নয়া পদ্ধতি একই জমিতে ফলছে সর্ষে, মুসুরি, গাজর ও পেঁয়াজকলি

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ বিকল্প পদ্ধতিতে সর্ষে চাষ করছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনার কৃষকেরা। সেখানে চাষাবাদের ধরন বদলে কৃষকের লাভের পথ দেখাচ্ছে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক কৃষি খামার। বিকল্প এই পদ্ধতিতে শুধু যে সর্ষের ফলন বেশি হবে তা নয়, একইসঙ্গে সর্ষের পাশাপাশি একই জমিতে অন্য সবজিও চাষ করা সম্ভব।

জানা গেছে, গত বছর থেকে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক কৃষি খামারে বিকল্প পদ্ধতিতে সর্ষের চাষ করে সাফল্য এসেছে। এই বিকল্প পন্থায় মুসুরির চাষেও নতুন দিশা দেখা গেছে। জমিতে লাইনে বোনা সর্ষে কিংবা মুসুরির সঙ্গে সমানতালে বিট, গাজর, পেঁয়াজকলি, কাটোয়ার ডাঁটা শাকের মতো সবজি চাষ সম্ভব। এতে কৃষকদের পরিশ্রম ও চাষের খরচ দুটোই কম হবে। একই সেচে একাধিক ফসল ফলিয়ে লাভ পাচ্ছেন তারা।

এক মাস আগে হিঙ্গলগঞ্জ কৃষি খামারে বুলবুলের তাণ্ডবে সব তছনছ হয়ে গিয়েছিল। এখন সেখানে বিকল্প পথে চাষ শুরু হয়েছে। কৃষি খামারের ম্যানেজার বিকাশ রায় প্রতিবেদককে দেখালেন কীভাবে বিকল্প পদ্ধতিতে লাইনে সর্ষে, মুসুরি চাষের কাজ চলছে। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে পরিচর্যা করছেন জমিতে।

এভাবে লাইনে চাষের কী সুবিধা তা জানালেন বিকাশ রায়। তিনি বলেন, প্রথমত এভাবে লাইনে চাষ করলে চাষের কাজে মজুর কম লাগবে। নিড়ানি দিতে সুবিধা হবে। যেহেতু গাছ হবে সারিবদ্ধ। প্রত্যেক সারির মধ্যে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব থাকে, সে কারণে মেশিনের সাহায্যে একজন শ্রমিক এক ঘণ্টায় ২ একর জমিতে নিড়ানি দিয়ে ফেলতে সক্ষম হবে। দ্বিতীয়ত, সাধারণ প্রথাগতভাবে সর্ষে বুনতে বিঘা প্রতি জমিতে ২ কিলো বীজ লাগে। সেখানে বিকল্প পদ্ধতিতে লাইনে সর্ষে চাষে এক কিলো বীজেই এক বিঘা জমিতে চাষ সম্ভব।

বিকাশ রায় বলেন, এই পদ্ধতিতে চাষের ফলে গাছে রোগ পোকা কম হয়। জমিতে বাতাস চলাচল করার ফলে গাছের চেহারা মজবুত হবে। পরিপুষ্ট সর্ষের দানা মিলবে। এর ফলে তেলের পরিমাণ অনেক বেশি হবে।‌

সুকুমার মণ্ডল, বিলাস মণ্ডল, হরষিত মণ্ডল, ইয়াকুব গাজি, অনন্ত দাস নামের কৃষকেরা জানান, সর্ষে চাষের এই নয়া পদ্ধতিতে খরচ বেশ সাশ্রয় হচ্ছে। ফলনও খুব ভালো। আমাদের দেখাদেখি অনেকেই এবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন।

ব্লক কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এভাবে চাষের ব্যাপারে প্রচার চলছে। অনেকেই লাইনে সর্ষে, মুসুরি চাষ করে ভালো ফল পেয়েছেন। পাশাপাশি একই জমিতে অন্য ফসল ফলিয়ে লাভ বাড়িয়েছেন।

সূত্র : আজকাল 

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর