কান চুলকায় কেন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনেকেরই কানে চুলকানি রোগ রয়েছে। কিছুদিন ধরে কটনবাড খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে আপনার। কোন ড্রয়ারে, কোথায় রাখা আছে, ভালোই জানা হয়ে গেছে। কারণ কান চুলকায়। এমনটি হয় অনেকেরই। যারা নিয়মিতভাবে কান চুলকান তাদের জেনে রাখা ভালো, অসুখটির নাম অটোমাইকোসিস।

কান চুলকানি রোগ কেন হয় :  রোগটি সেসব দেশে বেশি হয়, যেখানকার আবহাওয়া উষ্ণ ও আর্দ্র। যেমন বাংলাদেশ। রোগটি তাদেরই বেশি হয়, যারা কোনো কারণবশত দীর্ঘ সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করছেন। যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অথবা যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব রয়েছে।

চুলকানি রোগের কারণ : চুলকানি হয় ছত্রাক জাতীয় জীবাণু থেকে। এরা হচ্ছে উদ্ভিদ। দেহের অন্যত্র এটি থেকে দাদসহ নানা রোগ হয়। এদের মধ্যে অ্যাসপারজিলাস নাইজার দায়ী ৮০-৯০ শতাংশ এবং ক্যানডিডা অ্যালবিকানস দায়ী ১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে। এছাড়া ডারমাটোফাইট ও একটিনোমাইসেসের মাধ্যমেও কখনো কখনো রোগটি হতে পারে।

উপসর্গ : কান বন্ধ হয়ে আছে এমন উপলব্ধি। কানে অস্বস্তি। কান থেকে ধূসর, সবুজ, হলুদ বা সাদা রঙের নিঃসরণ বেরিয়ে আসতে পারে। জমা হতে পারে ভেজা খবরের কাগজের মতো ময়লা।

চিকিৎসা : কানের ময়লা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। ছত্রাকবিনাশী ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। যেমন- নাইস্টাটিন ক্রিম, ক্লোট্রিমাজল, ইকোনাজল ও জেনশিয়ান ভয়োলেট। ওষুধগুলোর সঙ্গে সম্ভাব্য ক্ষেত্রে হাইড্রোকর্টিসন যুক্ত থাকলে তা ড্রাগের প্রতি টিস্যুর অতিসংবেদনশীলতা রোধ করে এবং কানে জ্বালা করার ভয় কমায়। ক্রিম বা ফোঁটা আকারে এগুলো ব্যবহার করা যায়। দুই সপ্তাহ ধরে ব্যবহার করলে রোগটি ফিরে আসার আশঙ্কা কমে যায়।

অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার। এছাড়া কানে যদি ব্যথা শুরু হয়, তাহলে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের চিকিৎসাও করণীয় হয়ে পড়ে। খুব সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা না করলে কানের পর্দায় অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। অটোমাইকোসিস রোগটি বহিঃকর্ণের। কিন্তু কানপাকা রোগীদের অর্থাৎ মধ্যকর্ণের প্রদাহের কারণে যাদের কানের পর্দায় ছিদ্র থাকে, তাদের কানেও মিশ্র সংক্রমণ হতে পারে।

প্রতিরোধ :  চাই সাধারণ স্বাস্থ্যকুশলতা উন্নয়নের প্রয়াস এবং ভিটামিন ও পুষ্টির মান বাড়ানো। মাঝেমধ্যে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দেখে নেওয়া।ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা। নিরুৎসাহিত করা চাই কান চুলকানোয় দিয়াশলাইয়ের কাঠি, মোড়ানো রুমাল, মুরগির পালক, চাবি ও কটনবাডের ব্যবহার।

লেখক : নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ,  মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর