নিয়োগপত্র পাচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা

বাঙ্গালী কন্ঠ ডেস্কঃ সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের (চালক-হেলপার) নিয়োগপত্র দিতে সম্মত হয়েছে মালিক পক্ষ। শ্রমিকদের পক্ষেও এই নিয়োগপত্র নিতে সম্মতি জানান হয়েছে। মঙ্গলবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই বিষয়ে দু’পক্ষের দীর্ঘ বাদানুবাদের পরে সম্মতি জানান হয়।

সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নতুন আইনে শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু মালিকরা যদি নিয়োগপত্র না দেয় সেক্ষত্রে কোন শাস্তির বিধান রাখা হয়নি। সড়ক আইন নিয়ে শ্রমিকদের আপত্তিগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম ইস্যু ছিল।

সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডের কার্যক্রম নিয়ে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। কমিটির সভাপতি মুজিবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে কমিটির সদস্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, শাজাহান খান, ইসরাফিল আলম এবং শামসুন নাহার বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়াও বৈঠকে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহসহ মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, সভার শুরুতেই নিয়োগপত্র দেওয়া ও নেওয়ার বিষয়ে মালিক ও শ্রমিক পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করে বক্তব্য রাখেন। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিয়োগপত্র দিতে মালিকদের অনীহা রয়েছে। কারণ, তারা মনে করে দুর্ঘটনাসহ অন্য কোনো সমস্যা হলে তার দায় তাদের ওপর বর্তাবে। অন্যদিকে মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, শ্রমিকরা সাধারণত ঘন ঘন কোম্পানি/পরিবহন পরিবর্তন করে। যার কারণে তারাই নিয়োগপত্র নিতে আগ্রহী নন।

বৈঠকের পর কমিটির সভাপতি মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আইনে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা রয়েছে। পরিবহনের রুট পারমিটের জন্য আবেদনের সাথে চালকের নিয়োগপত্র যুক্ত করতে হয়। কিন্তু মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষেরই অনীহার কারণে এর বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে কমিটিতে আলোচনার পরে দুইপক্ষই একমত হয়েছে। এখন থেকে মালিকরা নিয়োগপত্র দেবেন এবং শ্রমিকরাও তা গ্রহণ করবেন। এ বিষয়ে দু’পক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়ার জন্য শ্রম বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটি শ্রম বিভাগকে বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারকির সুপারিশ করেছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডের কার্যক্রম নিয় সংসদীয় কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ২০০৫ সালের আইনে বোর্ড গঠন হলেও পরিবহন শ্রমিকদের কল্যাণে এই বোর্ড কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। এই বোর্ডকে এক কোটি টাকা সিড মানি দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা এখন এক কোটি ৭০ লাখ টাকায় উন্নীত হলেও শ্রমিকদের কোনো কাজে আসেনি। সড়ক পরিবহন আর শ্রম মন্ত্রণালয়ের টানাটানির কারণে বোর্ডকে কার্যকর করা যায়নি বলে জানিয়েছেন কমিটি সভাপতি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- বৈঠকে ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বোর্ডকে আরো যুগোপযুগি ও বাস্তব সম্মত করার লক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে আহবায়ক করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং বিআরটিএ’র প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে তার সুপারিশ পরবর্তীতে সংসদীয় কমিটিতে উপস্থাপন করার জন্য সুপারিশ করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর