খালেদা জিয়ার বিদেশের সম্পদ বিষয়ে তদন্ত চলছে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশের সম্পদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। এই তদন্তের মধ্য দিয়ে সত্যতা যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেন।
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির (জাপা) সাংসদ ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় সংসদের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন।

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম গ্লোবাল ইনটেলিজেন্স নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতাদের বিদেশে সম্পত্তির ফিরিস্তি তুলে ধরে সে বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চান।

ফখরুল বলেন, ‘শুধু দুবাই নয়, অন্তত ১২টি দেশে জিয়া পরিবারের সম্পদ আছে, যার প্রাক্কলিত মূল্য এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। এছাড়া ‘সৌদি আরবে জনৈক আহম্মদ আল আসাদের নামে আল আরাফা শপিং মলটির মালিক হলেন বেগম জিয়া। কাতারে বহুতল বাণিজ্যক ভবন ‘টিপরা’.. এটার মালিকও উনি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্যগুলো যখন বের হয়েছে, তখন নিশ্চয়ই আমাদের কাছে তা আছে। এটা নিয়ে তদন্ত চলছে। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে মানি লন্ডারিংয়ের জন্য একটি তদন্তের ব্যবস্থা আছে। সেই সূত্রেও তদন্ত করা হচ্ছে। এই তদন্তের মধ্য দিয়ে সত্যতা যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের বিষয়টি সংসদে তুলে ধরায় বিরোধীদলীয় সাংসদকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের সম্পদ যারা লুটে নিয়েছে, নিশ্চয়ই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ইতিমধ্যেই খালেদা জিয়া এবং তার পরিবারের সদস্যদের পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘তদন্ত করে যখনই আমরা এই বিষয়ে সঠিক তথ্য পাবো.. নিশ্চয়ই তা ফেরত আনার ব্যবস্থা নেব। ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। তদন্তের স্বার্থে সব আমি এই মুহূর্তে বলতে পারলাম না।’

সংসদ নেতা আরো বলেন, ‘সরকার যদি এই অভিযোগ তোলে তাহলে আমাদের দেশে বহু লোক আছে যারা মায়াকান্না করবে। তারা বলবে আমরা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে এটা করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু সংসদে বিরোধীদলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, আমরা আশা করি জনগণ বুঝবে কীভাবে জনগণের সম্পদ লুট করা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ পর পর পাঁচ বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

তাদের শাসনামলে বিএনপি দেশের কোনো উন্নতি করে নাই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উপরন্তু তাদের পাঁচ বছরের শাসনামলে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার অবনতি হয়। ক্ষমতায় আসার পরই বিএনপি হত্যা, খুন, নির্যাতন, সীমাহীন দুর্নীতি এবং সম্পদ লুণ্ঠনের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছে। তারা দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে যার সবকিছুই জনগণ জানে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বিএনপির সময়ে বেগম জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে এবং এটাই পাচার করা টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার প্রথম কোনো ঘটনা। বিদেশ থেকে আসা অর্থ জঙ্গি তৎপরতায় যাচ্ছে কি না, তা নজরে রাখা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর