কাজল দেওয়ান শহরকে শোনালেন গ্রামের গান

জীবনরে জীবন ছাড়িয়া না যাও মোরে, তুই জীবন ছাড়িয়া গেলে আদর করবে কে আমারে।’ অনেক বছর ধরে এই গান শুনে আসছে কোটি কোটি শ্রোতা। কতো ভেসেছেন চোখের জলে। ফোক ফেস্টের দ্বিতীয় দিনে এই গান শুনিয়ে দর্শকের মনে ঝড় তুলেছেন কাজল দেওয়ান।

মঞ্চে এসে তিনি বলেন, আমি গ্রামের মানুষ। গ্রামের গান গাই। আজ শহরের মানুষকে শোনাবো আমার গ্রামের গান।

দেশের লােকগান বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর আয়োজিত হয়ে আসছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় লােকসংগীতের উৎসব। ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট’ নামের এই উৎসব চলতি বছরও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উৎসবের পঞ্চম আসরের পর্দা উঠেছে গতকাল ১৪ নভেম্বর। আজ ফোক ফেস্টের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় পরিবেশনা ছিলো কাজল দেওয়ানের।

ক্ষুদে বাউল শফিকুল ইসলামের গান দিয়ে শুরু হয় ঢাকা আন্তর্জাতিক ফোক ফেস্ট ২০১৯-এর দ্বিতীয় দিনের আয়োজন।

শফিকুল মঞ্চ ছাড়তেই লোকসংগীতশিল্পী কামরুজ্জামান রাব্বি উঠেন মঞ্চে। তার পরিবেশেনার পর আসেন বাংলাদেশের লোক গানের গায়ক কাজল দেওয়ান।

মঞ্চে উঠে কাজল গাইলেন, দিন ফুরাইলেই ভাইঙ্গা যাইবো এই রঙ্গের মেলা, এর পর একে একে গেয়ে শোনান, পিড়িতের বাজার ভালো না, আমায় এত দুঃখ দিলি বন্ধু রে বন্ধু, আমি তোর পিড়িতের দিওয়ানা রে দিওয়ানা।

গানের মাঝে মাঝে গানের মর্মকথাও তুলে ধরেন কাজল দেওয়ান। তার কথাগুলোগুলো মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে থাকেন উপস্থিত শ্রোতারা।

কাজল দেওয়ান গেয়ে শোনান তার বাবার গওয়া গান জীবন রে, তুই জীবন ছাড়িয়া গেলে আদর করবে কে আমারে, না না আজ আমার মন ভালো না।

কাজল দেওয়ানের গানে বিরহের কাতর হয় উপস্থিত দর্শক শ্রোতা।

বাউলশিল্পী কাজল দেওয়ানের জন্ম ১৯৬৮ সালে ঢাকার কেরানীগঞ্জে। বাবা প্রখ্যাত বাউল মাতাল কবি আবদুর রাজ্জাক দেওয়ানের হাত ধরে বাউলগান শুরু করেন। প্রায় ৩০০ অডিও অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তার। পালাগান ও লোকসংগীতকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছেন কাজল দেওয়ান।

কাজল দেওয়ানের পর সঙ্গীত পরিবেশন করবেন-বাংলাদেশের ফকির শাহাবুদ্দিন, পাকিস্তানের হিনা নাসরুল্লাহ ও মালির হাবিব কইটে অ্যান্ড বামাদা।

প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে উৎসব চলছে রাত ১২টা পর্যন্ত। বাংলাদেশসহ ছয় দেশের দুই শতাধিক শিল্পী অংশ নিচ্ছে এবারের উৎসবে। ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট’। শনিবার শেষ হবে এবারের উৎসব।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর