যারা শাসনতন্ত্র পরিবর্তন করছেন তারাও রাষ্ট্রদ্রোহী

মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা প্রমাণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর–রুনি মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্যের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।

 

তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ প্রমাণ করা সরকারের কাজ। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বিচারের মাধ্যমে প্রমাণ করুন। না করতে পারলে তাকে মুক্তি দিন। বিনা বিচারে তাকে বছরের পর বছর জেলে রাখবেন না।’

 

মইনুল হোসেন বলেন, ‘শাসনতন্ত্রের পরিবর্তনের কথা বললে যদি রাষ্ট্রদ্রোহীতা হয় তাহলে যারা শাসনতন্ত্র পরিবর্তন করছেন তারাও রাষ্ট্রদ্রোহী।’

 

তিনি বলেন, বর্তমান যেভাবে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে, সেটা মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল না।

 

নাগরিক ঐক্যের প্রধান উপদেষ্টা এস এম আকরামের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ।

 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, মান্নার জামিন নয়, বিচার বিভাগের জবাবদিহিতা চাই। কোন প্ররোচণায় বিচারপতিরা মাহমুদুর রহমান মান্নাকে জামিন দিলেন না- এজন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

 

বিচারপতিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের (বিচারপতি) সম্মান করি, কিন্তু আপনারা (বিচারপতি) অন্যায় করে যাচ্ছেন।’

 

এ সময় হাসিনার বিরুদ্ধে নয়, বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান ডা. জাফরুল্লাহ।

 

সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্না কী ষড়যন্ত্র করলো তা সরকার জনগণের সামনে আনতে পারলো না। তার মানে ষড়যন্ত্র মান্না নয়, সরকার করেছে।

 

মান্নার মুক্তি দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন এ সরকারের কাছ থেকে নয়, আমি বিচার বিভাগের কাছে ন্যায় বিচার আশা করেছিলাম। কিন্তু বিচারপতিরা যখন বিনা বিচারে অসুস্থ মান্নাকে জামিনে মুক্তির রায় না দিয়ে চিকিৎসার রায় দিয়েছেন- এটা আমাকে বিস্মিত করেছে।’

 

তিনি বলেন, ‘মান্না সব সময় গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। তার গ্রেফতারের পর সব কিছুই মুখ থুবড়ে পড়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে মান্নার মুক্তির দাবি তুলতে হবে।’
Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর