটবলার। দু’একটি ক্লাবে সংখ্যাটি আরো বেশি। বসুন্ধরা কিংসের হয়ে এএফসি কাপ খেলছেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড হার্নান বার্কোস, কোস্টারিকার হয়ে বিশ্বকাপ খেলা ড্যানিয়েল কলিনদ্রেস। আবাহনীতে আছেন নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার সানডে সিজুবা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের বাইরেও ঢাকায় অনেক বিদেশি ফুটবলার আছেন, যারা ভাড়ায় খেলে থাকেন। এরাই সবাই এখন আটকা পরেছেন করোনা ভাইরাসের কারণে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশি ফুটবলাররা সবাই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাদেরকে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দিতে পারলে আমরাও বেঁচে যেতাম। কারণ তারা পরিবার নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে। যদিও আমরা জানি করোনা ভাইরাস যেভাবে সংক্রমণ শুরু করেছে, তাতে আগামী তিনমাসের মধ্যেও আর লীগ শুরুর সম্ভাবনা নেই।’ ব্রাদার্স ইউনিয়নের ম্যানেজার আমের খান বলেন, ‘বিদেশি ফুটবলাররা দেশে যেতে চায়। কেউ কেউ খুবই উদগ্রীব হয়ে পড়েছে পরিবার নিয়ে। কিন্তু আমাদের তো কিছুই করার নেই। তাই তাদেরকে বলেছি, এই অবস্থায় কোথাও যাওয়া যাবে না। সরকার সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। ভাবছি যদি ফ্লাইট খোলে, তাহলে তাদেরকে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দিবো। কারণ জীবনের আগে অন্য কিছুই নেই।’ মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব বলেন, ‘আমাদের ব্রিটিশ কোচ শিন লেন ঢাকাতেই সময়টা উপভোগ করছেন। কারণ পরিস্থিতি সবাইকেই মেনে নিতে হবে। বিদেশি ফুটবলাররা চাইছে নিজ দেশে ফিরে যেতে। কিন্তু কোনো সুযোগ নেই। তাই যেতে পারছে না। ফলে ভাগ্যকে মেনে নিয়েছে সবাই। স্থানীয়দের চারদিনের ছুটি দেয়া হয়েছে। বিদেশি ফুটবলাররা ক্লাবেই থাকবে সব নিয়ম মেনে।’ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ম্যানেজার আনোয়ারুর করিম হেলাল বলেন, ‘বিদেশি ফুটবলারদের নিয়ে আমরা বসেছিলাম। তাদের কথাও শুনেছি। তারাও যেতে চাইছিল। কিন্তু তাদের যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই ক্লাবেই তাদের থাকতে হবে। করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে ডাক্তারসহ সব ধরনের ব্যবস্থাই থাকবে ক্লাবে। আশা করি তাদের কোনো সমস্যা হবে না।’ ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু বলেন, ‘বিদেশিরা সবাই ভালো আছে। তবে তাদের মধ্যে তিনজন পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই এপার্টমেন্টে থাকছে। তাই তাদের সমস্যা নেই। বাকি বেলফোর্ট ও সানডে ক্লাবেই রয়েছে। তাদের সুরক্ষা দিবো আমরা। তাছাড়া আমাদের কোচ মারিও লেমোসও এখানে থাকছেন।’ বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান অবশ্য বিদেশি ফুটবলারদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই নিজ দেশে পাঠাতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘এখন লীগ বন্ধ। আজ (গতকাল) থেকে সবাইকে ছুটি দিয়েছি। স্থানীয় ফুটবলাররা বাড়ি চলে যাচ্ছে। তবে বিদেশি ও কোচিং স্টাফদের আমরা ক্লাবেই রেখে দিয়েছি। তারা যদি দেশে যেতে চায়, তাহলে সেখানে ১৪ দিন থাকতে হবে কোয়ারেন্টিনে। আবার বাংলাদেশে আসলে ফের ১৪দিন থাকতে হবে। এই সমস্যায় তারাও যেতে রাজি নয়। তাছাড়া তাদের সুরক্ষার বিষয়টি আমরা দেখবো।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর