কাঁচা কলা কেন খাবেন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ খুবই পরিচিত এবং সহজলভ্য ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কলা। শুধু ফল হিসেবে নয়, সবজি হিসেবেও এর কদর কিন্তু কোনো অংশেই কম নয়। সবজি হিসেবে কাঁচা কলা বেশ স্বাস্থ্যকর। এতে ভিটামিন, মিনারেলসহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলো শরীরের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু পেট খারাপ সারাতে নয়, বরং বেশ কিছু জটিল রোগের চিকিৎসাতেও কাঁচা কলার বিকল্প নেই। তাই নিয়মিত কাঁচা কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।   কাঁচা কলা খেলে কী কী উপকার পাওয়া যায় তা জানিয়ে দিয়েছে লাইফস্টাইলবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই ডট কম-

খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় তা রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এটি আর্টারির কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, এতে হঠাৎ করেই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। একই সঙ্গে নানা রোগ দূরে থাকতেও সাহায্য করে কাঁচা কলা।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁচা কলায় উপস্থিত পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশ করার পর ব্লাড ভেসেলের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে শিরা-উপশিরায় তৈরি হওয়া প্রেসারকেও কমিয়ে ফেলে। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগে না। আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে কোনো ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

পেট ঠাণ্ডা রাখে কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় তা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। পাশাপাশি হজম প্রক্রিয়ার কর্মক্ষমতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখে কাঁচা কলা। তাই শুধু পেট খারাপ নয়, যারা প্রায়শই গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা কাঁচা কলাকে কাজে লাগিয়ে আরোগ্য লাভ করতে পারেন।

রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে কাঁচা কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা একেবারেই নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই তো ডায়াবেটিস রোগীরা নিশ্চিন্তে কাঁচা কলা খেতে পারেন। তবে ইচ্ছা হলে এ বিষয়ে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতেই পারেন।

উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কাঁচা কলা খেলে ইন্টেস্টাইনে (পেট এবং বৃহৎ অন্ত্রের মধ্যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের অংশ) উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে পেটের নানা রোগও দূরে পালায়।

পটাশিয়ামের ঘাটতি দূর করে এক কাপ কাঁচা কলায় প্রায় ৫৩১ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে, যা পেশির গঠনের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি নার্ভ এবং কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। রক্তে যাতে কোনো ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান থাকতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে কাঁচা কলা।

ওজন কমাতে সাহায্য করে কাঁচা কলায় উপস্থিত রেজিস্টেন্স স্টার্চ হজম হতে সময় নেয়। ফলে বহুক্ষণ ক্ষিদে পায় না। আর ক্ষিদে না পেলে খাবার খাওয়ার পরিমাণও কমতে শুরু করে। ফলে শরীরে ক্যালরির প্রবেশ ঘটে কম। আর এমনটা দীর্ঘ দিন ধরে যখন হতে থাকে, তখন ওজন কমতে সময় লাগে না।

ভিটামিনের চাহিদা মেটায় কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে বিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন সি রয়েছে। এই দুটি ভিটামিন শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে সংক্রমক রোগকে দূরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। অন্যদিকে ভিটামিন বি৬ শরীরে এনার্জির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই সুস্থতায় প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কলা রাখা উচিত।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর