সাগর-রুনি হত্যা : মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে র‌্যাব।গেল ১৫ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহম্মদের দেওয়া প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলমের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালত আগামী ২ মে মামলার মূল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন।

 

এর আগে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন আদালত। আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মামলায় গতানুগতিক তদন্ত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে অত্যাধুনিক তদন্ত পদ্ধতি ও বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ প্রাপ্তির লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি অত্যাধুনিক ল্যাবকে এ তদন্তে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। বেশকিছু আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সেখানে পাঠানো হয়েছে। ল্যাব দুটি থেকে পাওয়া ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন বিস্তারিত পর্যালোচনা করে তদন্ত করা হচ্ছে।

 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ঘটনাস্থল থেকে চুরি হয়ে যাওয়া ভিকটিম সাগর-রুনির ল্যাপটপ বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে কি না, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে পত্রযোগাযোগ অব্যাহত আছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার ভিকটিমদ্বয় সাংবাদিক হওয়ায় তদন্তকালে ২৭ সংবাদকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত আট আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে।

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো আলামতের ডিএনএ পরীক্ষায় দুজন অজ্ঞাত পুরুষের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায় মর্মে উল্লেখ আছে। উক্ত দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে জোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকার থানাগুলোর মধ্যে শেরে বাংলা নগর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, কলাবাগান থানাসহ বিভিন্ন থানার চুরি, সিঁদেল চুরি ও দস্যুতাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করা আসামিদের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে এই মামলায় তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না তা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। বিশ্বস্ত গুপ্তচরের মাধ্যমে গোপনে ও প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করে মামলার প্রকৃত আসামিদের চিহিৃত পূর্বক গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের বছর ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ ভাড়া বাসায় মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি খুন হন। পরের দিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।পরে মেহেরুন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

মামলায় রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি আটজন। অপর আসামিরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।
Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর