বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন।’
সোমবার বিকেলে ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠাই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। তাই আমাদের দায়িত্ব হবে জ্ঞান-গরিমায় সমৃদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। তাহলেই আমরা চিরঞ্জীব এই মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারব।’
আগামীকাল শোকাবহ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এ দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয় শাহাদত বরণ করেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শোকাহত চিত্তে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে সকল শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
তিনি বলেন, ‘বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক কলঙ্কিত অধ্যায়। দেশের স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘাতকচক্রের হাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান শহিদ হন। একইসঙ্গে শহিদ হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ অনেক নিকট আত্মীয়।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্বাধীনতার রূপকার। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন।’
‘বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে কখনো আপোশ করেননি। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। দীর্ঘ চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এই মহান নেতা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিজয় অর্জন করি।’
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘জাতির পিতার চিন্তা-চেতনায় সবসময় কাজ করত বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশ। তিনি ছিলেন বাঙালির মুক্তির দূত। তার অসামান্য অবদানের জন্য আজ এ দেশের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তার নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে তত দিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।’
‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে ধাবমান। ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নসহ আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে “ভিশন ২০২১” এবং “ভিশন ২০৪১” ঘোষণা করেছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। এ জন্য প্রয়োজন সকলের সমন্বিত প্রয়াস।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর