অকাল বন্যায় নিঃস্ব কৃষক, দায় এড়াচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন

অকাল বন্যায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার সাধারণ কৃষক। ফলস ঘরে তোলার মাত্র ১০-১২ দিন আগে এমন দুর্যোগে হতবিহল অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে তারা। তবে, তাদের পুনঃর্বাসনে এখন পর্যন্ত নেই কোনো আশ্বাস। এদিকে, বন্যার কারণ হিসেবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দোষারোপ করা হলেও জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন: যে জায়গা দিয়ে পানি ঢুকছে সেখানে বাধ রক্ষায় কোনো বরাদ্দ ছিলো না।

গতকাল রাতে নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর সবচেয়ে বৃহৎ দুটি বাঁধ কীর্তন খোলা ও নাইওরীরখাল বাধ ভেঙ্গে গেছে। এর ফলে পাঙ্গাসিয়া, মরানদী, কাঠালজান এবং দিরাই উপজেলার সুরমা নদীর পর্যন্ত পানি প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে প্রায় ২ থেকে আড়াইহাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল।

উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও বাধ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।এখন, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে ঢাকায় ত্রাণ সাহায্যের জন্য পাঠানো হচ্ছে।

তবে, প্রতি বছরই কেনো এমন অকাল বন্যা এমন প্রশ্নের জবাবে খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তোফায়েল আহমেদ বলেন: এখানে আসলে আমাদের তেমন কিছু করার নেই! বাধ রক্ষা এবং নির্মানের পুরো কাজটি দেখাশোনা করে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাধ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ডিসেম্বরে শুরু করার কথা থাকলেও তা করে না। বিভিন্ন জটিলতা দেখিয়ে কাজ শুরু করে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে। এই সময়ে বন্যার পানি চলে আসায় বাধ গুলো কোনো কাজেই আসছে না।

উপজেলা কর্মকর্তার এমন অভিযোগের কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি দাবি করেছেন: আমরা যথাযথ সময়েই কাজ শুরু করেছি। কিন্তু এ বছর বন্যায় যে জায়গার বাধ ভেঙেছে সেখানে কোনো বাজেট ছিলো না। আর আমাদের তো প্রতিবছরই সব এলাকার বাধের জন্য বরাদ্দ থাকে না।

এদিকে ফসল ঘরে তোলার মাত্র দিন দশেক আগে অকাল বন্যায় নাকাল হযে পড়েছে খালিয়াজুরীবাসী। জীবিকার  একমাত্র উৎস এ ফসল এখন পানির নিচে। কারও কারও আবার রয়েছে ব্যাংক ঋণের বোঝা। হয়েছেন সর্বস্বান্ত কৃষক বিষু সরকার বলেন,‘আমাদের উপার্জনের একমাত্র উপায় এ ফসল। ব্যাংক ঋণ নিয়ে এবার আবাদ করেছি। ফসল তোলার মাত্র কযেকদিন আগে তাও চলে গেছে পানির নিচে, বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর