RICE-INDONESIA/

দেড় লাখ টন চাল-গম কিনবে সরকার

বাঙালী কন্ঠ নিউজঃ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে দেড় লাখ টন চাল ও গম কিনতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ১ লাখ মেট্রিক টন গম এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি চাল। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্যাকেজ-২ এর আওতায় পৃথক তিনটি প্রস্তাবনায় এ চাল-গম আমদানি করা হবে।

আজ বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত পৃথক ৩টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

RICE IMPORT

সভায় সভাপতিত্ব করেন-অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কমিটির সভায় আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ২৫১ মার্কিন ডলার ব্যয় হবে। এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১০৪ কোটি টাকা।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির পৃথক আরেকটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৪১১.১১ মার্কিন ডলার হিসেবে এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১৭০ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার টাকা। এটি সরবরাহের কাজ পেয়েছে দুবাইয়ের একটি কোম্পানি।

এছাড়া সভায় উথাপিত খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আরেকটি ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতি মেট্রিক টন ২৪৯.৩৮ মার্কিন ডলার হিসেবে এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১০৩ কোটি ৪৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা।

এছাড়া বৈঠকে আরো ১৮টি প্রস্তাবনা অনুমোদন দেওয়া হয়।

এর মধ্যে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘গ্রেটার ঢাকা সাস্টেইনাবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) এর বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন অংশের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এটি বাস্তবায়নের কাজ পেয়েছে একটি চীনা কোম্পানী। সরকারের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৩৫ কোটি ১২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

একই প্রকল্পের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন অংশের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৮ কোটি ৩১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

অনুমোদন পেয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনস্থ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের কন্ট্রাক্ট প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাব।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘মংলা বন্দর থেকে চাঁদপুর-মাওয়া-গোয়ালন্দ হয়ে পাকশী পর্যন্ত নৌ-রুটের নাব্যতা উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরন করে বাংলাদেশ নৌপরিবহনের মাধ্যমে ‘আউটপুট অ্যান্ড পারফরম্যান্স-বেজড কন্ট্রাক্ট ফর ইমপ্রুভমেন্ট অব ন্যাভিগ্যাবিলিটি ফরম মংলা টু পাকশী রিভার রুট’ কাজের ক্রয় প্রস্তাব বাস্তবায়নে সরকারের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯৫ হাজার।

একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্রগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়নধীন ‘প্রকিউরমেন্ট অব ইক্যুইপমেন্ট ফর নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৬টি রেল মাউন্টেড কি গ্যান্টি ক্রেন সংগ্রহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সরকারের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫১ কোটি ৩৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা।

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন নৌপরিবহন অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘এস্টাব্লিসমেন্ট অব জিএমডিডিএস অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

ইন্টানরন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) এবং বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় এলজিইডি-এর অধীন ‘বহুমূখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মান প্রকল্প (এমডিএসপি)’-এর আওতায় কক্সবাজার জেলায় ৬২টি সাইক্লোন সেন্টার ও সংযোগ সড়ক নির্মানের জন্য ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সরকারের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

স্থানীয় সরকার বিভাগের একই প্রকল্পের আওতায় লক্ষীপুর জেলায় ৩৪ টি সাইক্লোন সেন্টার ও সংযোগ সড়ক নির্মানের জন্য ক্রয় প্রস্তাবের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
স্থানীয় সরকার বিভাগের একই প্রকল্পের আওতায় নোয়াখালি জেলায় ৩৫ টি সাইক্লোন সেন্টার ও সংযোগ সড়ক নির্মানের জন্য ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৮ কোটি ৩৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ভারতের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে পার্বতীপুর ডিপোতে রেলপথে ট্যাংক ওয়াগনের মাধ্যমে ৫০০ পিপিএম মানমাত্রার ২২০০০ টন ডিজেল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগের বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারন চট্রগ্রাম-সিলেট বিভাগীয় কার্যক্রম-২’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩টি ৩৩/১ কেভি সাব-ষ্টেশন নির্মানের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

একই বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ ঢাকা বিভাগীয় কার্যক্রম-২’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩টি ৩৩/১ কেভি সাব-ষ্টেশন নির্মানের ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬ কোটি ৯১ লাখ ৪২ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক ‘পল্লী বিদ্যুৎ বিতরন সিস্টেমের ক্ষমতাবর্ধন (ঢাকা, চট্রগ্রাম ও সিলেট বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে রিভার ক্রসিং টাওয়ার নির্মান ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন এবং ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।

জিওবি এবং এডিবি-এর অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন রেলওয়ে রোলিং স্টক প্রজেক্ট-এর আওতায় ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ প্যসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহের জন্য ঠিকাদার নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৯ কোটি ৩৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা।

জিওবি এবং এডিবি-এর অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ‘দোহাজারি থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে পুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মান’ কাজের ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে প্রথম লটে ২ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় লটে ৩ হাজার ৫০২ কোটি ব্যয় ধরা হয়েছে।

এছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিনটি পৃথক কোটেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে ৯০ হাজার টন এমপিও সার আমদানির তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি ৩০ হাজার টন সার আমদানিতে সরকারের ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ১২ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর