মেধাসত্ত্ব অধিকার সংরক্ষণে ‘ই-কপিরাইট’ সিস্টেম চালু

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড-এর সহায়তায় বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস ‘ই-কপিরাইট’ সেবা ব্যবস্থা চালু করেছে।

ফলে বাংলাদেশের যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি সাহিত্যকর্ম, নাট্যকর্ম, সংগীতকর্ম, রেকর্ডকর্ম, শিল্পকর্ম, চলচ্চিত্র বিষয়ককর্ম, বেতার সম্প্রচার, টেলিভিশন সম্প্রচার, কম্পিউটার-সফটওয়্যারকর্ম ইত্যাদি নিবন্ধনের জন্যে সহজেই বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের ওয়েবসাইট (www.copyrightoffice.gov.bd)-এ গিয়ে কপিরাইটের জন্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে।

প্রত্যেকটি আবেদন একটি স্বয়ংক্রিয় উপায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এসএমএস এর মাধ্যমে নোটিফিকেশন আসবে এবং নির্দিষ্ট তারিখে কপিরাইট সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে ই-সার্টিফিকেটও পাওয়া যেতে পারে যা পরবর্তীতে অনলাইনে যেকোনো সময় যাচাই করা যাবে।

২৩ আগস্ট বুধবার, এটুআই প্রোগ্রাম ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের যৌথ আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে আইসিটি ভিত্তিক এই সেবার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইব্রাহীম হোসেন খান। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এর মহাপরিচালক (প্রশাসন) এবং এটুআই প্রোগ্রাম এর প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার।

কপিরাইটের অফিস শুধুমাত্র ঢাকায় থাকায় সৃজনশীল কাজের ক্ষেত্রে কপিরাইট সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া কেবল ঢাকায় সম্ভব ছিল। আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা সম্পর্কে আবেদনকারীর কাছে তথ্য না থাকায় কাগজপত্র জমা দেয়ায় ভুল হতো এবং একাধিকবার অফিসে আসতে হতো। এতে করে আবেদনকারীর খরচ ও যাতায়াত দুটোই বৃদ্ধি পেত। আবেদনের সব কাজ হাতে-কলমে সম্পন্ন হতো বলে আবেদনকারীকে অনেক ভোগান্তির স্বীকার করতে হয়। এছাড়াও পূর্বে সনদপ্রাপ্ত কর্মের কোনো প্রকার ডিজিটাল সংরক্ষণ ব্যবস্থা ছিল না বলে বাছাই প্রক্রিয়া ভুল হবার সম্ভাবনা রয়েই যেত। কিন্তু এবার ই-সেবা ব্যবস্থা চালু করার ফলে কপিরাইট অফিস থেকে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি নতুন দ্বার উম্মোচন হল।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ই-কপিরাইট সিস্টেম চালু করার ফলে কপিরাইট এর জন্যে আবেদন বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে এবং সৃজনশীল কর্মের নৈতিক ও আর্থিক অধিকার অর্থাৎ মালিকানা সংরক্ষণ আরো সহজ হবে।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস ও এটুআই প্রোগ্রামকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘এই আধুনিক অনলাইন সিস্টেম তৈরি করার মাধ্যমে নাগরিকদের আরো দ্রুত সঠিক সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।’ এই ই-সেবা ব্যবস্থার প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড এর মাধ্যমে নাগরিক সেবা সহজিকরণে অসংখ্য উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা থেকে বাছাই হয়ে সেবা প্রদানে সবচেয়ে বেশি উদ্ভাবনী প্রস্তাবনাসমূহ স্বল্প আকারে স্বল্প সময়ে পাইলট প্রকল্প আকারে বাস্তবায়নের জন্যে সীমিত অনুদান পাচ্ছে। পাইলট শেষে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে উদ্ভাবনী সেবাটি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্টার জাফর আর. চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সভাপতি মোস্তাফা জব্বার এবং এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস, বেসিস ও এটুআই প্রোগ্রামের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর