লাল-হলুদে একাকার বসন্তের পাতায় ভালোবাসার ফুল

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ জীবনে বসন্তে এসেছে, ফুলে ফুলে ভরে গেছে মন; ও বান্ধবী অনামিকা, আজ তোমাকেই প্রয়োজন। বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ প্রয়াত আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের লেখা ও সুরে গানটি গেয়েছিলেন প্রয়াত শিল্পী খালিদ হাসান মিলু। এই গানে ফুটে উঠেছে বসন্তের সজীবতায় ভালোবাসার কোমলতা। গতকাল ছিলো ১লা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। আর এইদিনটিতেই ভালোবাসা দিবস। আর তাই ফাগুন আর ভালোবাসা মিলেমিশে হয়ে যায় একাকার বাঙালিদের প্রতিক্ষার দিন  বসন্ত। আর বসন্ত বরণেও অনন্য।
অন্যদিকে প্রিয়জনের জন্য প্রতিদিনই ভালোবাসার উপন্যাস রচনার দিন হলেও নির্দিষ্ট এই দিনটিতে থাকে আলাদা আবেগ। কাছে পাবার আকাঙ্খা। আসলে দিনটি একই, মূল কেন্দ্রবিন্দু ভালোবাসা।

ভালোবাসার রং লাল আর বসন্তের রং হলুদ। দীর্ঘদিন দিনটি আলাদা আলাদা দিনে উদযাপিত হলেও এবার প্রথমবারের মতো একই দিনে উদযাপন হয়। তাই পালনকারীদের দুই ধরণের প্রাধান্য দেখা যায়। অনেকেই লাল-হলুদ মিলিয়ে পোশাক পড়েন। এছাড়াও নানা রংয়ের মোহনীয় সাজ চোখে পড়ার মতো। গতকাল ছুটির দিনে অনেকেই পালন করেছেন দিনটি। ধানমন্ডি লেক ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই আসতে শুরু করেন অনেকেই। ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন অনেক দোকানি, সঙ্গে লাল হৃদয় আকৃতির বেলুন। মেয়েদের মাথায় শোভা পায় ফুলে সজ্জিত টায়রা। ভালোবাসায় রাঙ্গিয়ে দিতে ফুলের জুড়ি নেই। অধিক মূল্যে এসব ফুল বিক্রি হলেও ক্রেতার অভাব নেই। বেলা বাড়া সঙ্গে সঙ্গেই সকল বয়সের লোকেদের পদচারণায় মুখর হতে থাকে পুরো লেক। প্রিয়জনের হাত ধরে একটু প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়াই তাদের লক্ষ্য। প্রকৃতি যে প্রেমের কথা বলে। বলে আবেগের কথা।

অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল মকসুদ এসেছেন স্বস্ত্রীক। পাঞ্জাবী পড়ে স্ত্রীর হাত ধরে লেকে হাঁটছেন। স্ত্রীর পরণে লাল পাড়ের শাড়ি। তারা জানান, দুজন দুজনকে প্রথম দেখেন বিয়ের দিন। তারপরও তাদের নেই ভালোবাসার কোন কমতি। আবুল মকসুদ বলেন, ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে চাই বিশ্বাস। আর সঙ্গীকেও ধরে রাখতে হবে সেই বিশ্বাস। তবেই পূর্ণতা পাবে ভালোবাসার।

প্রকৃতিতে এসেছে বসন্ত। বসন্তের দিনে ভালোবাসা দিবস যোগ করেছে আলাদা মাত্রা। ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে দিনটিতে রাজধানীবাসী ভিড় করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, চন্দ্রীমা উদ্যানসহ সব স্থানে। সকলের প্রার্থনা বসন্তের আলোয় আলোকিত হোক সবার ভালোবাসা।

যুগের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে উৎসব পালনে। এই উৎসবের বড় একটি স্থান নিয়েছে সেলফি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সেলফিবাজীতে মত্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭/৮ জন শিক্ষার্থী। তাদের একজন ইনিয়াশা খান বলেন, এখন বন্ধুদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হলে থাকবে না এই উচ্ছ্বাস। থাকবে না প্রাণের বন্ধুত্ব। তাই স্মৃতির পাতায় ধরে রাখার এই আয়োজন।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর