কোনো জাল ফেলবো না, জাটকা-ইলিশ ধরবো না

কোনো জাল ফেলবো না, জাটকা-ইলিশ ধরবো না- এই স্লোগানে আজ শুরু হয়েছে জাতীয় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ- ২০১৯। ১৬ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত দেশে এই সপ্তাহটি পালিত হবে। জাতীয় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের এবছরের শ্লোগান হচ্ছে- “কোনো জাল ফেলবো না, জাটকা-ইলিশ ধরবো না।”

উল্লেখ্য, দেশের ইলিশ-অধ্যুষিত ৩৬টি জেলায় গত ১০ থেকে ১৬ মার্চ জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালনের সূচি নির্ধারিত থাকলেও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় অনিবার্য কারণে তা এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়।

সপ্তাহটি পালনের আওতাভূক্ত জাটকাসমৃদ্ধ ৩৬টি জেলা হচ্ছে- ঢাকা, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, জামালপুর, পাবনা, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মো. রাশেদুল হক জানিয়েছেন, ভোলা জেলার চরফ্যাশনে সামরাজ মৎস্যঘাটে আজ বেলা ১১টায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। উদ্বোধনের পর সেখানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুর নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য নৌ-র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে।

জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০১৯ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রদত্ত বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতীয় মাছ ইলিশ বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। আবহমান কাল ধরে ইলিশ বাঙালির রসনা বিলাসে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে। গ্রামীণ কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ সার্বিক অর্থনীতিতেও একক প্রজাতি হিসেবে ইলিশ মাছের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।’

বাংলাদেশের বিশাল উপকূলসহ মোহনা এলাকাগুলো ইলিশের বিচরণক্ষেত্র উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ মাছ প্রাকৃতিকভাবে বংশ বিস্তার করলেও পরিপূর্ণ বৃদ্ধিতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। এ প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপন ইতিবাচক পদক্ষেপ।’

প্রদত্ত বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জাটকা সংরক্ষণে সময়োপযোগি ও সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। এ সংক্রান্ত সকল কার্যাদি বর্তমান সরকার কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় মাছ ইলিশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে বদ্ধপরিকর।’

বাংলাদেশ এখন মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একক প্রজাতি হিসেবে ইলিশের অবদান সর্বোচ্চ। ২০০৮-০৯ সালে যেখানে ইলিশের মোট উৎপাদন ছিল ২ দশমিক ৯৯ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৭-১৮ সালে মোট উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১৭ লাখ মেট্রিক টনে। বর্তমানে এর বাজারমূল্য প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা এবং জাতীয় জিডিপিতে এই একক প্রজাতির অবদান প্রায় ১ শতাংশ।’

তিনি বলেন, ‘ইলিশের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে জাটকা আহরণ নিষিদ্ধসহ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধকালীন সময়ে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার জেলেদের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদানসহ বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর