প্রতি বছর ২২ শতাংশ মানুষ মারা যায় অসংক্রামক রোগে

বাঙ্গালী কন্ঠ ডেস্কঃ বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগের মতো অসংক্রামক রোগের প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিবছর প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে যার ২২ শতাংশই হয় অকালমৃত্যু।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বহুখাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ২০১৮-২৫’ এর জাতীয় পর্যায়ের অবহিতকরণ সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ কর্মসূচির উদ্যোগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থসেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কমিউনিটি স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, অকাল মৃত্যুর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কারণ হলো আত্মহত্যা, মাদকাসক্তি, সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে ডোবা ইত্যাদি। দীর্ঘমেয়াদী এই সকল অসংক্রামক রোগ ওতার ব্যয়বহুল চিকিৎসার ফলে প্রতিবছর লক্ষাধিক লোক দারিদ্রসীমার নিচে চলে যায়। ফলে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়। আর সে জন্যই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় অসংক্রামক রোগকে বেশ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বক্তারা বলেন, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণকে কেবলমাত্র একটি স্বাস্থ্য এজেন্ডা হিসাবে দেখার সুযোগ নাই বরং এটিকে একটি উন্নয়ন এজেন্ডা হিসাবে দেখতে হবে। আর সেজন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দকরণ খুবই জরুরি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক সমীক্ষায় দেখা যায় যে, যদি অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য এক ডলার ব্যয় করা হয়, তবে ১০ বছর পর ৭ ডলার ফেরত পাওয়া যায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশমতে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকির কারণ হলো তামাক সেবন, ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর তৈলাক্ত খাবার, অতিরিক্ত লবন, শারীরিক অলসতা, মদপান ইত্যাদি। এসব যদি কারো জীবনাচরনে বিদ্যমান থাকে, তাহলে তাদের মধ্যে এই রোগগুলো হবার প্রবণতা বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, এই দীর্ঘমেয়াদী রোগগুলো একবার হয়ে গেলে তা সারাজীবন থাকে, তাই রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে আমাদের রোগ প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বরোপ করা উচিত। আর এসব ঝুঁকির কারণগুলো নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের স্বাস্থ্য ভিন্ন অন্যান্য খাতের ওপর নির্ভরশীল। প্রণয়নকৃত ‘বহুখাতভিত্তিক এই কর্মপিরিকল্পনা এই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রমের মূল বুনিয়াদি নকশা হিসাবে বিবেচিত হবে।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর