বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশে প্রকট হয়েছে গো খাদ্যের সংকট। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঘাস চাষের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গবাদি পশু উৎপাদনে ৪টি মূল বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে দরকারি পশুর খাদ্য ও পুষ্টি। বাস্তব ক্ষেত্রে গবাদি পশুর পুষ্টির খরচ ৫৫ থেকে ৭৫ ভাগ। কথিত আছে ঘাসই মাংস, গাভির মুখেই দুধ। গাভি যত বেশি পুষ্টিকর খাবার পাবে ততবেশি দুধ দেবে।
এক কালের গোয়ালভরা গরু আজ রুপকথায় পরিণত হয়েছে। গরু থাকলেও তার অবস্থা অস্থিচর্মসার। এর প্রধান কারণ পশু খাদ্যের অপ্রতুল্যতা। বলতে গেলে বাংলাদেশে কোনো সঙ্গায়িত চারণভূমি নেই। তবে সবুজ ঘাস ও চারণভূমি কিছুটা আছে বলেই বাংলাদেশের পাবনা, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম জেলায় কিছু উন্নত জাতের গবাদি পশু পাওয়া যায়। আগে দেশে গো খাদ্যের সংকট ছিল না। তখন পর্যাপ্ত চারণভূমি ছিল। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসেবে বর্তমানে দেশে গবাদি পশুর দুই ধরণের খাবারের মধ্যে আশ জাতীয় খাবার অর্থাৎ ঘাস উৎপাদন হয় ২,২৯৪.৯৩৯ মেট্রিক টন।
এর মধ্যে ফসলের খেতের আগাছা ৬১৮.৬২৩ মেট্রিক টন, অনাবাদি জমিতে ৭৭৪.৮৯৯ মেট্রিক টন, খেতের আইলে ৮০৩.৪৪১ মেট্রিক টন এবং চাষের মাধ্যমে ঘাস উৎপাদন হয় ৯৭.৯৭৫ মেট্রিক টন। এছাড়া ধান, গম, ভূট্টা, ডাল, তৈলবীজ, নারিকেল, তুলাবীজসহ অন্যান্য উৎপাদিত শস্যের অবশিষ্টাংশ থেকে পাওয়া যায় ৪১. ৪৬ মেট্রিক টন পশু খাদ্য। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের মোট আবাদী জমির দুই তৃতীয়াংশে ধান ও অন্যান্য ফসল ফলানোর পর যেটুকু জমি থাকে সেখানে গবাদি পশুর খাদ্য উৎপাদনের কোনো সুযোগ থাকেনা। এর পরেও আছে বন্যা খরা ইত্যাদি।
বন্যা প্রবণ অঞ্চলে বর্ষাকালে খাদ্য ঘাটতিতে গবাদিপশুর অবস্থার অবনতি হয়। বাংলাদেশের মোট ৫ কোটি ৩৫ লাখ গবাদি পশুর চাহিদার তুলনায় বছরে উৎপাদিত খাবার নিতান্তই অপ্রত্যুল। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতিপূর্বে প্রাণিপুষ্টি উন্নয়ন প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রকল্পের মাধ্যমে নেপিয়ার ঘাসের চাষ করা হয় দেশে। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর আড়াই বছর মেয়াদি ওই প্রকল্পের ২য় পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যা প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধিন। প্রাণিসম্পদবিদ ড. হিরণময় বিশ্বাস বলেন, গোখাদ্যের সংকট মোকাবেলায় উন্নত জাতের ঘাস চাষের জন্য নতুন নতুন প্রকল্প নেয়ার পাশাপাশি প্রণোদনা দেয়া প্রয়োজন।