প্রশিক্ষণ না থাকায় বাড়তি আয় থেকে বঞ্চিত সরিষা চাষিরা

খরচ কমে লাভ ভালো পাওয়ায় সরিষা চাষে ঝুঁকছেন দিনাজপুরের হিলি, নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামের চাষীরা। জানান, মৌচাষের প্রশিক্ষণ পেলে আরও লাভবান হতে পারতেন তারা। এদিকে, কৃষি বিভাগ আশ্বাস দিয়েছে চাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার।

দিনাজপুরের হিলির বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ। আমন ধান কাটার পর বোরো ধান রোপণের আগ পর্যন্ত উপজেলার অধিকাংশ জমি পড়েই থাকতো। সরিষা চাষে সেচ দিতে না হওয়ায় তুলনামূলক খরচ কম ও লাভজনক। তাই পতিত জমিতে বাড়তি ফসল তুলতে এর চাষাবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকরা।

তারা জানান, পড়ে থাকার বদলে লাভ হয়েছে। ফলে এবার বেশি জমিতে সরিষার চাষ করেছি।

বিঘাপ্রতি ৫ হাজার টাকা খরচে সরিষা উৎপাদিত হয় ৫ থেকে ৬ মণ। খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে ৭-৮ হাজার টাকা। যা দিয়ে বোরো চাষের সার ও পানির দাম দিতে পারেন কৃষকরা।

সরিষা চাষিরা বলেন, “এবার দেখা যাচ্ছে সবারই ফলন ভালো হয়েছে। সেই হিসাবে যদি দাম হয় তাহলে এবার ভালো লাভ হবে।”

চলতি বছর ১ হাজার ৮শ’ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রার স্থলে সরিষার চাষ হয়েছে ২ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে। তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষার চাষাবাদ বাড়াতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

হাকিমপুর কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, “আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন অনেক ভালো হবে, কৃষকরা অনেক ভালোবান হতে পারবেন। “

নেত্রকোনায় সরিষা আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর বেশি জমিতে। আবহাওয়া অনকূলে থাকায় সরিষার ভাল ফলনের আশা চাষীদের।

আবাদ বাড়াতে কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজসহ সহযোগিতা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, “২১ হাজার কৃষক পরিবারকে, যারা ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষক তাদেরকে এক বিঘা জমিতে সরিষা আবাদের জন্য ১ কেজি বীজ, ১০ কেজি করে ডিপি সার এবং ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে।”

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কুড়িগ্রামের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলেও সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। ক্ষেতে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এলেও মৌ চাষের ধারণা না থাকায় বাড়তি আয় থেকে বঞ্চিত কৃষকরা।

চাষীরা জানান, “মৌ চাষের যে চাষ করবো তার কোনো প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে পিছিয়ে যাচ্ছি।”

কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মধু আহরণ করা হবে। তাতে আরও লাভবান হবেন তারা।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি বিসিকের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ দিতে।”

মৌচাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়তি আয়ে আগ্রহী সরিষা চাষিরাও।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর