হাওরে মাছ-ফসলের সর্বনাশ

দুর্নীতির কারণে হাওর রক্ষা বাঁধ ভেসে গিয়ে পানিতে তলিয়ে সব ফসল  নষ্ট হয়ে গেছে। ধান ক্ষেত পচে বিষাক্ত গ্যাসে মাছ, হাঁসসহ ও অন্যান্য প্রাণীও মরে হাওরে এক দুর্গন্ধময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষার পানিতে দুর্গম হাওরে যৌবন ফিরে আসলেও এবারের হাওরের পানিতে যেন হাওরবাসীর সর্বনাশ। ফসল ও সম্পদ হারিয়ে সারা বছর কিভাবে চলবে সেই দুশ্চিন্তায় কৃষক। : হাওরবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এবারের আগাম বৃষ্টিতে হাওরের ৬টি জেলার ৩০টি থানর কৃষকরাই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষতি কোনভাবেই পোষাবার নয়। মৌলভীবাজারে গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওর, হাইল হাওর, সোনাদিঘি, কাওয়াদিঘির হাওর ও কইরকোনা বিলসহ ৭ উপজেলার ১৭ হাজার ৪শ ৩২ হেক্টর জমি পানির নিছে তলিয়ে যায়। যার মধ্যে ১০ হাজার ২শ ৭৬ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে গেছে। যার তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১শ ১৪ কোটি টাকা। বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে এলাকার সাধারণ কৃষকের মধ্যে। তাদের মাঝে বিরাজ করছে হাহাকার। ৬ মাসের ঘামঝরা পরিশ্রমের ফসল একমুঠুও ঘরে আনতে পারেননি এ জেলার কৃষকরা। বোরো : চাষিদের স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। : মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কাঞ্জার হাওর, মানিক হাওর, হাইল হাওর ও কাউয়াদিঘি হাওর পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ১০৪২৫ হেক্টর জমির মধ্যে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে ৩৪৮ হেক্টর, শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওর পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৯৫৬৬ হেক্টর জমির মধ্যে ২৫০ হেক্টর, রাজনগর উপজেলার সোনাদিঘি, কাইয়াদিঘি ও সিঙ্গাহুরা হাওর পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ১৩২০০ হেক্টর জমির মধ্যে ৯৮৭ হেক্টর, কমলগঞ্জ উপজেলার কেওলার হাওর পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৩৮৭৫ হেক্টর জমির মধ্যে ১০৯ হেক্টর, কুলাউড়া উপজেলার হাকালুকি হাওর, ডলডল হাওর, রফিনগর হাওর, খাদিমপাড়া হাওর, আলিয়ার হাওর, বহিষমারা বলি, মেঘাবিল, হাওর বিল, কালাপানির বিল, পালের বিল, হাগুয়া বিল ও লাউয়ার বিলসহ অন্যান্য বিল পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৬৫৫০ হেক্টর জমির মধ্যে ৩৩৯৬ হেক্টর, বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর, মালাম বিল ও হুয়ালা বিল পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৪৩৪০ হেক্টর জমির মধ্যে ১৯৭০ হেক্টর, জুড়ী উপজেলার হাকালুকি হাওর ও কইরকোনা বিল পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৫৪৭০ হেক্টর জমির মধ্যে ৩২১৬ হেক্টর। একই অবস্থা সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের। : অপরদিকে হাকালুকি হাওরসহ বিভিন্ন হাওরে মাছ ও পোকা খেয়ে মরছে পোষা হাঁস। গত কয়দিনে সহস্রাধিক হাঁস মারা গেছে দাবি খামারিদের। এদিকে এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে মাছ মড়ক বন্ধে কুলাউড়া মৎস্য অফিসের উদ্যোগে গত ১৮ এপ্রিল থেকে ছিটানো হচ্ছে চুন ও ওষুধ। এতে অবস্থার কিছুটা উন্নতি ল্য করা যাচ্ছে এবং দ্রুত মাছ মরা বন্ধ হবে বলে উপজেলা মৎস্য অফিস দাবি করছে। কৃষকরা বলছেন, ১৫ এপ্রিল রাতে কালবৈশাখী ঝড়ের পর বাতাসের সঙ্গে ভয়ানক দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন থেকে হাওরের মাছ মরতে দেখা যায়। সেই মাছ খেয়ে এখন মারা যাচ্ছে হাঁস। হাকালুকি হাওরে পানিতে ভাসতে থাকা মরা হাঁস বাতাসে ঠেলে কিনারায় নিয়ে আসতে দেখা গেছে সরেজমিন পরিদর্শনকালে। তা কুড়িয়ে আনছেন খামারিরা। হাকালুকি পাড়ের বাসিন্দা কৃষক আবুল হোসেন, মলিক মিয়া ও সবু মিয়া বলেন, পানিতে ধান নিয়েছে। অভাবের সংসার হাঁসের ডিম বিক্রি করে চালাতেন। হাঁস মরে যাওয়ায় একটি এনজিও থেকে তোলা ঋণ কিভাবে শোধ করবেন এনিয়ে চিন্তিত তারা। হাকালুকি হাওর পাড়ের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার আশিঘর গ্রামের মাইজভাগ এলাকার বাসিন্দা কাদিম শাহ বলেন, খামারিরা হাওরে হাঁস ছাড়লে মাছ ও পোকা খেয়ে একের পর এক হাঁস মারা যায়। কৃষি েেতর পাশাপাশি এনজিও থেকে উত্তোলিত ঋণের টাকায় হাঁস কিনে ডিম বিক্রি করে সংসার চালানোর আশা করেছিলেন হাওরবাসী। এনজিও থেকে তোলা সেই ঋণ এখন তাদের গলার ফাঁস হয়ে দেখা দিয়েছে। : কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দিন হাকালুকি হাওরে চুন ও ওষুধ ছিটানো হবে। শুধুমাত্র সোমবার বিকেলে ও মঙ্গলবার সারাদিনে ৩ হাজার ৩শ কেজি চুন এবং সাথে ওষুধ ছিটানো হয়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাকালুকি হাওরের চকিয়া, ফুটবিল, গৌড়কুড়ি ও কাংলি বিলে চুন ও ওষুধ ছিটানো হয়। চুন ও জিওলাইট ওষুধ ছিটানোর পর পানির রং পরিবর্তন হচ্ছে। : কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, পুরোপুরি অ্যামোনিয়া গ্যাসে আক্রান্ত মরা মাছ খেলে হাঁসও মারা যাবে। তবে বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এ ব্যাপারে কৃষকদের বা হাঁসের খামারিদের সতর্কতা অবলম্বন করতে পরামর্শ তার। কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, এত বড় হাওরে যে পরিমাণ চুন ও ওষুধ দেয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। তবে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে যতণ না দুর্যোগ কাটছে এবং অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। চুন ও ওষুধের জোগান প্রসঙ্গে তিনি জানান, আপাতত এই বিষয় নিয়ে না ভেবে দুর্যোগ থেকে মুক্তির জন্য ম্যানেজ করা হচ্ছে। : উল্লেখ্য, হাকালুকি হাওরে চৈত্র মাসের অকাল বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে ধান পচে পানি দূষিত হয়ে গত ২-৩ দিন থেকে ব্যাপক হারে মাছে মড়ক লেগেছে। এতে ধান আর মাছ পচা দুর্গন্ধে ভারী হয়ে উঠে হাওরের বাতাস। এদিকে সুনামগঞ্জ জেলার সবকটি হাওরে মরা মাছের দুর্গন্ধে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে। চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহে হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জের সবক’টি হাওরের আধা পাকা ও কাঁচা বোরো ফসল অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে অকাল বন্যায় তলিয়ে যায়। এতে বিপদে পড়েন হাওর পাড়ের মানুষ। তলিয়ে যাওয়া হাওরের বোরো ধান কয়েক দিন পানির নিচে থাকায় জেলার সকল হাওর ও নদীর মাছ মরে ভেসে উঠছে। তলিয়ে যাওয়া ধান পচে অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরি হয়ে অক্সিজেন নষ্ট হওয়ায় হাওরের পানি দূষণের ফলে মাছ মরছে বলে মনে করছেন মৎস্য অফিস সংশ্লিষ্টরা। তবে হাওর পাড়ের বাসিন্দারা এটি মানতে নারাজ। তারা জানান, এর আগেও এভাবে অকাল বন্যায় হাওরে পানি এসেছিল; কিন্তু এভাবে মাছ মরতে দেখা যায়নি। উজানের পানিতে কোনো ধরনের রাসায়নিক বিষক্রিয়া আছে কি না তা দ্রুত পরীা করে দেখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন হাওর পাড়ের মানুষ। : এদিকে গত ৪ দিন যাবৎ পোনা মাছ থেকে শুরু করে রুই, কাতলা, বোয়াল, গলদা চিংড়ি, পাবদাসহ দেশীয় সকল প্রজাতির মাছ মরে হাওরে ভাসতে থাকে। গত দু দিন থেকে হাওরবাসী জনসাধারণকে বিষাক্ত পানিতে ভেসে যাওয়া মাছ ধরা ও বাজারে বিক্রি না করতে পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। হাওর পাড়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি হাওরে গ্রামের মানুষ যখন জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বোরো ধান হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব, পরিবারের লোকদের জন্য একমুঠো ভাত জোগাড় করতে দিগি¦দিক ছুটছেন দিশেহারা হয়ে, ঠিক তখনই হাওরের অথৈ পানিতে ভেসে উঠছে মরা মাছ। একই সাথে পচা পানির দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। ধান আর মৎস্য ভান্ডার খ্যাত হাওর পাড়ে দুর্যোগ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। অকাল বন্যায় দিরাই ও শাল্লা উপজেলার ছোটবড় ২৭টিসহ জেলার সবকটি হাওরের কাঁচা ও আধা পাকা সোনালি ফসলের ধান গাছ সবুজ রং থাকতেই সম্পূর্ণ পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। অসময়ে ফসলহানির ঘটনায় কৃষকরা চোখে অন্ধকার দেখছেন। হাওরবাসী জানান, ফসল হারানোর পর বেঁচে থাকার কিছুটা আশা ছিল হাওরের ভাসান পানিতে মাছ আহরণ করে। গত তিন দিন থেকে হাওরের পানিতে অনেক বড় বড় মাছ মরে ভেসে উঠছে। পানিতে দুর্গন্ধ। বছরের ছয় মাস মাছ শিকার করে জীবন-জীবিকা চলে হাওরবাসীর। কিন্তু এবার ধানও গেল, মাছও গেল। কৃষক ও জেলেদের বেঁচে থাকার আর কোনো অবলম্বন রইল না। দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসিবুর রহমান বলেন, নদ-নদী ও হাওরের দূষিত পানি দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার ও আক্রান্ত মরা মাছ জনস্বাস্থ্যের জন্য তিকর হতে পারে। হাওরে দুর্গন্ধযুক্ত ভাসান পানি ব্যবহার ও ভেসে উঠা মরা মাছ আহরণ, খাওয়া এবং বাজারে বিক্রি করা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক তির কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। সতর্কতার জন্য গত দুদিন যাবৎ বিভিন্ন উপজেলায় মাইকিং করে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা হাওরে গত দুদিন ধরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও হাঁস মরে ভেসে উঠছে। এর আসল কারণ হিসেবে ধান পচে অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরির হওয়ায় অক্সিজেন কমে যাওয়াকে দায়ী করা হলেও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও হাওর আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তরা বলছেন, উদ্ভিদ পচে অ্যামোনিয়া তৈরি হবে না। এর অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে, সেগুলো বের করতে দ্রুত সায়েন্টিফিক স্ট্যাডি করতে হবে। তবে সুনামগঞ্জের মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, প্রাথমিকভাবে চুন ছিটিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে, স্ট্যাডির কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। : সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এই সাতটি প্রশাসনিক জেলার বিভিন্ন অংশে বিস্তৃত রয়েছে হাওরাঞ্চল। অসময়ে পানি আসার কারণে দেশের সব হাওর মিলিয়ে এক লাখ ৪১ হাজার ২০৪ হেক্টর জমির বোরো ফসল ডুবে গেছে। এতে প্রায় সাড়ে চার লাখ টন ধানের তি হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। এদিকে সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য অফিস সূত্র বলছে, গত কয়েকদিনে ২৫ মেট্রিক টন দেশীয় প্রজাতির মাছ মারা গেছে, যার বাজার মূল্য ৬০ লাখ টাকা। জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে পানিতে খার বেড়ে যাওয়ায় দম বন্ধ হয়ে মাছ মারা যেতে পারে। : সুনামগঞ্জে দুদকের দল : সুনামগঞ্জের হাওরে হাজার কোটি টাকার ফসলহানির পর ফসল রা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তে গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান দল বৃহস্পতিবার সরেজমিন হাওরের তিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে। একই সঙ্গে স্থানীয় তিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্ত দলের সদস্যরা। : পরিদর্শন শেষে তদন্ত দলের প্রধান দুদকের পরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেছেন, হাওরে কী কারণে ফসলহানি হলো, ফসলরা বাঁধ নির্মাণে কারা জড়িত ছিলেন, কারা কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন এবং কারা এতে সহযোগিতা করছেন সব বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে দুর্নীতির সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেবে দুদক। অনুসন্ধান দলের সদস্যরা  জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওর, তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওর এবং জামালগঞ্জ উপজেলার হালির হাওর পরিদর্শন করে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। এ সময় মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেন, বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে জড়িত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, ঠিকাদার, পিআইসি যারাই অনিময়-দুর্নীতি করেছেন এবং এই কাজে যারা সহযোগিতা করেছেন, তারা যতই শক্তিশালী হোন না, কেউ ছাড় পাবেন না। এদিকে আগাম বন্যায় ফসল রা বাঁধ ভেঙে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার জালিয়ার হাওরসহ বেশ কয়েকটি হাওরের হাজার হাজার একর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ফসলের য়তি হয়েছে বলে বেসরকারি হিসাবে জানা গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ইমাম জানান, গত সোমবার রাতে জালিয়ার হাওর ও সুনুই বিলের বাঁধ ভেঙে উপজেলার প্রায় ৩ হাজার ৫শ একর জমির বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় সরকারি হিসাবে ১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার ফসলের তি হয়। এদিকে গত মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলার বলাইশিমুল, নওপাড়া, কান্দিউড়া, মাসকা ও সান্দিকোণা ইউনিয়নের কয়েকটি হাওর ও বিলে পানি ঢুকে বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে কৃষকদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া দুলাল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুতাসিমুল ইসলাম ও উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান ইমামসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তার সঙ্গে ছিলেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ইমাম জানান,  গত সোমবার  পর্যন্ত সরকারি হিসাবে তির পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৫৬ লাখ। কিন্তু অব্যাহত বন্যায় গত দুদিনে তির পরিমাণ আরো অনেক বেড়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর