বাংলাদেশকে প্রেরণা যোগাচ্ছে শততম টেস্ট

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম টেস্ট জয় পায় বাংলাদেশ। ম্যাচটি ছিল  টাইগারদের শততম টেস্ট, তাই প্রাপ্তির আনন্দও ছিল বেশি। চার বছর পর আরেক শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশকে প্রেরণা যোগাচ্ছে সেই জয়। আগামী ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হবে শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্গত দুই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দল অনুশীলনে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছে। এরই ফাঁকে মেহেদী হাসান মিরাজ জানালেন, শততম টেস্টের মত মনোভাব পুষে রাখলে এবারও জয় অসম্ভব নয়, ‘যখন শততম টেস্ট ম্যাচ জিতেছিলাম খুব ভালো লেগেছিল। শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম টেস্ট জিতেছিলাম। ঐ মুহূর্তে অবশ্যই ভালো লেগেছিল। দলের সবার কমিটমেন্ট ছিল- আমরা ভালো ক্রিকেট খেলব এবং যে করেই হোক ম্যাচটা জিততে হবে। টিম মিটিংয়ে সবার ভেতর কমিটমেন্ট ছিল এবং বলছিল- আমাদের কিছু একটা করতে হবে, সর্বোচ্চটা দিতে হবে। যখন খেলা শুরু হয়েছিল তখন প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের কাছেই ওরকম এটিটিউড ছিল। বডি ল্যাঙ্গুয়েজও এরকম ছিল যে আমাদের জিততে হবে ম্যাচটা। ভালো সময় খারাপ সময় পাঁচ দিনই ছিল। শেষ দিন যখন ভালো ক্রিকেট খেলতে পেরেছিলাম এবং দল জিতেছিল তখন খুব আনন্দ লেগেছিল সবার ভেতরে। খুব আনন্দ পেয়েছিলাম ঐ ম্যাচটা জিতে।’
শ্রীলঙ্কার কন্ডিশন ও উইকেট অনেকটাই বাংলাদেশের কাছাকাছি। উপমহাদেশের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ কিছুটা সুবিধা পায় এখানে। সেই সাথে প্রেরণা যোগাচ্ছে অতীত রেকর্ড। মিরাজ বলেন, ‘এর আগে আমরা শ্রীলঙ্কায় যতবারই খেলেছি ভালো ক্রিকেট খেলেছি। নিদাহাস ট্রফি অল্পের জন্য জিততে পারিনি। শ্রীলঙ্কা সিরিজে ওয়ানডেতে ১-১ ছিল, টেস্টেও ওরা একটা জিতেছে আমরা একটা জিতেছি। আমরা ওদের চেয়ে পিছিয়ে নই, গত ৩-৪ বছর যেভাবে খেলেছি ওদের মাটিতে। যদি আগের মত কমিটমেন্ট থাকে আর লড়াই দিতে পারি তাহলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।’
শ্রীলঙ্কায় জন্ম কিংবদন্তি অনেক স্পিনারের। মুত্তিয়া মুরালিধরন, রঙ্গনা হেরাথরা উচ্চাসনে বসেছিলেন লঙ্কান মাটিতে খেলেই। সেই শ্রীলঙ্কায় স্পিনাররা খেলতে গেলে একটু বাড়তি রোমাঞ্চ কাজ করা স্বাভাবিক। এমনকি সফরকারী দলটি বাংলাদেশের মত উপমহাদেশের দেশ হলেও। ছুটির কারণে এবার বাংলাদেশ স্কোয়াডে নেই সাকিব আল হাসান। স্পিন আক্রমণভাব সামলানোর দায়িত্বটা তাই মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের কাঁধে। মিরাজ অবশ্য আশাবাদী, চ্যালেঞ্জ জয় করে লঙ্কাদের বিপক্ষে ভালো করতে পারবেন বাংলাদেশের স্পিনাররা, ‘স্পিনারদের জন্য শ্রীলঙ্কায় লাইন আর লেন্থ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে উইকেট খুব ভালো থাকে। আমি মনে করি ১-২ দিন ওরকম না-ও কাজ করতে পারে। কিন্তু ৩-৪ দিনে উইকেটে স্পিনারদের সহায়তা থাকে। ঐ সুযোগ আমরা নিতে পারি। সর্বশেষ যে টেস্টগুলো খেলেছি স্পিনারদের ওরকম সুবিধা ছিল না। আমি আর তাইজুল ভাই চেষ্টা করেছি রান যেন কম দিয়ে ভালো জায়গায় বল করতে পারি। তখন অনেক সময় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিগত দিনের টেস্টগুলোতে যেমন করেছি সেটাই করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।’
মূল স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টোরি নেই, তাই স্পিন কোচের ভার সামলাচ্ছেন দেশি কোচ সোহেল ইসলাম। মিরাজ-তাইজুলদের টেকনিক-ট্যাকটিক্স রীতিমত নখদর্পণে দেশসেরা স্পিন কোচের। তাকে শ্রীলঙ্কায় পেয়ে উচ্ছ্বসিত মিরাজ, ‘আমরা অনেক দিন ধরে সোহেল স্যারের সাথে কাজ করছি। বিশেষ করে আমি তো ছোটবেলা থেকেই কাজ করছি, তাইজুল ভাইও অনেক দিন ধরে কাজ করছে। আমাদের সুবিধা হল স্যার আমাদের ভালোমত চেনে। কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে তা ভালো করে বলতে পারে। এখানে ২ দিন অনুশীলন করেছি। আমাকে নিয়ে কাজ করেছে, তাইজুল ভাইকে নিয়েও কাজ করেছে। দেশে থাকলে স্যারের সাথে কাজ করা হয়। দেশের বাইরে হয়ত বেশি পাই না। এই একটা সুযোগ পেয়েছি। তার সাথে পরামর্শ করব কীভাবে কী করলে ভালো হয়।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর