আমরা ভীত নই: পার্লামেন্টে তেরেসা মে

আমরা ভীত নই। সন্ত্রাসবাদের মুখে আমাদের দৃঢ়তা টলবে না।’ সন্ত্রাসী হামলার পর এ বার্তা দিলেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারে বৃটিশ পার্লামেন্ট ভবনের পাশে সন্ত্রাসী হামলার পর পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। মে আরও বলেন, ‘গতকাল এক সন্ত্রাসকর্ম আমাদের গণতন্ত্রকে স্তব্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা এখানে স্বাভাবিকভাবে জড়ো হয়েছি, যেমনটা আমাদের আগের কয়েক প্রজন্ম হয়েছিল, এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হতে থাকবে। আমরা জড়ো হয়েছি একটি সাধারণ বার্তা দিতে যে, আমরা ভীত নই এবং সন্ত্রাসবাদের মুখে আমাদের দৃঢ়তা টলবে না। আজ আমরা এখানে, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন পার্লামেন্টে, মিলিত হয়েছি, কারণ আমরা জানি যে, আমাদের গণতন্ত্র ও এর মূল্যবোধ সবসময়ই মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। স্বাধীন মতপ্রকাশ, স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন- এই মূল্যবোধ এখানে প্রোথিত। এই মূল্যবোধ ভাগাভাগি করে বিশ্বের বুকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্বাধীন মানুষজন। এক সন্ত্রাসী এমন স্থানে এসেছে যেখানে সব জাতীয়তা ও সংস্কৃতির লোকজন স্বাধীনতার মানে উদযাপন করতে আসে। এই সন্ত্রাসী বাছবিচারহীনভাবে নারী-পুরুষ ও শিশুদের ওপর নৃশংসতা চালিয়েছে। এটি সব স্বাধীন মানুষের ওপর একটি হামলা। বৃটিশ জনগণের পক্ষে আমি বিশ্বে আমাদের বন্ধু ও মিত্রদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা সপষ্টভাবে বলেছেন যে, তারা আমাদের পাশে আছেন। ওয়েস্টমিনস্টারের রাস্তায় যা ঘটেছে তা আমাদের সবাইকে নাড়া দিয়েছে। পুলিশের তদন্ত চলমান রয়েছে। এ কারণে পার্লামেন্ট বুঝবে যে, আমি কতটুকু বলতে পারবো তাতে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে, পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্যের ভিত্তিতে যতটুকু বলা সম্ভব আমি এই পার্লামেন্টে বলতে চাই। গতকাল আনুমানিক দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে এক হামলাকারী ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ পারাপাররত নিরপরাধ পথচারীদের ওপর দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে দেয় এক হামলাকারী। এতে ২ জন নিহত হন। আহত হন আনুমানিক ৪০ জন। হাসপাতালে ভর্তি ১২ জন বৃটিশ ছাড়াও আমরা জানি ভিকটিমদের মধ্যে রয়েছে ফরাসি তিন শিশু, দুই রোমানিয়ান, চার দক্ষিণ কোরিয়ান, এক জার্মান, এক পোল, এক আইরিশ, এক চীনা, এক ইতালিয়ান, এক আমেরিকান ও দুইজন গ্রিক। আক্রান্ত প্রতিটি দেশের সরকারের সঙ্গে আমরা নিবিড় যোগাযোগ রাখছি।’ প্রধানমন্ত্রী মে আরো বলেন, ‘আহতদের মধ্যে আরো রয়েছেন তিনজন পুলিশ সদস্য যারা একটি অনুষ্ঠানে দায়িত্ব পালনের পর ফিরছিলেন। সাহসিকতা প্রদর্শন করা ওই তিনজনের দুইজন গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন। হামলাকারীর গাড়ি এরপর ক্যারিয়েজ গেটসে একজন পুলিশ কর্মকর্তার দিকে অগ্রসর হয়। বড় একটি ছুরি দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। পরে সশস্ত্র পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে নিহত হয় হামলাকারী। দুঃখজনক হলো ৪৮ বছর বয়সী কিথ পালমার প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক সাহসী একজন মানুষ। তার ত্যাগ কখনই বিস্মৃত হবে না।’

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর