আজ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির ভোট

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন সামনে এলেই শুরু হয় নতুন মেরুকরণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিশেষ করে উপাচার্যকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা আন্দোলনে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন একটি ‘বড় ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করছে। এবারও উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের টিকে থাকা-না থাকা নিয়ে আবর্তিত হচ্ছে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন। নির্বাচনের ফলাফলের উপর অনেকটা নির্ভর করছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের গতি। আজ ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নির্বাচন- ২০২০’।

এবারও আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা বাম হিসেবে প্যানেল নয়; প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে উপাচার্যপন্থি হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের একাংশ নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ এবং উপাচার্যবিরোধী হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের একাংশ, বিএনপি এবং বামপন্থি শিক্ষকদের নিয়ে ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’।

উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা চাচ্ছেন নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে উপাচার্যকে টিকিয়ে রাখা। এজন্য দিন-রাত চলছে জোর প্রচারণা। অন্যদিকে উপাচার্যবিরোধীরা চাচ্ছেন জয় লাভের মাধ্যমে উপাচার্য অপসারণের আন্দোলনকে জোরদার করতে। দুই পক্ষ প্রচার চালালেও ভোটের রাজনীতিতে কারা এগিয়ে যাবেন তাই এখন দেখার বিষয়।

‘দল পাল্টিয়ে’ প্রথমবার শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আলমগীর কবির। প্রথমবারেই সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হয়েছেন তিনি। আলমগীর কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের প্যানেল থেকে নির্বাচন করে সিনেটর পদে জয়লাভ করেন। ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’-এর সমন্বিত কমিটির দায়িত্বে থেকে বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ আন্দোলনও করেছেন তিনি। কিন্তু এপ্রিল মাসে তিনি উপাচার্যের পক্ষে যোগদান করে ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর’-এর মুখপাত্রের দায়িত্ব পান। সম্প্রতি তাকে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া উপাচার্যের বাসভবনের সামনে হামলার ঘটনায় তিনি প্রত্যক্ষ ইন্ধন দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে।

উপাচার্য বিরোধী ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ ছেড়ে উপাচার্যপন্থি ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’-এ যোগদান করে সহসভাপতি পদে লড়ছেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ হাফিজুর রহমান, সদস্য পদে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক যুগল কৃষ্ণ দাস এবং রসায়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কৌশিক সাহা।

অন্যদিকে বছরের অধিকাংশ সময় ক্লাস না নেয়ার অভিযোগ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। কিন্তু অবরোধ চলাকালে এই অধ্যাপকই ক্লাস নিতে বেশ সরব ছিলেন। এজন্য বেশ কয়েকবার শিক্ষার্থীদের সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়াতে হয়েছে তাকে।

বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ- এর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহা. মুজিবুর রহমান। তার মতে, ‘বিতর্কিত এবং দল পাল্টানো নিয়ে যাদের কথা বলা হচ্ছে তারা সবাই উন্নয়নের পক্ষে। গত বছর উপাচার্য সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে একসাথে কাজ করার আহ্বান করেছেন। তখন থেকেই তারা আমাদের সাথে আছেন। আর এই প্যানেল মূলত করা হয়েছে উন্নয়ন প্রকল্পের কথা চিন্তা করে। যারা সামনের দিনগুলোতে এই উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে মনে হয়েছে আমরা তাদেরই প্রার্থী করেছি।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর