শুধু দমন নয়, স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চাই জঙ্গিদের

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সরকার শুধু কঠোরহস্তে জঙ্গিবাদ দমন করছে তাই নয়, পাশাপাশি তাদের ভুল পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

জঙ্গি আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ‘নব দিগন্তে প্রত্যাবর্তন’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। এছাড়াও একাডেমিশিয়ান, ইসলামি স্কলার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিশিষ্ট নাগরিকেরাও এতে উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার র‌্যাবের হাতে আত্মসমর্পণ করা নয় জঙ্গি ‘ডি-রেডিক্যালাইজেশন’ অ্যান্ড ‘রিহ্যাবিলিটেশন’ এর মাধ্যমে সন্ত্রাস ও চরমপন্থার জীবন পরিত্যাগ করে শান্তি ও আলোর পথে তথা সমাজের মূলধারায় নিজেদের সমর্পণ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কখনো জঙ্গিবাদকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন জিরো টলারেন্সের কথা। এটা আমরা কখনো বলি না জঙ্গিবাদকে মূলোৎপাটন করেছি। বলেছি জঙ্গিবাদকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি।’

‘জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে না পারলেও আমরা তা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। আমরা জঙ্গি দমনে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছি। আমরা যে সব সময় কঠোর হস্তে জঙ্গি দমন করি। বিষয়টি তেমন না। আত্মসমর্পণের সুযোগ দিয়েও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনছি এবং আহ্বানও জানাচ্ছি। তারা ফিরে এলে তাদের পুর্নবাসনে সহযোগীতা করা হবে’ বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুধু জঙ্গিবাদ কঠোরহস্তে দমন করছি তাই নয়, পাশাপাশি ডিরেডিকালাইজশনের মাধ্যমে তাদের ভুল পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন, আর ভুল না করেন। আজ দেখছেন যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন তাদের ট্রাক্টর, কৃষিজ উপকরণ, নগদ টাকা দিচ্ছে র‌্যাব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘যারা বিভ্রান্ত হয়েছিল, পথ হারিয়েছিল, যারা ভুল পথে ভুল আদর্শে বুকে নিয়েছিল তারা আজ বাবা মার কাছে ফিরেছেন, বাবা মার মুখে হাসি ফুটিয়েছেন যা অনেক দিন পর দেখছি। ক্যামেরাবন্দি এ দৃশ্য দেখবে দেশের মানুষ। এজন্য র‌্যাবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘উন্নয়নের রোল মডেলের সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ হচ্ছে রোল মডেল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গিবাদকে সমূলে মূলোৎপাটনে বিশেষ দিকনির্দেশনা হচ্ছে, যারা ভুল পথ ছেড়ে, জঙ্গিবাদ ছেড়ে সমাজে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা। চরমপন্থি বা জলদস্যু যারাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেয়েছে তাদের সুযোগ দেয়া হয়েছে, পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করেছি। সেটার বাস্তবায়নই আজকের এই অনুষ্ঠান।’

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় ৯ সদস্য আত্মসমর্পণ করেন। এসময় স্বরাষ্টমন্ত্রী ও আইজিপি জঙ্গিদের তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেন।

আত্মসমর্পণ করা জঙ্গি সদস্যদের মধ্যে আছেন জেএমবি’র ছয় জন এবং আনসার আল ইসলামের তিন জন সদস্য। তারা হলেন- শাওন মুনতাহা ইবনে শওকত (৩৪), ডা. নুসরাত আলী জুহি (২৯), আসমা ওরফে রামিসা (১৮), মোহাম্মদ হোসেন হাসান গাজী (২৩), মো. সাইফুল্লাহ (৩৭), (৬) মো. সাইফুল ইসলাম (৩১), মো. আবদুল্লাহ আল মামুন (২৬) মো. সাইদুর রহমান (২২), আবদুর রহমান সোহেল (২৮)।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর