৪৭ বছরেও নির্মিত হয়নি খোয়াই সেতু

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ হবিগঞ্জ সদরের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ১০ নং লস্করপুর ইউনিয়নের চরহামুয়ায় খোয়াই নদীর একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পেহাচ্ছে ২০ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার অধিবাসী। এই দুই গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে গেছে খোয়াই নদী। এদিকে শায়েস্তাগঞ্জ চরহামুয়া খোয়াই নদীর ওপর সেতু নির্মাণ ৪৭ বছরেও হয়নি। মূলত খোয়াই নদীই এই দুই গ্রামকে দু’ভাগ করে রেখেছে। কিন্তু এখানে নেই পারাপারের কোন সেতু। একটি মাত্র সেতুর অভাবে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে পড়তে হয় চরম দূর্ভোগে।

জানা যায়, কেনাকাটা করতে হলে চরহামুয়াসহ আলাপুর এলাকাবাসীর যেতে হয় শায়েস্তাগঞ্জসহ কটিয়াদি ও মিরপুর বাজারে। তাছাড়া উপজেলার শতবর্ষী শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ, মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, ব্যাংক হাসপতালে যেতে হলে এলাকাবাসীকে খোয়াই নদীই পার হতে হয়।

একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ পারাপার হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। চরহামুয়ার লোকজন বর্ষার ভরা মৌসুমে নৌকায় নদী পার হন। কিন্তু বর্তমানে নদীতে যে পানি আছে তাতে ঠিক মত নৌকা চালানো অসম্ভব। বাশেঁর সাঁকোই তাই একমাত্র ভরসা। কিন্তু সেটাই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দূর্ঘটনা। এদিকে স্থানীয়ভাবে তৈরী ঝুঁকি পূর্ণ বাশেঁর সাঁকো পারাপার হওয়ার সময় অনেকেই দূর্ঘটনার কবলে পড়েন।

এলাকাবাসীর ভাষ্য, খোয়াই নদীর ওপর ব্রীজটি নির্মিত হলে পাল্টে যাবে নদীর উভয় পাড়ের বসবাসরত ৪০ হাজার মানুষের জীবন ব্যবস্থা। জানা গেছে, এ পর্যন্ত জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে পেয়েছে শুধুই আশার বাণী। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেছে বাঁশের সাঁকো। কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই সাঁকো নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

শায়েস্তাগঞ্জ পৌরশহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত খোয়াই নদীর খেয়াঘাট। চরহামুয়া, বনগাঁও, নোয়াবাদ, বাতাসর, কলিমনগর, সুঘরসহ ২০ গ্রামের শতশত স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী ব্যবসায়ীসহ প্রতিদিন শায়েস্তাগঞ্জে আসতে হয়। এখানে সেতু না থাকায় সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোর কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যে ন্যায্যমুল্য পাচ্ছেন না তারা। তাছাড়া মুমুর্ষু রোগীর জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও এই সাঁকো বা নৌকাই গ্রামের মানুষগুলোর একমাত্র সহায়ক।

শাহ্ জালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ওই সাঁকো পার হওয়ার সময় অনেক শিশু নিচে পড়ে গিয়ে মারাত্মক আহত হয়েছে। অনেকেরই বই খাতা পানিতে ভিজে গেছে। সেতুর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এলাকাবাসীসহ বহুবার আবেদন করেছি। স্থানীয় বাসিন্দা মো. কামাল মিয়া (৩৫) মো. হরমত আলী (৪০) বলেন, নির্বাচন আসলে আমাদের কদর বাড়ে। প্রার্থীরা সেতুটি তৈরীর প্রতিশ্রুতি দেন। ভোট নেয়ার পর সেতুতো দূরের কথা এলাকাবাসীর কোন খোঁজ খবরই কেউ রাখেন না।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর