শহরের তুলনায় গ্রাম-বস্তিতে সিজারের হার কম: গবেষণা

জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) এক জরিপ গবেষণায় উঠে এসেছে বস্তিতে বসবাসকারী গর্ভবতী নারীর ৩১ দশমিক ০৩ শতাংশ সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন। সেসব সিটি এলাকায় বস্তির বাইরে থাকা ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ নারীর সন্তান জন্মদানও হয় সিজারে। আর দেশের জেলা-উপজেলাগুলোতে যেসব শহরে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষের বাস সেসব শহরের ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী সিজারে সন্তান জন্ম দেন। গর্ভাবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক সেবা নেওয়া নারীদের সিজারে সন্তান জন্মদানের হার বেশি বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সারাদেশে তৃতীয় বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভে (বিইউএইচএস) ২০২১-এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরে নিপোর্ট।

বিবাহিত নারীদের যাদের বয়স ১২ থেকে ৪৯ বছর, বিবাহিত পুরুষ যাদের বয়স ১৫ থেকে ৫৪ বছর, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু এবং সমাজের নেতৃস্থানীয়দের ওপর এ জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।

জরিপে উঠে আসে, ঘরের বাইরে বিভিন্ন হাসপাতাল কিংবা স্বাস্থ্যসেবার আওতায় হওয়া মোট শিশু জন্মদানেরও বেশিরভাগ শিশুর জন্ম হয়ে থাকে সিজারের মাধ্যমে। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া নারীদের বস্তির বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর ৭৭ শতাংশ সিজারে শিশুর জন্ম দেন। এছাড়া শহুরে জনগোষ্ঠীর ৭৫ শতাংশ ও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া বস্তির জনগোষ্ঠীর ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ নারী সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন।

জরিপে উঠে আসে, গর্ভধারণ স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া বস্তিবাসীদের মাঝে সবচেয়ে বেশি সিজার হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে। সবচেয়ে কম হয়েছে এনজিওতে ২৫ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, সঠিক ডাটা পেলে কোন কাজ কতদূর এগিয়েছে সেটির চিত্র ফুটে ওঠে। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও করণীয় ঠিক করা সহজ হয়। আমাদের সবচেয়ে বড় সংকট জনবল। যে পরিমাণ দরকার তার তুলনায় খুবই কম। ফলে স্বাস্থ্যসেবা অর্জনে কষ্ট হয়। বস্তি ও অন্যান্য এলাকায় বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে মানুষ। একই সঙ্গে বিদ্যুৎও পাচ্ছে। তবে স্যানিটেশনে অনেক পিছিয়ে আছে।

তিনি আরও বলেন, বস্তি এলাকায় জন্মহার কমছে। বস্তি ও দরিদ্র মানুষের মাঝেও বাল্যবিবাহ নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে। সবক্ষেত্রেই ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। বস্তি এলাকায় গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার হার বেড়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির হার বাড়লেও তা এখনো কিছুটা পিছিয়ে। সারাদেশে ৪ হাজার ইউনিট আছে। সেখানে ৮ ঘণ্টা নয়, ২৪ ঘণ্টা চালুর ব্যবস্থা করলে এ হার বাড়বে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে সেবার মান বাড়াতে হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, গ্রামে অবকাঠামোগত উন্নত হওয়ায় শহরের মতোই সবকিছু পাওয়া় যাচ্ছে। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে মাইগ্রেশন কমেছে।

অনুষ্ঠানে অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহান আরা বানু, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর