বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ গোপালগঞ্জের লাল শাপলার বিলগুলো ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। এসব বিলে ফুটে থাকা অসংখ্য লাল শাপলা পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
বিলের পর বিল শুধু লাল আর লাল। এ যেন লালের সমারোহ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন লাল গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিটি বিল যেন প্রকৃতিকভাবে সৃষ্টি লাল সবুজের পতাকা।
প্রতিদিন এসব শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিলগুলোতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে এসব বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন অনেকেই। কিছুটা সময়ের জন্য হলেও এসব ভ্রমণপিপাসুরা প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যান। উপভোগ করেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দরয।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় অন্তত ২৫টি লাল শাপলার বিল রয়েছে। এর মধ্যে কান্দি, ছত্রকান্দা, জোয়ারিয়ার বিল উল্লেখযোগ্য। এছাড়া গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠি ও ডোমরাশুর বিলেও লাল শাপলার দেখা মিলবে। এসব বিলে বোরো মৌসুমেই শুধুমাত্র ধান চাষ করেন কৃষকেরা। এরপর জমিতে বর্ষার পানি এসে যায়। সেখানেই প্রতিবছর প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় লাল শাপলা। তবে অনেক বছর আগে এসব বিলের জমিতে সাদা-সবুজ শাপলা জন্ম নিলেও বিগত ১৯৮৮ সালের বন্যার পর থেকে শুরু হয় লাল শাপলা। বর্ষা থেকে শীতকাল পর্যন্ত বিলগুলোতে লাল শাপলা থাকে। এসব বিলগুলোতে আগত দর্শনার্থীদের নৌকায় ঘুরিয়ে বাড়তি আয় করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া এসব বিলের শাপলা ও মাছ বিক্রি করেও কেউ কেউ জীবিকা নির্বাহ করছেন।
কোটালীপাড়ার কান্দির লাল শাপলা বিলকে প্রশাসন কর্তৃক শাপলালয় ঘোষণা করে দর্শনার্থীদের উপভোগের জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিলের মধ্যে দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বিল ঘুরে দেখার জন্য নৌকার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া এখানে আসা দর্শনার্থীদের চাহিদা মাফিক বিভিন্ন ধরনের গ্রাম্য পিঠার আয়োজনও রয়েছে। অন্য বিলগুলোতেও ঘোরার জন্য নৌকার ব্যবস্থা আছে। সামান্য কিছু টাকা খরচ করলে যে কেউ এসব লাল শাপলার বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
ঢাকা থেকে লাল শাপলার বিল ঘুরতে আসা মো. আশরাফুল আলম, মো. আবুল খায়ের, মো. মশিউর রহমান ও মশিউর রহমান আকন্দ বলেন, শাপলার বিলের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে আমরা বিমোহিত। দেশের আনাচে-কানাচে এমন অনেক প্রাকৃতিক দৃশ্য ছড়িয়ে রয়েছে। এতো সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য সবার দেখা উচিত। এতে কিছু সময়ের জন্য হলেও প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়া যায়। মানসিক প্রশান্তির জন্য সবার উচিত এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা। তাতে মন ও শরীর উভয়ই ভাল থাকে।
স্থানীয় কান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ বলেন, কোটালীপাড়ার কান্দি ইউনিয়নের লাল শাপলা বিলকে শাপলালয় ঘোষণা করার পর থেকে এখানে আসা দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন। প্রতিদিনই এ লাল শাপলার বিল দেখার জন্য ভ্রমণপিপাসুরা এখানে আসেন।
আগত দর্শনার্থীদের কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এখানে আগত দর্শনার্থীদের গ্রামীণ পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। সারাদেশের ভ্রমণ পিপাসুদের এখানে এসে লাল শাপলার বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আহবান জানানো হচ্ছে। কোটালীপাড়া লাল পাশলার বিলগুলো যেন প্রকৃতির সৃষ্টি সবুজের মাঝে লাল মানচিত্র। এখানে ঘুরে গেলে যে কারো ভাল লাগবে।