কিশোরগঞ্জে জেলার মানবরূপী দানবের নির্যাতনে কাঁদছে ৬ শিশু

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কিশোরগঞ্জে শাহেদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম ও ৪র্থ শ্রেণির ০৬ ছাত্রকে নির্মমভাবে পেটালো ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ আবু হানিফ (৪৫)। আজ ০৪ এপ্রিল দুপুর ১.৪৫ ঘটিকায় বিদ্যালয়ের মধ্যাহ্ন বিরতির সময় শিশুরা খেলাধুলা করতে গিয়ে মোঃ আবু হানিফের লটকন গাছ থেকে তিনটি লটকন পাড়ায় শিশুদেরকে দৌঁড়িয়ে ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করে।

শিশুদের বাঁধা অবস্থায় পিঠে, পেটে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধর করতে থাকলে মার থেকে বাঁচার জন্য শিশুরা কান্না করতে থাকে। শিশুদের অভিভাবকগণ প্রভাবশালী হানিফের ভয়ে আপন শিশুকে বাঁচাতে আসতে পারেনি। অপারগ হয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় যোগাযোগ করে। তাৎক্ষণিকভাবে ওসি (তদন্ত) আরিফুর রহমান এ.এস.আই দীপক কুমার সরকারকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুদেরকে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান এবং শিশুদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। ঘটনা জানাজানি হলে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় টিভি ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত হন। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের থানাতেও দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়। অপরাধী নিজে ওসির রুমে বসে থেকে বিভিন্ন ধরনের ধমকিমূলক কথাবার্তা বলছিলেন। সাংবাদিকদের উপস্থিতি এবং তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে ওসি তাকে ওসির রুম থেকে পাশের রুমে বসতে দেন।

নির্যাতন কৃত ০৬টি শিশু যথাক্রমে ১। মোঃ হৃদয় মিয়া (১১) ৫ম শ্রেণি, ২। মোঃ আপন (১০) ৫ম শ্রেণি, ৩। সজিব (১০) ৫ম শ্রেণি, ৪। মোঃ ইমরান (১১) ৫ম শ্রেণি, ৫। মোঃ রাকিব (১০) ৫ম শ্রেণি, ৬। মোঃ আকাশ (০৯) ৪র্থ শ্রেণি সকলের ঠিকানা খিলপাড়া, থানা ও জেলা-কিশোরগঞ্জ। খিলপাড়া শাহেদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ রহিম জানান, এটি একটি অত্যন্ত কষ্টকর ও দুঃখজনক ঘটনা যে আমি প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন আমার শিশুদেরকে আমার স্কুলের মাঠেই এমন নির্মমভাবে মারধর করলো। আমি আমার টি.ও ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সদর মডেল থানার ওসি স্যারের কাছে এ বিষয়ে আইনগত সুষ্ঠু সমাধান চাই। যার ফলে আমার কোন ছাত্রই আবু হানিফের কাছে দ্বিতীয়বার আর মার খেতে না হয়।

উল্লেখ্য যে, মোঃ আবু হানিফ (৪৫), পিতামৃত- শাহেদ আলী, গ্রাম- খিলপাড়া, উপজেলা- কিশোরগঞ্জ সদর, জেলা-কিশোরগঞ্জ। সে এলাকার ধূর্ত ও ভয়ানক সন্ত্রাসী। তার ভয়ে কোন লোকই কথা বলতে আসে না। কে তার গডফাদার? এলাকাবাসীর প্রশ্ন?

টিও মোঃ এমদাদুল হক বলেন, এ বিষয়টি যেহেতু আইনগত ও শিশু নির্যাতনের বিষয়- এক্ষেত্রে আমরা পুলিশের সর্বোচ্চ সহযোগিতা কামনা করছি।

কিশোরগঞ্জ সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু শামা মোঃ ইকবাল হায়াৎ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এ বিষয়ে মামলা হবে নিশ্চিত। যেহেতু শিশু নির্যাতন তাই আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে মামলার বিষয়ে এখনই আমি কিছু বলতে পারছি না।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর