কোরিয়ান সিনেমার নায়ক নারায়ণগঞ্জের মাহবুব

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মাহবুব আলম পল্লব। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন অভিবাসী কর্মী হিসেবে। কাজও শুরু করেন। কিন্তু নিজেসহ অন্য শ্রমিকদের নিয়ে নানারকম সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন।

অবশেষে জড়িয়ে পড়েন দেশটির ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। একসময় নিজেই বনে যান চলচ্চিত্রের নায়ক! শ্রমিক থেকে নায়ক হয়ে পৃথিবীর অন্যতম প্রভাবশালী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে জড়িয়ে আছেন তিনি।

মাহবুব লি নামে বর্তমানে দেশটির অত্যন্ত পরিচিত মুখও এই বাংলাদেশি নাগরিক।

মাহবুব বললেন, ‘অভিবাসী কর্মী হিসেবে প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হতে হয় আমাদের। এ কারণে নিজে অভিবাসী হয়েও অন্যদের নিয়ে কাজ করা শুরু করি। একটা সময় বুঝতে পারি, নিজেদের জন্য গণমাধ্যম তৈরি করা দরকার। তৈরি করতে থাকি ডকুমেন্টারি। অভিনয় বা চলচ্চিত্র নিয়ে একেবারেই অভিজ্ঞতা ছিল না আমার। পরিকল্পনা ছিল ২-৩ বছর সেখানে থাকবো। তারপর দেশে আসবো। তবে সেটা হয়নি। ঘটনাক্রমে যুক্ত হয়ে যাই চলচ্চিত্রে।’

২০০৪ সাল থেকে ডকুমেন্টারির কাজ শুরু করেন। কারণ, স্থানীয় মিডিয়া প্রবাসীদের কোনও সুযোগ দিচ্ছিল না। ‘দ্য রোড অব দ্য রিভেঞ্জ’ নামের শর্ট ফিল্মে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। এটা এক ধরনের ব্ল্যাক কমেডি।

নায়ক হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ছবির পরিচালক আমাকে চিনতেন। এখানে আমার দায়িত্ব ছিল স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করা ও একজন হ্যান্ডসাম নায়ককে খুঁজে দেওয়া। খুঁজতে গিয়ে দেখি, মনের মতো কাউকেই পাচ্ছি না। কিন্তু পরিচালক যে বিষয়গুলো চান, তার সবই আমার মধ্যে আছে। নির্মাতাকে গিয়ে বললাম, আমি অভিনয় করলে কেমন হয়? তিনি বললেন, মাহবুব তুমি হ্যান্ডসাম, ভাষাও জানো, ভিসারও সমস্যা নাই। কিন্তু তোমাকে ওজন কমাতে হবে। এভাবেই অভিনয় করা শুরু।’

বান্ধবীকে নিয়ে চলচ্চিত্রটি। প্রথম ছবিই জেনজু উৎসবে দুটি পুরস্কার পেয়ে যায়। যার ফলে কোরিয়ান মিডিয়ার লাইম লাইটে উঠে আসেন মাহবুব।

২০০৯ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‌‘হোয়ার ইজ রনি…’। একই বছরে আসে ‌‘বান্ধব’, যা দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।

মাহবুব অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে আছে—‘মাই ফ্রেন্ড অ্যান্ড হিজ ওয়াইফ’, ‘হোয়ার ইজ রনি’, ‘পেইনড’, ‘ইউ আর মাই ভাম্পায়ার’, ‘পারফেক্ট প্রপোজাল’, ‘আসুরা: সিটি অব ম্যাডনেস’ ও ‘লাভ ইন কোরিয়া’।

নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজে পড়াশোনা করা মাহবুব এখন দক্ষিণ কোরিয়ান চলচ্চিত্র শিল্পে সরাসরি যুক্ত আছেন। পাশাপাশি কাজ করছেন চলচ্চিত্র নির্মাণ ও পরিবেশনায়। বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়ার পরিচালকও তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর