অঝোরে কাঁদলেন, কাঁদালেন বেগম জিয়া

বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে গুম-খুনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের স্মরণ করে অঝোরে কাঁদলেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।  এসময় উপস্থিত অতিথিরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

২৯ জুন বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের লংবিচ হোটেলে গুম-খুন হওয়া নেতাকর্মীদের স্মরণে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বেগম জিয়া।

বক্তব্যের পর বিগত আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে ইফতার করেন তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির যারা নিখোঁজ রয়েছে, তারা কীভাবে আছেন, কেমন আছেন আমরা কিছুই জানি না।

তিনি বলেন, আপনারা (গুম হওয়া স্বজনরা) আশা করছেন, তারা একদিন ফিরে আসবে; আমরাও সেই আশায় আছি।  ফিরে এসে তারা তাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী, ছেলেমেয়েদের আবার আদর করবে, আমাদের দলে ফিরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আপন হয়ে থাকবে।

এ কথা বলার সময় বেগম জিয়ার কণ্ঠ ভারী হয়ে ওঠে।  ঝরতে থাকে চোখের পানি।  এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত অতিথিরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

চোখে জল নিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, সন্তান হারানোর


ব্যথা আমি বুঝি।  আপনারা দেখেছেন, আমার সন্তান আরাফাত রহমান কোকোকে হারিয়েছি।
সন্তান হারানোর ব্যথা একজন মা-ই বোঝেন।

ক্রসফায়ারের ঘটনাকে দুঃখজনক আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, একটি নিরীহ ছেলেকে কথা নাই বার্তা নেই গুলি করে মেরে ফেলবে।  এটা খুবই দুঃখজনক। বিচার ছাড়া কাউকে গুলি করে মেরে ফেলা, এটা আগে কখনো হয়নি।

বর্তমান সরকারকে ‘খুনি, গুপ্ত হত্যাকারী ও জালেম’ আ্যখ্যা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আল্লাহ যেন শিগগিরই তাদের বিচার করেন।  দুনিয়াতেই যেন এদের শাস্তি হয়, যা মানুষ দেখে যেতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা বিরোধী দলে আছি।  আমাদের প্রত্যেকের ওপর মিথ্যা মামলা, নানা নির্যাতন চালানো হচ্ছে।  নতুন করে সাঁড়াশি অভিযানে ১৬ হাজার লোককে ধরেছে।  এর মধ্যে ৪ হাজার বিএনপি নেতাকর্মী।  তাদের উদ্দেশ্য হলো, বিএনপিকে ধ্বংস করা।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আসুন, আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যারা গুম হয়েছে  যেখানেই আছে যেন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে।

ইফতার মাহফিলে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির গুম-খুন হওয়া ঢাকা ও এর আশপাশের ৪০টি পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।  অনুষ্ঠান শেষে তাদের হাতে ঈদ উপহার সামগ্রী ও আর্থিক সহায়তা তুলে দেন বেগম জিয়া।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, শরিফুল আলম।

এছাড়া ছিলেন ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন, সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান, জয়দেব জয়; সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, পূর্বের সভাপতি খন্দকার এনামুল হক এনাম ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মানিক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা মামুন খান, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, গুম হওয়ার পর ফিরে আসা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর