মা অন্যের বাড়ি কাজ করে মেয়েকে লেখাপড়া করালেন এবং মেয়েও ডাক্তার হয়ে মাকে দিলেন এই প্রতিদান

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ অনেক মানুষের সাফল্যের গল্পগুলি খুবই অনুপ্রেরণামূলক হয়। এই গল্পগুলি এমনই হয় যা, আপনাকে একটি নতুন শক্তি প্রদান করে। যখনই কোনও ব্যক্তি দারিদ্র্য ও কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে লড়াই করে সফল হয়, তখন তার পেছনে অনেক মানুষেরই হাত থাকে।

 আজ আমরা আপনাদেরকে এরকমই একটি সাফল্যের গল্প বলবো। এখানে যার কথা বলা হচ্ছে তিনি হলেন অনিতা।

আর অনিতার এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আছে তার মা ও ছোট ভাইয়ের। তার মা তাকে শিখিয়েছিলেন কিভাবে, কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। পরিবারের দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে অনিতাই ছিল বয়সে বড়। তার বাবা ১৪ বছর আগেই মারা গিয়েছিলেন, সেই থেকে তার মাই তাদেরকে যত্ন করে বড় করে তুলেছেন।

 তার বাবা যেহেতু পয়সার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছিলেন, তাই অনিতা তখন থেকেই ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চেয়ে ছিলেন। অনিতার মায়ের নাম হল সুমিত্রা। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, তার সন্তানেরা যদি লেখাপড়া করে তবে তারা পরিবারের নাম উজ্জ্বল করবে। এই কারণে তিনি তার সন্তানদের পড়াশোনা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
 বড় মেয়ে অনিতা মাধ্যমিক পরীক্ষায় 75 শতাংশ নাম্বার পেয়ে পাস করেছিলেন। এরপরে অনিতা তার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য সাইফাই মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং এমবিবিএস নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেদেন। সুমিত্রা তার মেয়েদেরকে পড়াশোনা করানোর জন্য লোকের বাড়িতে কাজও করেছিলেন। এছাড়া তিনি বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে জলও বিক্রি করেছিলেন।

তার সন্তানেরা বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদের লেখাপড়ার খরচ বাড়ছিল তাই তিনি একটি সবজির দোকান দিলেন। যেটা থেকে তিনি প্রতিদিন প্রায় 300 থেকে 50 টাকা আয় করতেন। পড়াশোনার খরচ বৃদ্ধির কারণে, তার ভাইও সবজি বিক্রি করা শুরু করেছিল। একই সাথে, অনিতাও কিছু কাজ করে তার লেখাপড়ার জন্য অর্থ জমাতেন। সুমিত্রা তার ছোট মেয়েকে পড়াশোনার জন্য কানপুরে পাঠিয়েছিলেন।

সুমিত্রা বিশ্বাস করতেন যে, বড় মেয়ের মতো ছোট মেয়েও তার নাম উজ্জ্বল করবে। অনিতা বলেছিলেন যে, তার বাবার মৃত্যুর পরে তার মা এবং ভাই তাকে কখনোই বাবার অভাব বুঝতে দেয়নি এবং লেখাপড়ার স্বপ্নকে দুর্বলও হতে দেননি। তাদের কঠিন পরিশ্রমের ফলেই আজ সে একজন ডাক্তার হয়ে উঠতে পেরেছে। অনিতা আরও বলেছিলেন যে, ভবিষ্যতে তিনি বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসা করবেন। কারন টাকার অভাবে তার বাবা যেভাবে মারা গিয়েছিলেন, তা যেন আর অন্য কোনও পরিবারে না ঘটে।।

 

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর