নেত্রকোণার হাওর এলাকার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চলছে যেভাবে

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ হাওর এলাকার একমাত্র স্বাস্থ্য সেবার স্থান নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উদ্বোধনের পর থেকেই চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। ৩১ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও মিলছে না তার সুফল।

১৯৯৯ সালে উদ্বোধনের পর আজ পর্যন্ত এক্সরে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাফি চালু করা হয়নি জনবলের অভাবে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার ১৫ জনের মধ্যে ১০টি পদ শূন্য, দ্বিতীয় শ্রেণির ১৮ জনের মধ্যে পাঁচটি শূন্য, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ৬৫টির মধ্যে ২০টি পদ শূন্য এবং চতুর্থ শ্রেণির ২২ জনের মধ্যে ১৮টি পদই শূন্য।

ডা. মো. মিজানুর রহমান খান (আর্য়ুবেদিক) ২৯ জুন থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত তিনি মাঝে মধ্যে আসেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী বলেন, হারবাল স্যার মাসে দুই তিন দিন আসেন।

জানা যায়, বছর দেড়েক আগে ডা. রাজিব হোসেন ভূইয়া নিজ উদ্যোগে আল্ট্রাসনোগ্রাম চালু করে গর্ভবতী মায়েদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি উচ্চ ডিগ্রি লাভের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যালে চলে যাওয়ার পর সেটা বন্ধ রয়েছে। গর্ভবতী মহিলারা গর্ভকালীন স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারেন না পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাবে।

তাছাড়াও জরুরী বিভাগে নেই ইমারজেন্সি মেডিক্যাল অফিসার। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দিয়ে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে জরুরী সেবা। জরুরী বিভাগে নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। যার কারণে যে কোন একটু সামান্য সমস্যা দেখা দিলেই হাতে নিতে হয় রেফার্ডের কাগজ। মুমূর্ষু অবস্থায় যেতে হয় অনেক দূরের নেত্রকোণা অথবা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে।

জরুরী রোগীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া নৌ অ্যাম্বুল্যান্সটির চাকা ঘুরেনা বছরে একবার। নৌ অ্যাম্বুল্যান্সটির জ্বালানি খরচ বেশি হওয়ায় গরীব রোগীদের ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হয় না। যদি কোন কারণবসত জরুরী রোগী নিয়ে যাত্রা শুরু করে রাস্তায় যেকোন মুহূর্তে বন্ধ হয়ে রোগী নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় দক্ষ চালক না থাকার কারণে। আন্তঃ বিভাগে ঠিক মত সেবা পায়না ভর্তিকৃত রোগীরা। রাতে পাওয়া যায় না চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত সেবিকাদের।

একজন কর্তব্যরত চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আসলেই দুইজন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে হাসপাতাল দেখাশোনা করা খুবই কষ্টকর। আশা রাখি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন।’

খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আতাউল গণি উসমানি বলেন, ‘জনবল সঙ্কট নিয়ে মাসিক সভা, ভার্চুয়ালি সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পরিচালনা করে ডাক্তার কিন্তু নিয়োগ বিষয়টা পরিচালনা করে মন্ত্রণালয়। তাতে আমাদের কিছু করার থাকে না।’

এ বিষযে সিভিল সার্জন মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি জনবল সঙ্কট দূর করার জন্য। তাছাড়া হাওর এলাকায় কেউ আসতে চায় না। তবুও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। প্যাথলজী ও ল্যাব এসিস্টেন্সের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর