ঋণ প্রদানে অনিয়মসহ নানা ধরনের দুর্নীতিতে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে মূলধন সঙ্কটে ভোগছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। এই ঘাটতি পূরণে ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এই মূলধন ঘাটতি পূরণে আগামী অর্থবছরের বাজেটেও ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান অর্থবছরের বাজেটেও রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে রাখা হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। সূত্র জানায়, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী কৃষি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে পুনঃমূলধন বিনিয়োগ খাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণে ২০১১-১২ অর্থবছরে রাখা হয়েছিল ৩৪১ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও ওই অর্থবছরে দেওয়া হয়েছিল ৫৪১ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৪২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও দিতে হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের স্থলে দিতে হয়েছে ৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ রাখা হয় ৫ হাজার কোটি টাকা। তবে ওই অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে রাখা হয় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের বাজেটে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। সূত্র জানায়, বর্তমান অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সরকারি ছয় ব্যাংককে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেসিক ব্যাংক পেয়েছে ১ হাজার কোটি, সোনালী ৩০০ কোটি, রূপালী ২০০ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ১৪৯ কোটি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১০০ কোটি এবং গ্রামীণ ব্যাংক ২২ কোটি টাকা। সূত্র জানায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সোনালী ব্যাংক পায় ১ হাজার ৯৯৫ কোটি, জনতা ব্যাংক ৮১৪ কোটি, অগ্রণী ব্যাংক ১ হাজার ৮১ কোটি, রূপালী ব্যাংক ২১০ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১৭৫ কোটি এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৮০ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে সোনালী ব্যাংক পেয়েছিল ৬ কোটি ৮১ লাখ, রূপালী ব্যাংক ৬২ কোটি ৫০ লাখ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ১১৯ কোটি ৪৯ লাখ এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১০৮ কোটি টাকা। আর ২০১১-১২ অর্থবছরে সোনালী ব্যাংককে দেওয়া হয় ৮৩ কোটি এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের জন্য ছাড় করা হয় ১০৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।