ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: ৮ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক শুনানির পর চার্জশিট গ্রহণ করেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি রাশিদা সাঈদা খানম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাঈদা বলেন, আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে তা আমলে নিয়েছেন। তবে এ মামলার চার্জগঠনের তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। চার্জশিটে কোনো ধরনের আপত্তি জানাননি বাদীপক্ষের আইনজীবীরা।

এদিকে মঙ্গলবার নির্ধারিত তারিখে এ মামলার চার্জশিটভুক্ত আট আসামিকে কঠোর নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করে পুলিশ।

গত ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে আলোড়ন তোলা এ মামলার চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।

পরে রোববার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চাঞ্চল্যকর এ মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ ছিল। এদিন বাদীপক্ষে আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করা হয়। বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগপত্র নিয়ে আপত্তি থাকলে তা জানাতে এক সপ্তাহের সময় প্রদান করেন ট্রাইব্যুনালে বিচারক মোহিতুল হক।

১০ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। পরে রোববার সকালে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মো. মোহিতুল হকের আদালতে বাদীপক্ষ ফের দুদিন সময় বাড়ানোর আবেদন করলে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার চার্জগঠনের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

চার্জশিটে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়াকে সরাসরি ধর্ষণে সম্পৃক্ত এবং রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই আটজনই বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে স্বামীকে নিয়ে শাহপরান মাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন নির্যাতনের শিকার তরুণী (২৫)।

ফেরার সময় তারা গাড়ি থামিয়েছিলেন নগরের টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে। স্ত্রীকে প্রাইভেটকারে রেখে স্বামী পার্শ্ববর্তী দোকানে গিয়েছিলেন। ওই সময় প্রাইভেটকারটি ঘিরে ধরে কয়েকজন তরুণ।

প্রাইভেটকারসহ ওই দম্পতিকে তারা নিয়ে যায় বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ভেতরে। সেখানে স্বামীর সামনেই গাড়ির ভেতর সংঘবদ্ধভাবে তরুণীকে ধর্ষণ করে ছয় তরুণ। পরে তাদের মারধর করে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। আটকে রাখা হয় গাড়িও।

ওই ঘটনার পর রাতেই নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে নগরের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামিসহ সন্দেহভাজন আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব ও পুলিশ।

সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার দুজন হলেন, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়া। গ্রেপ্তারের পর তাদের প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে সবাই দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আদালতে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর