বার্সাকে কাঁদিয়ে ফাইনালে অ্যাটলেটিকো

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ প্রথমে পিছিয়ে পড়েও লিওনেল মেসির নৈপুণ্যে পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি বার্সেলোনা। খানিক পর আঁতোয়ান গ্রিজমানের গোলে এগিয়েও যায় তারা। কিন্তু শেষ দিকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ালো অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুবার জালে বল পাঠিয়ে অসাধারণ এক জয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে উঠে গেল দিয়েগো সিমেওনের দল। সউদী আরবের কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে পরশু দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ৩-২ গোলে জিতেছে অ্যাটলেটিকো। তাদের গোল তিনটি করেন কোকে, মোরাতা ও আনহেল কোররেয়া।

প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরো ধারালো আক্রমণে শুরু হয় ম্যাচ। মিনিট পেরুতে না পেরুতেই কোকের লক্ষ্যভেদে সাফল্যও পেয়ে যায় অ্যাটলেটিকো। তবে তাদের আনন্দ স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। পাঁচ মিনিট পর সমতা ফেরান মেসি। আট মিনিট পর আবার ফের জালে বল জড়ান আর্জেন্টাইন জাদুক। কিন্তু ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি গোলটি বাতিল করে দেন হ্যান্ডবলের কারণে।

৬২তম মিনিটে অবশ্য এগিয়ে যায় কাতালানরা। গ্রিজমানের কল্যাণে। ৭৪তম মিনিটে বল জালে পাঠান জেরার্দ পিকে। তবে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে এবার রেফারি বাঁজান অফসাইডের বাঁশি। ম্যাচে নাটকীয় মোড় আসে ৮১তম মিনিটে। মোরাতা সফল স্পট-কিকে গোল করলে সমতায় ফেরে অ্যাটলেটিকো। আর পাঁচ মিনিট পর গোল করে ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেন কোরেয়া। তাতে ৩-২ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অ্যাটলেটিকো।

বল দখলে ও আক্রমণে এগিয়ে থাকার পরও ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় ম্যাচ শেষে জেদ্দায় গণমাধ্যমের কাছে মেসি বলেছেন, ‘এটা লজ্জাজনক। আমরা দারুণ একটা ম্যাচ খেলেছি। লম্বা সময় পর আমরা ভালো অনুভব করছিলাম। আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম, প্রাধান্য দেখাচ্ছিলাম এবং ম্যাচ জুড়ে আক্রমণ করছিলাম। কিছু কিছু ভুল করে আমরা ম্যাচটা হাতছাড়া করেছি যখন অ্যাটলেটিকো একেবারেই নির্জীব হয়ে পড়েছিল। মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে তারা খেলাটা ঘুরিয়ে ফেলে যেটা আমাদেরই জেতার কথা ছিল।’

এবার নতুন আঙ্গিকে চার দল ও দেশের বাইরে হচ্ছে স্প্যানিশ সুপার কাপ। আগের রাতে প্রথম সেমি-ফাইনালে ভালেন্সিয়াকে ৩-১ গোলে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। একই ভেন্যুতে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায়। নিজেদের দুই নগর প্রতিদ্ব›দ্বী চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকোর ম্যাচটি মেসি ও তার সতীর্থদের দেখতে হবে দর্শক হয়ে। শিরোপার মঞ্চে নাম লেখাতে না পারার এই আক্ষেপ ভীষণভাবে পোড়াচ্ছে তাকে, ‘এটা কষ্ট দিচ্ছে কারণ আমরা ফাইনালে যেতে চেয়েছিলাম এবং এই শিরোপাটা জিততে চেয়েছিলাম। … আমরা ভালো একটা ম্যাচ খেলেছি কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা জিততে পারিনি।’

মেসি ভালোভাবেই জানেন, ক্ষোভ ঝাড়লেও ম্যাচের ফল পাল্টানোর কোনো সুযোগ নেই। বরং এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তাই তার আশাবাদ, ভবিষ্যতে ‘শিশুসুলভ ভুল’গুলো আর করবেন না তারা, ‘যদিও আমরা ম্যাচটা হেরেছি, তারপরও আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এ বিষয়ে আমরা অবগত আছি যে আমরা সবকিছু যেভাবে চাচ্ছি, সেভাবে হচ্ছে না এবং শিশুসুলভ ভুলগুলো আমরা আর করতে চাই না।’

ডিসেম্বরে লা লিগায় অ্যাটলেটিকোর মাঠে মেসির শেষ দিকের গোলে জিতেছিল বার্সেলোনা। এবারও দলকে পথ দেখালেন অধিনায়ক। কিন্তু শেষটা সুখকর হলো না। এই নিয়ে নতুন বছরে দুই ম্যাচ খেলে জয়শ‚ন্য রইলো কাতালান ক্লাবটি। গত সপ্তাহে এস্পানিওলের মাঠে শেষ দিকে গোল খেয়ে ২-২ ড্র করেছিল এরনেস্তো ভালভার্দের দল।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর