বঙ্গবন্ধুর অবদান অস্বীকারকারীরা কি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে: হাসিনা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের জন্মে বঙ্গবন্ধুর অবদান অস্বীকারকারীদের দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস রয়েছে কি না, তা নিয়ে তার সন্দেহ রয়েছে। বৃহস্পতিবার জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এই আলোচনা সভায় হিন্দু নেতাদের পক্ষে প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করেন প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন.. ইয়াহিয়া খান ২৬ মার্চ যখন ভাষণ দিয়েছিলেন, তখন অন্য কারও কথা বলেনি…প্রহসনমূলক বিচার করে ফাঁসির রায়ে পর্যন্ত সই করে দিয়েছিলেন। কই, ইয়াহিয়া তো জিয়াকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেনি। তার কথাও বলেনি। তিনি শুধু একজনের কথা বলেছিলেন, সেটা হল জাতির জনক। তাকে দোষারোপ করে পাকিস্তানের শত্রু হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।

তিনি বলেন, কাজেই এই সত্যটা যে উপলব্ধি করতে পারবে না, সে আদৌ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে কি না, আমার সন্দেহ।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে বাতিল করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ‘কোনো একক ব্যক্তির কারণে হয়নি’ বলায় প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করে আসছেন মন্ত্রীরা।

গণভবনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কারও কথা উল্লেখ না করলেও শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে গিয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার বলেন, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী না হলে এস কে সিনহাও প্রধান বিচারপতি হতেন না। উনি (শেখ হাসিনা) আমাদের প্রধান বিচারপতি উপহার দিয়েছেন, আমরা কী দিয়েছি? বাংলাদেশের সনাতনী সমাজ তার (এস কে সিনহা) তার সঙ্গে নেই। এই রায় নিয়ে প্রধান বিচারপতি রাজনীতি করেছেন বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, পৃথিবীর মানুষ জানে যে কার জন্য এই ভূখণ্ডের জন্ম। যে কথা ড.কামাল হোসেন আর ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সে কথা রায়ে কীভাবে আসে?

বীরেণ শিকদার প্রধান বিচারপতির দিকে ঈঙ্গিত করে বলেন, স্নেহ-ভালোবাসা পাবেন আর শ্রদ্ধা করবেন না; এটা তো হবে না।

উপস্থিত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসলে বাংলাদেশে কোনো হিন্দু থাকতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এই দেশের মাটির সন্তান। আপনারা আপনাদের মর্যাদা নিয়ে এই দেশে থাকবেন। উৎসবমুখর পরিবেশে উৎসব পালন করবেন। আমাদের দেশে যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে; আওয়ামী লীগই তা নিশ্চিত করে। আমি সংখ্যালঘু বলতে রাজি না। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আর মুসলমান সকলে সমান অধিকার নিয়ে থাকবে।

এই অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দীপু, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ পালিত, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ডি এল চ্যাটার্জি, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি রমেশ ঘোষ এবং জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দন তালুকদার বক্তব্য রাখেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাপস পাল।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর