হাওরে ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি

হাওর এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ত্রাণ দেয়ার নামে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউপি সদস্য গাজী বাচ্চুর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মিঠামইন উপজেলার কাটখালী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুস্থ কৃষকের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। প্রায় ১২০ জন কৃষকের কাছ থেকে এই চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেয়া ত্রাণ দিতে নেয়া হয় এই টাকা।

অভিযোগকারীদের মধ্যে মো. ফুলমিয়া (৫০), জনাব আলী (৬০), সাবির হোসেন (৩৫), মোছা. পারুল বেগম (৪৫) ও মোছা. সুর্যবানসহ(৩৫) ১২০ জনের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করে গাজী মেম্বার।

আরেক অভিযোগকারী কাটখাল ইউনিয়ন সোনারতরী যুব সংঘের সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ২৫ তারিখ পর্যন্ত গাজী বাচ্চু মেম্বার এই টাকা আদায় করে।

অভিযোগকারীদের ভাষ্য মতে, বিষয়টি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ভুক্তভোগীদের দাবিতে কাটখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম গাজী বাচ্চু মেম্বারকে ডেকে মানুষের টাকা ফেরত দিতে বলেন। স্থানীয়দের চাপে কিছু মানুষের টাকা ফেরত দেয়। তবে যাদের টাকা ফেরত দেয়া হয় পরবর্তীতে তাদের ত্রাণ দেয়া হয়নি। টাকা ফেরত পেয়ে কাটখাল হাটে ত্রাণ নিতে গেলে মোছা. সুর্যবান (৩৫) ও পারুল বেগমকে (৪৫) গালিগালাজ করে বের করে দেয় গাজী মেম্বার।

স্থানীয় এই ইউপি সদস্য অধিকাংশ লোকের টাকা আজও ফেরত দেয়নি বলেও অভিযোগ উঠে আসে তাদের কথায়।

এদিকে, ত্রাণ বিতরণের জন্য খরচের কথা বলে জন প্রতি তিন কেজি করে চাল কম দেয়া হচ্ছে। ১ হাজার ৪০০ জনকে মোট ১০৫ মন চাল কম দেয় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য গাজী বাচ্চু। যার বাজার মূল্য এক লাখ ২৬ হাজার টাকা।

অভিযোগকারীরা আরো বলেন, নিয়ম ভঙ্গ করে টাকার বিনিময়ে একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির মধ্যে চাল ও টাকা বিতরণ করা হচ্ছে।

হাওর এলাকায় সরকারের আন্তরিক নানা উদ্যেগের পরও গাজী বাচ্চু মেম্বারদের মতো কিছু অসাধূ ব্যক্তির কারণে সরকারের ভারমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলেও জানান হাওর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, যথাযথ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য গাজী বাচ্চুর মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তাছাড়া ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর