জীবনসঙ্গীর সহিংসতার শিকার ৭৩ শতাংশ নারী

বাঙালী কণ্ঠ  নিউজঃ দেশে পারিবারিক সহিংসতার পারদ চড়ছেই। ৭২.৬ শতাংশ নারী তাদের জীবনসঙ্গীর মাধ্যমে কোনো না কোনো সহিংসতার মুখে পড়ছে। গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আনফিনিশড বিজনেস : দ্য পারস্যুট অব রাইটস অ্যান্ড চয়েসেস ফল অল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)। সংস্থাটি তাদের ওই প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে। তবে সংস্থাটির প্রতিবেদনে ভালো কিছু খবরও উঠে এসেছে।

এতে বলা হয়েছে, গর্ভধারণের কারণে মারা যায় এমন নারীর সংখ্যা প্রতি লাখে ৩৬৯ থেকে কমে ২১৬ জনে নেমে এসেছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারকারী নারীর সংখ্যাও বেড়ে ৫৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এখনো বিশ্বের ২০ কোটি নারী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সেবা থেকে বঞ্চিত। প্রাথমিকে মেয়ে শিশুর হার বেড়ে ৯৮ শতাংশ হয়েছে। আর কাজ করা মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৫৮ শতাংশ হলেও বেড়ে গেছে কর্মহীনদের হার। এটি ১১ শতাংশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো, ড. বারাকাত-ই-খুদা, ড. মুজাফফর আহমেদ প্রমুখ।

‘আনফিনিশড বিজনেস : দ্য পারস্যুট অব রাইটস অ্যান্ড চয়েসেস ফল অল’ শিরোনামের প্রতিবেদনটির বিস্তারিত তুলে ধরেন সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. আশা তর্কেলসন। তিনি বলেন, অনেক ভালো খবরের পাশাপাশি খারাপ খবরও আছে। দেশে বাল্যবিয়ে কমেছে। স্কুলগামীদের সংখ্যা বেড়েছে। স্কুলগামীদের সংখ্যা বেড়ে ৯৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিকে মেয়েশিশুর অংশগ্রহণ বেড়ে ৯৮ শতাংশ হয়েছে। মাধ্যমিকে মেয়েশিশুর অংশগ্রহণ বাড়লেও শিক্ষাক্রম শেষ করার হার এখনো কম। রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়ন বেড়েছে। সংসদে ২০ শতাংশ এবং স্থানীয় সরকারে ২৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব করছে।

তিনি বলেন, এত কিছুর পরও সমাজে নারীরা এখনো নিম্নমর্যাদার। এখনো তারা পুরুষের ওপর নির্ভরশীল। আর এগুলোর কারণে নিজ ঘরে, কর্মক্ষেত্রে নারীরা শারীরিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, পাচার, এসিড নিক্ষেপ এবং বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে।

ড. আশা তর্কেলসন বলেন, দেশে পারিবারিক সহিংসতায় ক্ষতির হার অনেক বেশি। ৭২.৬ শতাংশ নারী জীবনসঙ্গীর মাধ্যমে কোনো না কোনো সহিংসতার মুখে পড়ছে। পারিবারিক সহিংসতায় ক্ষতির পরিমাণ জিডিপির ২.৫ শতাংশের সমান। তাই নারীদের জন্য শুধু করণীয় নির্ধারণ করলেই হবে না, বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। মেয়ে ও নারীদের সবদিক থেকে সমান সুযোগ দিতে হবে। তাদের জীবনকে সুরক্ষিত করতে হবে। এ সময় তিনি দেশে কাজ করা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, কাজ করে এমন মানুষের সংখ্যা এখন ৫৮ শতাংশ। তবে তরুণদের মধ্যে কর্মহীনদের হার বেড়ে ১১ শতাংশ হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘দেশের মাত্র ১০ শতাংশ হাসপাতালে থার্মোমিটার আছে। এ খবর আমার জন্য খুবই বেদনাদায়ক। আমি বিষয়টি দেখব। এ সমস্যার সমাধান করব। বেশির ভাগ হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন নেই বা কাজ করছে না এমন বিষয়েরও ফয়সালা হবে। আগামী বাজেটে এর অর্থের সংকুলান করে সমস্যার সমাধান করা হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর