খালেদা জিয়ার কোটি টাকার শাড়ি ও হাজারো স্যুটকেসের রহস্য

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিদেশ গেলে আমরা সাধারণত দু-একটি ব্যাগ বা স্যুটকেস সঙ্গে নিয়ে যায়। কিন্তু এমন কেউ কেউ আছেন যারা ২০টি পর্যন্ত স্যুটকেস নিয়ে বিদেশে ভ্রমণ করেন। সৌদি আমির, দুবাইয়ের শেখরা এই গোত্রের।

বাংলাদেশেরও দু-একজন আছেন যারা ১৫/১৬টি লাগেজ নেন এক ভ্রমণে। কিছুদিন আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে যান।

আগে থেকেই জানানো হয়, খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১২টা স্যুটকেস যাবে। ট্রাভেল এজেন্ট এমিরেটসকে আগাম এক্সট্রা পেমেন্ট করে দেয়। হিথ্রোতে নামার পর ‘বর্ডার সিকিউটির’ নজরে আসে বিষয়টি। সবগুলো লাগেজ স্ক্যানিং হয় একঘণ্টা ধরে। তারপর লাগেজগুলো ছাড়া হয়।

শুধু এবার লন্ডনে যাওয়া নয়, যতবারই খালেদা জিয়া বিদেশে গেছেন নূন্যতম ১০টি লাগেজ নিয়ে গেছেন। এতগুলো লাগেজ নেয়ার কারণ কী? খালেদা জিয়ার ব্র্যান্ডের শাড়ি ছাড়া পরেন না। তার লাগেজের মধ্যে ৫ থেকে ৭টা লাগেজে থাকে ব্র্যান্ডের শাড়ি। তার শাড়ি আসে ইতালি, ফ্রান্স এবং ভারত থেকে। তার সবচেয়ে পছন্দ হলো ইতালি শিফন।

ইতালি শিফনের দাম কমপক্ষে ১৫ হাজার ইউরো। বাংলাদেশি টাকায় ১৩ লাখ। তবে খালেদা জিয়া এরকম সাধারণ শিফন কমই পরেন। তিনি পরেন এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের শাড়ি। মিলানো ডিজাইনের শাড়ির দাম ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ইউরো পর্যন্ত। বাংলাদেশি টাকায় ৪২ লাখ টাকা থেকে ৮৬ লাখ টাকা।

এসব শাড়ি সাধারণ ভাঁজ করে স্যুটকেসে রাখা যায় না। এসব শাড়ির জন্য আলাদা বিশেষায়িত প্যাকেট লাগে। একটা স্যুটকেসে এরকম মাত্র তিনটা শাড়ি রাখা যায়। ১০টি ব্যাগে ৩০টি শাড়ি হলো খালেদা জিয়ার সফরের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পরিধেয়।

খালেদা জিয়া জুতা বা স্যান্ডেলও পরেন ব্র্যান্ডের, এগুলো থাকে এক স্যুটকেসে। তনি বিভিন্ন প্রসাধন এবং পারফিউম পছন্দ করেন। একই পারফিউম তিনি দু’বেলা ব্যবহার করতে পারেন না। নানান পারফিউম এবং টয়লেট্রিজ থাকে এক লাগেজে।

এভাবেই অন্তত ১২টি লাগেজ সব সময় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হয়। ১২ থেকে ১৬টি লাগেজ নিয়ে যান তিনি শুধু যাওয়ার সময়। কিন্তু যখন ফেরেন, তখন কয়টি লাগেজ নিয়ে ফেরেন? খবর নিয়ে জানা যায়, ইদানিং একটি থেকে দুটি স্যুটকেস বাড়ে তার লাগেজ বহরে। কিন্তু আগে, এই সংখ্যা কোনো সময় ৩২টিও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

১৯৯৩ সালে খালেদা জিয়া গিয়েছিলেন ইতালিতে বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে। ওই সময় তিনি ফেরেন ৩২টি লাগেজ নিয়ে। বিমানে ১০টি স্যুটকেস পাঠানো সম্ভব হয়েছিল। বাকি ২২টি লাগেজ আসে কার্গো প্লেনে। খালেদা জিয়া যে কয়বার আমেরিকা গেছেন প্রতিবারই কার্গোতে তার অন্তত ২০টি করে লাগেজ এসেছে। এসব লাগেজ অধিকাংশই ছিল দামি প্রসাধনী, মেকআপ সামগ্রী, জুতা এবং পরিধেয়।

এমিরেটসে যারা বেশি লাগেজ নিয়ে ভ্রমণ করেন তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছে। এ তালিকায় প্রথম দিকে আছে খালেদা জিয়ার নাম। ব্র্যান্ডের শাড়ি রাখার জন্য খালেদা জিয়া যেসব স্যুটকেস ব্যবহার করেন, সেগুলোও সাধারণ স্যুটকেস নয়, সব ব্রান্ডের স্যুটকেস। আদালতের নির্দেশে যখন খালেদা জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাসা ছাড়তে হয় তখন তার বাড়ি থেকে এক হাজার ২৭টি স্যুটকেস সরানো হয়েছিল।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর