কোভিড পরবর্তী পুনঃনির্মাণে এগিয়ে আসার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ অংশীদারত্বিরের মাধ্যমে কোভিড পরবর্তী পুনঃনির্মাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমন। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত শান্তির সংস্কৃতি বিষয়ক জাতিসংঘের উচ্চতর ফোরামে স্বাগত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘কোভিড অতিমারি থেকে পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে অবশ্যই এমন একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে জাতি, গোত্র, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সকলে অর্থবহভাবে অবদান রাখতে পারি।’

পূর্বের থেকেও ভালো অবস্থায় ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে কোভিড পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে শান্তির সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করার কোনো বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কোভিড পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমসমূহের অন্তর্ভুক্তি এবং প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনের বিষয়টি আরও এগিয়ে নিতে শান্তির সংস্কৃতি যে রূপান্তরধর্মী ভূমিকা পালন করতে পারে তা তুলে ধরা হয় উচ্চ পর্যায়ের এই ফোরামে।

দিনব্যাপী আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে উদ্বোধনী পর্ব ছাড়াও একটি প্লেনারি সেশন এবং ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ ধারণাটি উপস্থাপন এবং ১৯৯৯ সাল থেকে প্রতিবছর সর্বসম্মতিক্রমে তা রেজুলেশন হিসেবে গৃহীত হওয়া এবং ২০১২ সাল থেকে উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আয়োজন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

উদ্বোধনী পর্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন-জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি, ইউএন অ্যালায়েন্স ফর সিভিলাইজেশন এর উচ্চ প্রতিনিধি, জাতিসংঘ মহাসচিবের শেফ দ্যা ক্যাবিনেট এবং ইউনেসকোর প্রতিনিধি।

কোভিড থেকে স্থিতিশীল পুনরুদ্ধারে শান্তির পরিবেশ বিনির্মাণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় ‘শান্তির সংস্কৃতি’কে মূলভাগে স্থাপন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

এছাড়া শান্তি ও উন্নয়নের পারস্পরিক গভীর আন্ত:সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে যথাসময়ে এজেন্ডা ২০৩০ এর বাস্তবায়নের প্রতিও আহ্বানও জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অতিমারি থেকে সফল পুনরুদ্ধারের জন্য অবশ্যই বৈশ্বিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে তিনি ভ্যাক্সিনের জাতীয়করণকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেন এবং বিশ্বকে এধরণের ভ্যাক্সিন বৈষম্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ভ্যাকসিন বৈশ্বিক সাধারণ সম্পদ হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে উন্নয়ন অংশীদারদের আরও বেশি মানবিক হওয়ার এবং যাদের ভ্যাকসিন প্রয়োজন বৈষম্যহীনভাবে তাদের তা প্রদান করার।’

জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় ‘শান্তির সংস্কৃতিতে সিভিল সোসাইটি সংস্থা সমূহের অংশগ্রহণ’ বিষয়ক একটি ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

এসময় রাষ্ট্রদূত ফাতিমা কোভিড মহামারি থেকে অন্তর্ভুক্তিমূলক পুনরুদ্ধারের জন্য হিংসাত্মক বক্তব্য, জাতিগত বিদ্বেষ ও সামাজিক বৈষম্য দূর করতে সংলাপসহ প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানান।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর