দেশ-বিদেশের ৫ হাজার গরু খামারির উপস্থিতিতে দিনভর আনন্দ-উৎসবের মধ্যে দিয়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে ঢালী’স আম্বার নিবাসে ষষ্ঠ বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বিডিএফএ-চ্যানেল আই আন্তর্জাতিক খামারি উৎসব’। এই উৎসবে খামারিরা তাদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার মধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা খামারিরা এ মেলায় যোগ দেন। তাদের পরিবারের সদস্যরাও আসেন মেলা দেখতে। আসেন বিদেশি খামারিরাও। খামারিদের পদচারণায় ঢালী’স আম্বার নিবাস মুখরিত হয়ে উঠে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক এই উৎসব তৃণমূল গরু খামারিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
বিডিএফএ’র সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে উৎসবে পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশিদ, চ্যানেল আই’র বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদাসহ এ খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন।
খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) আয়োজনে বিডিএফএ-চ্যানেল আই আন্তর্জাতিক খামারি উৎসবের টাইটেল স্পন্সর ছিল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল বাংক এবং উপায়। সহযোগিতায় ছিল—এসিআই জেনেটিক, সাদেক অ্যাগ্রোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
৫ হাজার লোকের সকালের নাস্তা ও দুপুরে খাবারের ব্যবস্থা করা হয় উৎসবে। উৎসবে মৎস ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, আকিজ ডেইরি, ফার্ম ফ্রেস, ড্যানিশ মাল্টিপারপাস ফার্ম লিমিটেড, কৃষকবাড়ি, ড্রাগন অ্যাগ্রো, ইউনিক মেশিনারি টেকনোলজি, উপায়, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ, এসিআই, রুপাই সাইলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্টল দিয়ে তাদের পণ্য প্রদর্শন করে।
দিনব্যাপী এ উৎসবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, খেলাধুলা ও র্যাফেল ড্রসহ নানা আয়োজন ছিল। হেলিকপ্টার রাইডের ব্যবস্থাও ছিল সেখানে। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাতান সঙ্গীতশিল্পী জেমস।
দেশ-বিদেশের গরু খামারিদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্দেশ্যে ৬ বছর ধরে এ উৎসবের আয়োজন করছে ডেইরি ফরমার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বিডিএফএ সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের খামারিদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, ভেনিজুয়েলা, ভারত, থাইল্যান্ড, কানাডাসহ সাতটি দেশের প্রায় ৫ হাজার খামারি ও উদ্যোক্তা অংশ নেন আন্তর্জাতিক এই উৎসবে। এ মেলার মাধ্যমে খামারিরা একে অপরের সুখ-দুঃখ ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকেন। সরকারি সংস্থাসহ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে খামারিদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। খামারিদের নানা সমস্যার কথা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা জানতে পারেন। এসব সমস্যা সমাধান এবং খামারিদের সেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেন তারা।
আয়োজন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক খামারি উৎসবের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের খামারিদের সঙ্গে বাংলাদেশের খামারিদের যোগসূত্র সৃষ্টি হবে। উন্নত দেশের তথ্য-প্রযুক্তি ও খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জ্ঞানের আদান প্রদান হবে। এর মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ বিপণনে তৈরি হতে পারে ডিজিটাল প্ল্যাটফরম।