পরিবারের কারো ক্যান্সার ধরা পড়লে যা করবেন

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ক্যান্সার একটি মারণব্যাধি। যার রয়েছে অনেক প্রকারভেদ। এই রোগে পৃথিবীতে প্রতি বছরই অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া লাখো মানুষ বিভিন্ন রকমের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে। একবার এই রোগ হলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া কষ্টকর। তবে অসম্ভব কিছু নয়।

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ডা. রফিক আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি লোকের বাস। আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ লোক বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। শহর ও গ্রামের অসংখ্য রোগী ক্যান্সারে ভুগছে। বেশিরভাগ রোগীই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছে না কিংবা শেষ পর্যায়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছে।

ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা পেতে হলে আমাদের দেশের জনগণের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার রোগের প্রতিরোধ এবং রোগ নির্ণয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

কারো পরিবারে ক্যান্সার রোগ ধরা পড়লে, পরিবারের সবার প্রশ্ন- চিকিৎসায় রোগ ভালো হবে তো? চিকিৎসকের আতঙ্ক ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়ে যায়নি তো!

ক্যান্সার একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ যা চিকিৎসায় ভালো হয়। আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের ভাষ্যমতে- ক্যান্সার রোগ শনাক্ত হওয়ার পরে আয়ু পাঁচ বছর। পরক্ষণে বলা হচ্ছে রোগ নির্ণয়ের পরে যদি রোগীর উপসর্গমুক্ত রাখা যায় তবে ধারণা করতে হবে ক্যান্সার নির্মূল হয়েছে। এসব কিছু নির্ভর করে ক্যান্সারের ধরন, প্রকৃতি, স্থান ও উৎপত্তি এবং বিস্তৃতি ইত্যাদির ওপরে।

জন হপকিনসের সর্বশেষ তথ্যমতে, প্রত্যেক মানুষের শরীরে ক্যান্সার কোষ বিদ্যমান। এই কোষ যখন কোটি কোটি কোষে পরিণত হয় তখন তা পরীক্ষাগারে ক্যান্সার হিসেবে চিহ্নিত হয়।

শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাই ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। একজন মানুষের শরীরে ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধির পেছনে যেসব কারণ দায়ী তার মধ্যে প্রধান কারণ হচ্ছে পুষ্টি অবস্থা, বংশগত প্রভাব, পরিবেশ, খাবার-দাবার ও জীবনযাত্রার প্রভাব। এর ফলে শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ঘটতে পারে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ দিনে অন্তত পাঁচ ধরনের ফলফলাদি বা শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য। ভিটামিন ‘সি’ ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

আমাদের মেডিকেল শিক্ষকরা প্রায় প্রতিটি ছাত্রকেই প্রশ্ন করতেন- জীর্ণশীর্ণ অবস্থার (ক্যাকেক্সিয়া) কয়েকটি কারণ বল, তখন প্রথম উত্তর দিতে হয়- ক্যান্সার, টিবি, ডায়াবেটিস, থাইরটক্সিকোসিস ও অপুষ্টি ইত্যাদি।

ক্যান্সার চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে উপশমগত চিকিৎসা। শেষ সময়ে ক্যান্সার রোগীর মানসিক প্রশান্তি খুবই প্রয়োজন। এসময়ে রোগীর ঘুম কমে যায়, ক্ষুধমন্দা দেখা দেয় ও ওজন কমে যায়। রোগী জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েন। মানসিক শক্তি হারিয়ে যায়। কারো কারো মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা যায়। এ সময় রোগীর সাইকোলজিক্যাল কিংবা মনোসামাজিক চিকিৎসার খুবই বেশি প্রয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর