মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হচ্ছে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত গ্রাম মঙ্গলবাড়িয়ার নামেই লিচুর নাম হয়েছে ‘মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু’। মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু স্বাদে, গুণে ও মানে বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। ইতোমধ্যে দূরদূরান্তের ক্রেতারা মঙ্গলবাড়িয়ায় এসে লিচু কিনতে ভিড় শুরু করেছেন। মিষ্টি ও স্বাদে ভরপুর এ লিচুর কদর সারাদেশ জুড়েই।

মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু দেশের সীমানা পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে মঙ্গলবাড়িয়াকে ঘিড়ে এলাকাবাসীর মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ৫টি, ১০টি এমনকি শতাধিক লিচুর গাছ রয়েছে। এতে এলাকাবাসীর আয়ের একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সড়কের দুইপাশে, বাড়ির উঠানে, আঙ্গিনায়, ক্ষেতের সীমানায় লিচু গাছ রয়েছে।

বৈশাখ মাসের শেষের দিকে লিচু পাকা শুরু হয়। চলে জ্যৈষ্ঠ মাস অবধি। প্রায় দেড় শতাধিক কৃষক এ লিচু চাষে সরাসরি জড়িত। এ গ্রামে তিন হাজারেরও অধিক লিচু গাছ রয়েছে। কৃষকেরা লিচু আসার পরপরই পাইকারদের কাছে গাছ বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে পাইকাররাই গাছের পরিচর্যা করে থাকেন।

লিচু ব্যবসায়ী রশিদ মিয়া জানান, এ লিচুর চাহিদা এখন দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। গত সিজনে লিচু বিক্রি ভালো লাভ করতে পারিনি ৪০ হাজার টাকার মত লাভ হয়েছে। গত বছর মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু ক্রেতা আমার কাছ থেকে ফোনে তাদের লোক মারফত কুড়ি হাজার টাকার লিচু কিনে নেয়। এবারও অগ্রিম অর্ডার রয়েছে।

লিচুর এক পাইকার আঃ সামাদ বলেন, গত বছর মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশে ত্রিশ হাজার টাকর লিচু লোক মারফত বিক্রি করেছিলাম। এবারও আশা করছি আগের দেশের বাজারের পাশাপাশি বিদেশেও লিচু পাঠাতে পারব।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে এ গ্রামের জনৈক দারোগা সদূর চীন থেকে এই জাতের লিচু সর্বপ্রথম রোপণ করেন। এরপর থেকে এ লিচুর স্বাদ, গন্ধ, সুস্বাদু দেখে পুরো মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে লিচু চাষ। এ গ্রামের অনেকেই লিচু চাষে এখন স্বাবলম্বী। গ্রামের প্রায় শতাধিক লিচু চাষির সহস্রাধিক লিচু গাছ রয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতেই কমবেশি লিচু গাছ রয়েছে। মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের লিচুর সঠিক জাত জানা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রামের নামানুসারে একে ‘মঙ্গলবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহি’ লিচু বলে দেশে খ্যাতি অর্জন করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে লিচু চাষি ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে।

লিচু ব্যবসায়ী ফরিদ জানান, গত বছর লিচু বিক্রি করে ৪৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এবার দেশের বাইরের কিছু অর্ডার রয়েছে তাই ভাল লাভ হবে বলে আশা করছি।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর স্বাদ ভিন্ন থাকায় ক্রেতাদের কাছে বরাবরই অকর্ষনীয়। এ লিচু উৎপাদনে কৃষকদের উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা সার্বিক সহায়তা করে থাকেন।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর