ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে তীব্র বিতর্ক: ১২তম দিনে গড়ালো কপ২৯ সম্মেলন ঢাকাবাসীকে যেকোনো উপায়ে নিরাপদ রাখতে হবে : ডিএমপি কমিশনার বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস ৫ আগস্টের পর ভুয়া মামলা তদন্তসাপেক্ষে প্রত্যাহার হবে, জানালেন নতুন আইজিপি আলেম সমাজের সাথে ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক রয়েছে বিএনপির: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির জুয়ার অ্যাপের প্রচারে নাম লেখালেন বুবলীও জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন, যা বললেন তোফায়েল আহমেদ সামনে অসম্ভব শক্তির অদৃশ্য দেয়াল অপেক্ষা করছে: তারেক রহমান বহু শাসক দেখেছি, পরিবর্তন দেখিনি : ফয়জুল করীম গ্যাসের জন্য আ.লীগ আমলে ২০ কোটি টাকা ঘুস দিয়েছি

ঈদ বাজার: ছুটির দিনে জমজমাট ভিড়

রমজান মাসের শুরুতে ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে অনেক বড় রাস্তা বা সংলগ্ন ফুটপাতে বসে ইফতারির বাজার। রমজানের মাঝামাঝি এসে এ চিত্র খানিকটা বদলে যায়। বিপণিবিতান ছাড়িয়েও প্রায় সর্বত্র বসে পড়ে পোশাকের বাজার। রোজার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পার হওয়ার পর এখন বাজারে, পথেঘাটে আসন্ন ঈদের আমেজ।

বড়, মাঝারি, ছোট শপিং মল আর নানা শ্রেণির সেকেলে মার্কেটের পাশাপাশি রাজধানীর ফুটপাতগুলোতে শোনা যাচ্ছে পোশাক বিক্রেতাদের হাঁকডাক। লেগে থাকছে ক্রেতাদের ভিড়। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভিড় দেখা গেছে ঈদ পোশাকের বাজারে।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক ও মৌচাকে গতকাল ছিল উপচে পড়া ভিড়।

পোশাক, জুতা, প্রসাধনী, গয়না, অন্দরসজ্জার সামগ্রীসহ সব ধরনের পণ্যের প্রতিই ক্রেতাদের আগ্রহ ছিল। তবে মূল ব্যস্ততা আর ভিড় ছিল পোশাকের দোকানেই। বড় বিপণিবিতানের মতো ভিড় ছিল ফুটপাত ও ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও। এতে সন্তুষ্টি দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।

তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা—এমন মন্তব্য করেছে ক্রেতারা।নিউ মার্কেটে এ প্রতিবেদকের কথা হয় মারজিয়া আক্তারের সঙ্গে। দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং স্বামীকে নিয়ে মতিঝিল থেকে এসেছেন তিনি। মারজিয়া বললেন, ভিড় এড়িয়ে স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে সকাল ১০টায় বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। সাড়ে ১২টা নাগাদ মোটামুটি কেনাকাটা গুছিয়ে এনেছেন।

প্রতিবছরই নিউ মার্কেট থেকে ঈদের পোশাক-আশাক কেনেন। মারজিয়া বলেন, ‘কাপড় চিনলে আর দামাদামি করতে পারলে এখানে কাপড় কিনেই মজা। বিক্রেতারা বেশি দাম চাইলেও ঠাণ্ডা মাথায় দামাদামি করি। সময় বেশি লাগে। কথাও বেশি খরচ করতে হয়, কিন্তু অনেক টাকা বেঁচে যায়।’

মারজিয়ার এই কথা এলাকার গাউছিয়া মার্কেট, ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেট, চাঁদনী চক মার্কেট, বদরুদ্দোজা মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপারমার্কেটসহ এ ধরনের অনেক বিপণিবিতানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সে কারণেই গড়পড়তা মধ্যবিত্তের ভিড়টা এসব জায়গায়ই বেশি।

বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে শুক্রবার সকাল থেকেই ব্যাপক ক্রেতা উপস্থিতি থাকলেও মূল ভিড় শুরু হয় জুমার নামাজের পর। পূর্ব দিকের প্রবেশপথ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই হাতের ডানে পড়ে আড়ংয়ের শোরুম। বিকেল ৩টা নাগাদ সেখানে দেখা যায় গায়ে গা লাগা ভিড়। নামকরা ব্র্যান্ডের পোশাকের দোকান, অনলাইনে কেনাকাটায় পরিচিত হয়ে ওঠা পোশাকের দোকানের আউটলেট ও অন্যান্য দোকানে এদিন ছিল ব্যাপক ভিড়। সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল পোশাক আর জুতার দোকানে। এখানে প্রসাধনী ও গৃহসজ্জার দোকানে সে তুলনায় কিছুটা কম ভিড় ছিল। বিকেল ৫টা নাগাদ দেখা যায় অনেক ক্রেতা কেনাকাটা করে ক্লান্ত হয়ে শপিং মলের এখানে ওখানে বসে পড়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই যে রোজা রেখেছিল তা হয়তো নিঃসন্দেহেই বলা যায়।

বসুন্ধরা শপিং মলের লেভেল ফোরে দেশী দশের কাছেই অন্যমেলার শোরুম। কথা হয় ফ্যাশন হাউসটির কর্ণধার মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার হিসেবে শপিং মলে ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি আনন্দদায়ক। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসছে তাই ক্রেতারা কেনাকাটা দ্রুত সেরে নিচ্ছেন।’

মাজহারুল ইসলাম জানালেন, তাঁরা আরো বেশি বিক্রি আশা করেছিলেন, কিন্তু মূল্যস্ফীতির কারণে বিক্রি তুলনামূলকভাবে কম। তাঁর মতে, পোশাকের দামে প্রভাব ফেলেছে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি। তার ওপর বাজারে খাদ্যপণ্য থেকে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম চড়া। তাই ব্যয় সংকোচন করছে অনেকে।

নারীদের সেলাইহীন পোশাকের দোকান চৈতীতে গতকাল ছিল সব পণ্যে ১৫ শতাংশ ছাড়। সেখানে কথা হয় ফারজানা ইসলামের সঙ্গে। তিনি কেনাকাটা করতে এসেছিলেন আফতাবনগর থেকে। ফারজানা বললেন, ‘ঈদের অর্ধেক আনন্দ কেনাকাটাতেই। ভিড় হলেও কিনতে ভালো লাগছে।’ তবে দুটি অভিযোগও করলেন তিনি। একটি সেই ‘বেশি দাম’ নিয়েই। দ্বিতীয়টি হচ্ছে পোশাকের দোকানগুলোতে স্বস্তিতে কাপড় দেখার জন্য বসার ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে তীব্র বিতর্ক: ১২তম দিনে গড়ালো কপ২৯ সম্মেলন

ঈদ বাজার: ছুটির দিনে জমজমাট ভিড়

আপডেট টাইম : ০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
রমজান মাসের শুরুতে ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে অনেক বড় রাস্তা বা সংলগ্ন ফুটপাতে বসে ইফতারির বাজার। রমজানের মাঝামাঝি এসে এ চিত্র খানিকটা বদলে যায়। বিপণিবিতান ছাড়িয়েও প্রায় সর্বত্র বসে পড়ে পোশাকের বাজার। রোজার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পার হওয়ার পর এখন বাজারে, পথেঘাটে আসন্ন ঈদের আমেজ।

বড়, মাঝারি, ছোট শপিং মল আর নানা শ্রেণির সেকেলে মার্কেটের পাশাপাশি রাজধানীর ফুটপাতগুলোতে শোনা যাচ্ছে পোশাক বিক্রেতাদের হাঁকডাক। লেগে থাকছে ক্রেতাদের ভিড়। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভিড় দেখা গেছে ঈদ পোশাকের বাজারে।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক ও মৌচাকে গতকাল ছিল উপচে পড়া ভিড়।

পোশাক, জুতা, প্রসাধনী, গয়না, অন্দরসজ্জার সামগ্রীসহ সব ধরনের পণ্যের প্রতিই ক্রেতাদের আগ্রহ ছিল। তবে মূল ব্যস্ততা আর ভিড় ছিল পোশাকের দোকানেই। বড় বিপণিবিতানের মতো ভিড় ছিল ফুটপাত ও ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও। এতে সন্তুষ্টি দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।

তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা—এমন মন্তব্য করেছে ক্রেতারা।নিউ মার্কেটে এ প্রতিবেদকের কথা হয় মারজিয়া আক্তারের সঙ্গে। দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং স্বামীকে নিয়ে মতিঝিল থেকে এসেছেন তিনি। মারজিয়া বললেন, ভিড় এড়িয়ে স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে সকাল ১০টায় বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। সাড়ে ১২টা নাগাদ মোটামুটি কেনাকাটা গুছিয়ে এনেছেন।

প্রতিবছরই নিউ মার্কেট থেকে ঈদের পোশাক-আশাক কেনেন। মারজিয়া বলেন, ‘কাপড় চিনলে আর দামাদামি করতে পারলে এখানে কাপড় কিনেই মজা। বিক্রেতারা বেশি দাম চাইলেও ঠাণ্ডা মাথায় দামাদামি করি। সময় বেশি লাগে। কথাও বেশি খরচ করতে হয়, কিন্তু অনেক টাকা বেঁচে যায়।’

মারজিয়ার এই কথা এলাকার গাউছিয়া মার্কেট, ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেট, চাঁদনী চক মার্কেট, বদরুদ্দোজা মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপারমার্কেটসহ এ ধরনের অনেক বিপণিবিতানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সে কারণেই গড়পড়তা মধ্যবিত্তের ভিড়টা এসব জায়গায়ই বেশি।

বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে শুক্রবার সকাল থেকেই ব্যাপক ক্রেতা উপস্থিতি থাকলেও মূল ভিড় শুরু হয় জুমার নামাজের পর। পূর্ব দিকের প্রবেশপথ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই হাতের ডানে পড়ে আড়ংয়ের শোরুম। বিকেল ৩টা নাগাদ সেখানে দেখা যায় গায়ে গা লাগা ভিড়। নামকরা ব্র্যান্ডের পোশাকের দোকান, অনলাইনে কেনাকাটায় পরিচিত হয়ে ওঠা পোশাকের দোকানের আউটলেট ও অন্যান্য দোকানে এদিন ছিল ব্যাপক ভিড়। সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল পোশাক আর জুতার দোকানে। এখানে প্রসাধনী ও গৃহসজ্জার দোকানে সে তুলনায় কিছুটা কম ভিড় ছিল। বিকেল ৫টা নাগাদ দেখা যায় অনেক ক্রেতা কেনাকাটা করে ক্লান্ত হয়ে শপিং মলের এখানে ওখানে বসে পড়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই যে রোজা রেখেছিল তা হয়তো নিঃসন্দেহেই বলা যায়।

বসুন্ধরা শপিং মলের লেভেল ফোরে দেশী দশের কাছেই অন্যমেলার শোরুম। কথা হয় ফ্যাশন হাউসটির কর্ণধার মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘শুক্রবার হিসেবে শপিং মলে ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি আনন্দদায়ক। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসছে তাই ক্রেতারা কেনাকাটা দ্রুত সেরে নিচ্ছেন।’

মাজহারুল ইসলাম জানালেন, তাঁরা আরো বেশি বিক্রি আশা করেছিলেন, কিন্তু মূল্যস্ফীতির কারণে বিক্রি তুলনামূলকভাবে কম। তাঁর মতে, পোশাকের দামে প্রভাব ফেলেছে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি। তার ওপর বাজারে খাদ্যপণ্য থেকে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম চড়া। তাই ব্যয় সংকোচন করছে অনেকে।

নারীদের সেলাইহীন পোশাকের দোকান চৈতীতে গতকাল ছিল সব পণ্যে ১৫ শতাংশ ছাড়। সেখানে কথা হয় ফারজানা ইসলামের সঙ্গে। তিনি কেনাকাটা করতে এসেছিলেন আফতাবনগর থেকে। ফারজানা বললেন, ‘ঈদের অর্ধেক আনন্দ কেনাকাটাতেই। ভিড় হলেও কিনতে ভালো লাগছে।’ তবে দুটি অভিযোগও করলেন তিনি। একটি সেই ‘বেশি দাম’ নিয়েই। দ্বিতীয়টি হচ্ছে পোশাকের দোকানগুলোতে স্বস্তিতে কাপড় দেখার জন্য বসার ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে।