করোনাকালে বরিশালে পারিবারিক কৃষিতে সফলতা

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মহামারি করোনার (কোভিড-১৯) সংক্রমণ চলছে গোটা বিশ্বে। আর এই করোনার সংক্রমণ স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

কিন্তু সেই স্থবিরতার মধ্যেও বাংলাদেশ তথা বরিশালে কৃষি মানবসভ্যতার কর্ণধার হয়েই এগিয়ে চলেছে।

বরিশাল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের মূল সময়টাতেই বরিশাল বিভাগে পারিবারিক কৃষি অনেকটাই সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে। নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে।  নিজের পরিবারের পুষ্টির পাশাপাশি অনেকের অর্থ উপার্জনের রাস্তাও তৈরি করে দিয়েছে পারিবারিক কৃষি।
বরিশাল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, করোনাকালে বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি চাষ হয়েছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। এর কারণে করোনাকলীন বরিশাল বিভাগে ২৮ হাজার ৮শ কেজি সবজি পারিবারিক কৃষি থেকে এসেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি বরিশালের অতিরিক্ত পরিচালক আফতার উদ্দিন জানিয়েছেন, কৃষি হচ্ছে একমাত্র পেশা যা মানুষকে শতাব্দী থেকে শতাব্দী বাঁচিয়ে রেখেছে। কৃষির ওপর ভর করেই মানব সভ্যতা দিন দিন উন্নত হচ্ছে। করোনাকালেও আহার জুগিয়েছে কৃষি। এই সময়ে আমরা মানুষকে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেছি। সেই কারণে বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি চাষ হয়েছে। এটি বরিশাল বিভাগের জন্য সুখবর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বিভাগের ৬ জেলায় ৩৬৬ ইউনিয়নে পারিবারিক কৃষির আওতায় সবজি-পুষ্টি বাগানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এখন ইউনিয়নগুলোয় ১১ হাজার ৫৮৪টি পারিবারিক কৃষি বাগান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ৮৫টি ইউনিয়নে দুই হাজার ৭২০টি বাগান, পিরোজপুরে ৫৪টি ইউনিয়নে এক হাজার ৭২৮টি বাগান, ঝালকাঠির ৩২টি ইউনিয়নে এক হাজার ২৪টি বাগান, পটুয়াখালী জেলার ৮৫টি ইউনিয়নে দুই হাজার ৫৯২টি বাগান, বরগুনা জেলার ৪৫টি ইউনিয়নে রয়েছে এক হাজার ৪৪০টি বাগান এবং ভোলা জেলায় মোট ৬৫টি ইউনিয়নে দুই হাজার ৮০টি বাগান। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সবজি উৎপাদিত হয়েছে ভোলা জেলায়। সেখানে এক মৌসুমে ২০ হাজার কেজি সবজি এখন পর্যন্ত সংগৃহীত হয়েছে। বরিশাল জেলায় দুই হাজার ৫৪০ কেজি, পিরোজপুর জেলা থেকে দুই হাজার ৩৮০ কেজি, ঝালকাঠি জেলা থেকে দুই হাজার কেজি, পটুয়াখালী থেকে ৪৩০ কেজি, বরগুনা থেকে এক হাজার ৪৫০ কেজি।

মানুষ পারিবারিক কৃষিতে যত বেশি আগ্রহী হবেন তত সাংসারিক স্বচ্ছলতা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে কৃষি কর্মকর্তা আফতার উদ্দিন বলেন, পারিবারিক কৃষি উপকূলীয় অঞ্চলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এর মাধ্যমে ভিটামিন ও সবজির চাহিদা পূরণ হয়। তেমনি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও আসে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর