ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্নীতির জঞ্জাল সাফ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দুর্নীতি দীর্ঘদিনের সমস্যা, এসব জঞ্জাল সাফ করতে হবে। হাত যখন দিয়েছি, ছাড়ব না। আপন-পর জানি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সই থাকবে।

গতকাল রবিবার বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চীন সফরের বিষয়ে তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শেখ হাসিনা। পরে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

সেখানে চীন সফর ছাড়াও দেশের চলমান নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে। বিভিন্ন সেক্টরের দুর্নীতি, কোটাবিরোধী আন্দোলন, শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে কেউ বিসিএস ক্যাডার হয়েছে প্রমাণ পেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

দুর্নীতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল সে, এখন নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক।

হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। বাস্তব কথা। কী করে বানাল এত টাকা? জানতে পেরেছি পরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে কেউ দুর্নীতির বিরুদ্ধে এভাবে অভিযান করেনি। এর আগে জঙ্গিবাদমুক্ত করেছি।

দুর্নীতি দীর্ঘদিনের সমস্যা। এসব জঞ্জাল সাফ করতে হবে। আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি বলেই জানতে পেরেছেন।’শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের ধরলেই সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, এটা বিশ্বাস করি না। আমার দায়িত্ব, অনিয়মগুলো ধরে দেশকে একটা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। দুর্নীতি নিচের দিকে বেশি হচ্ছে। দুর্নীতি এমন পর্যায়ে ছিল, কাজই করা যেত না। সেখান থেকে পরিস্থিতি তো বদলেছে। হাত যখন দিয়েছি, ছাড়ব না। আপন-পর জানি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সই থাকবে।’

রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নেই

কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারির বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ ও রায় প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মামলা করল, সেই মামলায় উচ্চ আদালত যদি কোনো রায় দেন, সেখানে আমাদের তো কিছু করার নেই। আদালতে রায় হয়েছে, রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নেই। সেটা তো সংবিধানও বলে না। পার্লামেন্টের কার্যপ্রণালীও বলে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত থেকে কোনো রায় না আসে, ততক্ষণ আমাদের কোনো কথা থাকে না। এটা বাস্তবতা, এই বাস্তবতা আমাদের মানতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন যারা আন্দোলন করছে, তারা আইন মানবে না, আদালত মানবে না, সংবিধান কী এটা তারা চেনে না। নির্বাহী কাজ করতে হলে, তার যে নীতিমালা বা তার যে ধারা থাকে, সরকার কিভাবে চলে, এই সম্পর্কে কোনো ধারণাই এদের নেই, কোনো জ্ঞানই নেই। হ্যাঁ, পড়াশোনা করছে, ভালো নম্বর পাচ্ছে, সেটা ঠিক, ভবিষ্যতে এরাও তো নেতৃত্ব দেবে, তো এই ধারণাগুলো দরকার। সংবিধান কী বলে, সেটা তাদের জানা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা (কোটার বিষয়) যখন আদালতে চলে গেল, আদালতে সেটার সমাধান হবে। আদালতে তো তাদের সুযোগ দিয়েছে—‘আপনারা আসেন, যুক্তি দেন’। তারা আদালতে যাক, বলুক। না, তারা রাজপথেই সমাধান করবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের সব এলাকা তো সমানভাবে উন্নত না, অনগ্রসর সম্প্রদায়ও আছে। সেসব এলাকার মানুষের কি কোনো অধিকার থাকবে না? সেই অধিকারের কথা চিন্তা করে প্রতিটি জেলা থেকে যেন চাকরি পায়, সেই চিন্তাটাও তো করতে হবে।’

আন্দোলনকারীদের রাজপথে কর্মসূচির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজপথে আন্দোলন করছে, করতেই থাকবে। তবে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারবে না। যতক্ষণ তারা শান্তিপূর্ণভাবে করে যাচ্ছে, কেউ কিছু বলছে না। কিন্তু এর বাইরেও যখন কিছু করবে, পুলিশের গায়ে হাত দেওয়া বা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা, এগুলো করতে গেলে তো আইন তার নিজের গতিতে চলবে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’

মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্র কিভাবে চলবে, সেটা তো আমাদের সংবিধানে দেওয়া আছে। যেখানে সংবিধানে আছে, অনগ্রসর যারা তাদের রাষ্ট্রের কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে হবে। তারা কি সংবিধানটা পড়ে দেখেছে কখনো? আর মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা (চাকরি) পাবে? মুক্তিযোদ্ধাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার, সংসার সব বাদ দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, খেয়ে না খেয়ে, কাদা মাটিতে, রোদ-বৃষ্টি-ঝড় সব উপেক্ষা করে যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় এনে দিয়েছিল বলে সবাই উচ্চপদে আসীন, আজকে বড় গলায় কথা বলতে পারছে। নইলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে মরতে হতো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলত না এবং ভিসা নিতে হলে করাচিতে যেতে হতো। সেখান থেকে ভিসা নিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ধরতে হতো। এই ছেলেমেয়েরা তো এটা দেখেনি। এখন তারা লাফাচ্ছে, এমনকি ১৫ বছর ২০ বছর আগের কথাও তারা জানে না। বাংলাদেশের অবস্থাটা কী ছিল? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি, সেশনজট। কোনো সেমিস্টার সিস্টেম ছিল না। গ্রেডিং পদ্ধতি ছিল না, বহু সাবজেক্ট ছিল না। বাংলাদেশ থেকে ডিগ্রি করে কেউ বিদেশে গেলে আবার গোড়া থেকে, সেই ইন্টারমিডিয়েট থেকে শুরু করতে হতো। স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়ে আবার শুরু করতে হতো।’

শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযোদ্ধারা কী অবস্থায়? ১৫ আগস্টের পর তারা বলতে পারেনি যে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা’। কারণ হাজার হাজার অফিসার সৈনিক মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান মেরে সাফ করে দিয়েছে। মনে হয়েছে পাকিস্তানের প্রদেশ হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশ ফিরে এসেছে। জয় বাংলা স্লোগান ফিরে এসেছে, ৭ মার্চের ভাষণ ফিরে এসেছে। এখন ভালো লাগে না? মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনলে, তাদের গায়ে জ্বর আসে?’

মুক্তিযোদ্ধার এক নাতি কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে একজন এখন সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তুই চলে আয়, তোর পড়াশোনার দরকার কী? মুক্তিযোদ্ধার নাতি হিসেবে কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এখন বলে, ‘কোটা লাগবে না’। তোকে তো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া উচিত, তোর পড়ালেখা দরকার নেই, বাড়ি গিয়ে বসে থাক। যদি লজ্জা থাকত, তাহলে ভর্তি বাদ দিয়ে তার পরে এসে আন্দোলন করত।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী যে বিচিত্র এই দেশ! বিচিত্র এক মানসিকতা! ছয় ঋতুর দেশ তো, ঋতুও বদলায়, মনমানসিকতাও বদলায়।’

কোটা ও মেধা বিতর্ক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসলে কোটার প্রার্থীদেরও প্রিলিমিনারি, রিটেন, ভাইভা হয়ে আসতে হয়। সেই সময় (চূড়ান্ত ফলে) মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হলে কোটা পাবে। আর সব সময় তো পূরণ হয় না। কোটা আর মেধা নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি করাটা একটা কৌশল। তার মানে কি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি-পুতিরা কেউ মেধাবী না? শুধু রাজাকারের বাচ্চারা, নাতি-পুতিরা মেধাবী? তাই না?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না, যাদের মেধাবী না বলছেন, তাদের হাতে কিন্তু ওরা পরাজিত। যুদ্ধে কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারাই জয়ী হয়েছিল, রাজাকাররা জয়ী হয় নাই। তারা পাকিস্তানিদের পদলেহন করেও পরাজিত হয়েছিল। এই কথাটা মনে রাখা উচিত তারা তো পরাজিত হয়েছিল। তাহলে তাদের মেধাটা কোথায়? তাদের মেধাটা কোথায়, সেটা আমার প্রশ্ন।’

কোটা না থাকায় মেয়েরা পিছিয়ে পড়েছে

২০১৮ সালে কোটা বাতিলের পরিপত্র জারির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৭-১৮ সালের কোটা আন্দোলন চলার সময় কিছু জ্ঞানীগুণী ঘরে বসে মিথ্যা অপপ্রচার রেকর্ড করে ছেড়ে দিত। এ ধরনের ঘটনা দেখে আমি খুবই বিরক্ত হয়ে যাই, তখন এক পর্যায়ে বলি, ঠিক আছে কোটা বাদই দিয়ে দিলাম।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে উদ্দেশ্যটা ছিল, আগে দেখ কোটা বাদ দিলে কী হয়। তো এখন কী অবস্থা হয়েছে? বেশিদূর যাওয়া লাগবে না, এবারই ফরেন সার্ভিসে মাত্র দুজন মেয়ে চান্স পেয়েছে। আর পুলিশ সার্ভিসে মাত্র চারজন মেয়ে চান্স পেয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘২০১৭ ও ১৮ সালের কোটা আন্দোলনে যে মেয়ে ‘নারী কোটা চাই না, মেধা দিয়ে চাকরি করব’ বলেছিল, সে কি চাকরি পেয়েছে, এমনকি বিসিএসে প্রিলিমিনারি পাস করেছে? এ ধরনের কথা যদি না বলত, তাহলে কোথাও না কোথাও একটা চাকরি তো পেত।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোটা তুলে দেওয়ার পর ২৩টি জেলার একটা লোকও পুলিশে চাকরি পায়নি। আর শুধু ৪২তম বিশেষ বিসিএসে ডাক্তার নিয়োগ ছাড়া বাকিগুলোতে মেয়েরা পিছিয়ে পড়েছে।’

চীন ২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ প্রদানে রাজি হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ ও বাণিজ্যিক—এই চার ধরনের আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। এই চারটি প্যাকেজের আওতায় চীন বাংলাদেশকে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানে সম্মত হয়েছে।’

চীন ও ভারত সফর নিয়ে সমালোচনাকারীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতে গেলাম দেশ বেচে এলাম, চীনে গেলাম খালি হাতে ফিরে এসেছি। তাঁরা এগুলো জেনে-বুঝে বলেন, নাকি আমাকে হেয় করতে বলেন, বুঝি না। এটা তাঁদের মানসিক অসুস্থতা।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, ‘চীন সফরে ২১টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সাতটি ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমি জানি না, এর পরও যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁরা জেনে-বুঝে করছেন কি না। সব সময় আমার বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথা, গুজব ছড়ায়। আমি গুরুত্ব দিই না। তাঁদের বলতে দিন।’

চীন সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অসুস্থ মেয়েকে রেখে চীন সফরে গিয়েছিলাম। অফিশিয়াল কাজ ১১ তারিখেই শেষ হয়ে যায়। বিকেলে আসার কথা ছিল, সকালে চলে এসেছি। ছয় ঘণ্টায় এত বড় তোলপাড় হবে বুঝিনি। অফিশিয়াল কাজ শেষ হয়ে গেলে আগেও সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে এসেছি। সেখানে বেড়ানোর, শপিং করার নেই। তাই আগেই চলে আসি। সেটাকে রংচং মাখিয়ে কথা বলছে।’

ট্রাম্পের ওপরে হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরে হামলার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি একজন প্রেসিডেনশিয়াল ক্যান্ডিডেট, তাঁর ওপর এ ধরনের হামলা করা, আমরা এটার নিন্দা জানাই অবশ্যই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমেরিকা তাদের গণতন্ত্র নিয়ে অনেক গর্ববোধ করে, অথচ সেখানে দেখা যাচ্ছে—আমরা তো গুলি-বোমা খেয়ে অভ্যস্ত, অনবরত খাচ্ছি, সেখানে একজন অপনেন্টকে এভাবে গুলি করা, তাও আবার সে সাবেক প্রেসিডেন্ট, সে খুব অল্পের জন্য বেঁচে গেছে, কিন্তু তার একেবারে কানের ওপর দিয়ে চলে গেছে, যদি একটু এদিক-ওদিক হতো, সে আর বাঁচত না। এটা আমেরিকার মতো জায়গায় হয় কিভাবে? আমেরিকার মতো সভ্য দেশে, যারা গণতন্ত্রের এত বড় প্রবক্তা, সে দেশে এই ঘটনা ঘটবে কেন? সেটাও তো আমাদের এক প্রশ্ন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা সরকারকে দায়ী করেনি, আর প্রেসিডেন্ট বাইডেনও এটাকে নিন্দা করছে যে এটা গ্রহণযোগ্য না, কাজেই এই এটুক সভ্যতা তার আছে। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের দেশে যে দোষারূপ করার চেষ্টা, তাদের এখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। তবে এই ঘটনাটা সত্যি খুব দুঃখজনক। একমাত্র প্রেসিডেনশিয়াল ক্যান্ডিডেট, তাকে এভাবে হামলা করা বা ইয়ে করা, তারা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

দুর্নীতির জঞ্জাল সাফ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দুর্নীতি দীর্ঘদিনের সমস্যা, এসব জঞ্জাল সাফ করতে হবে। হাত যখন দিয়েছি, ছাড়ব না। আপন-পর জানি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সই থাকবে।

গতকাল রবিবার বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চীন সফরের বিষয়ে তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শেখ হাসিনা। পরে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

সেখানে চীন সফর ছাড়াও দেশের চলমান নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে। বিভিন্ন সেক্টরের দুর্নীতি, কোটাবিরোধী আন্দোলন, শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে কেউ বিসিএস ক্যাডার হয়েছে প্রমাণ পেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

দুর্নীতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল সে, এখন নাকি ৪০০ কোটি টাকার মালিক।

হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। বাস্তব কথা। কী করে বানাল এত টাকা? জানতে পেরেছি পরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে কেউ দুর্নীতির বিরুদ্ধে এভাবে অভিযান করেনি। এর আগে জঙ্গিবাদমুক্ত করেছি।

দুর্নীতি দীর্ঘদিনের সমস্যা। এসব জঞ্জাল সাফ করতে হবে। আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি বলেই জানতে পেরেছেন।’শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের ধরলেই সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, এটা বিশ্বাস করি না। আমার দায়িত্ব, অনিয়মগুলো ধরে দেশকে একটা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। দুর্নীতি নিচের দিকে বেশি হচ্ছে। দুর্নীতি এমন পর্যায়ে ছিল, কাজই করা যেত না। সেখান থেকে পরিস্থিতি তো বদলেছে। হাত যখন দিয়েছি, ছাড়ব না। আপন-পর জানি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সই থাকবে।’

রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নেই

কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারির বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ ও রায় প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মামলা করল, সেই মামলায় উচ্চ আদালত যদি কোনো রায় দেন, সেখানে আমাদের তো কিছু করার নেই। আদালতে রায় হয়েছে, রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো অধিকার নেই। সেটা তো সংবিধানও বলে না। পার্লামেন্টের কার্যপ্রণালীও বলে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত থেকে কোনো রায় না আসে, ততক্ষণ আমাদের কোনো কথা থাকে না। এটা বাস্তবতা, এই বাস্তবতা আমাদের মানতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন যারা আন্দোলন করছে, তারা আইন মানবে না, আদালত মানবে না, সংবিধান কী এটা তারা চেনে না। নির্বাহী কাজ করতে হলে, তার যে নীতিমালা বা তার যে ধারা থাকে, সরকার কিভাবে চলে, এই সম্পর্কে কোনো ধারণাই এদের নেই, কোনো জ্ঞানই নেই। হ্যাঁ, পড়াশোনা করছে, ভালো নম্বর পাচ্ছে, সেটা ঠিক, ভবিষ্যতে এরাও তো নেতৃত্ব দেবে, তো এই ধারণাগুলো দরকার। সংবিধান কী বলে, সেটা তাদের জানা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা (কোটার বিষয়) যখন আদালতে চলে গেল, আদালতে সেটার সমাধান হবে। আদালতে তো তাদের সুযোগ দিয়েছে—‘আপনারা আসেন, যুক্তি দেন’। তারা আদালতে যাক, বলুক। না, তারা রাজপথেই সমাধান করবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের সব এলাকা তো সমানভাবে উন্নত না, অনগ্রসর সম্প্রদায়ও আছে। সেসব এলাকার মানুষের কি কোনো অধিকার থাকবে না? সেই অধিকারের কথা চিন্তা করে প্রতিটি জেলা থেকে যেন চাকরি পায়, সেই চিন্তাটাও তো করতে হবে।’

আন্দোলনকারীদের রাজপথে কর্মসূচির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজপথে আন্দোলন করছে, করতেই থাকবে। তবে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারবে না। যতক্ষণ তারা শান্তিপূর্ণভাবে করে যাচ্ছে, কেউ কিছু বলছে না। কিন্তু এর বাইরেও যখন কিছু করবে, পুলিশের গায়ে হাত দেওয়া বা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা, এগুলো করতে গেলে তো আইন তার নিজের গতিতে চলবে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’

মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্র কিভাবে চলবে, সেটা তো আমাদের সংবিধানে দেওয়া আছে। যেখানে সংবিধানে আছে, অনগ্রসর যারা তাদের রাষ্ট্রের কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে হবে। তারা কি সংবিধানটা পড়ে দেখেছে কখনো? আর মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার কে দিয়েছে?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা (চাকরি) পাবে? মুক্তিযোদ্ধাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার, সংসার সব বাদ দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, খেয়ে না খেয়ে, কাদা মাটিতে, রোদ-বৃষ্টি-ঝড় সব উপেক্ষা করে যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় এনে দিয়েছিল বলে সবাই উচ্চপদে আসীন, আজকে বড় গলায় কথা বলতে পারছে। নইলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে মরতে হতো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলত না এবং ভিসা নিতে হলে করাচিতে যেতে হতো। সেখান থেকে ভিসা নিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ধরতে হতো। এই ছেলেমেয়েরা তো এটা দেখেনি। এখন তারা লাফাচ্ছে, এমনকি ১৫ বছর ২০ বছর আগের কথাও তারা জানে না। বাংলাদেশের অবস্থাটা কী ছিল? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি, সেশনজট। কোনো সেমিস্টার সিস্টেম ছিল না। গ্রেডিং পদ্ধতি ছিল না, বহু সাবজেক্ট ছিল না। বাংলাদেশ থেকে ডিগ্রি করে কেউ বিদেশে গেলে আবার গোড়া থেকে, সেই ইন্টারমিডিয়েট থেকে শুরু করতে হতো। স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়ে আবার শুরু করতে হতো।’

শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযোদ্ধারা কী অবস্থায়? ১৫ আগস্টের পর তারা বলতে পারেনি যে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা’। কারণ হাজার হাজার অফিসার সৈনিক মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান মেরে সাফ করে দিয়েছে। মনে হয়েছে পাকিস্তানের প্রদেশ হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশ ফিরে এসেছে। জয় বাংলা স্লোগান ফিরে এসেছে, ৭ মার্চের ভাষণ ফিরে এসেছে। এখন ভালো লাগে না? মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনলে, তাদের গায়ে জ্বর আসে?’

মুক্তিযোদ্ধার এক নাতি কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে একজন এখন সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তুই চলে আয়, তোর পড়াশোনার দরকার কী? মুক্তিযোদ্ধার নাতি হিসেবে কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এখন বলে, ‘কোটা লাগবে না’। তোকে তো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া উচিত, তোর পড়ালেখা দরকার নেই, বাড়ি গিয়ে বসে থাক। যদি লজ্জা থাকত, তাহলে ভর্তি বাদ দিয়ে তার পরে এসে আন্দোলন করত।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী যে বিচিত্র এই দেশ! বিচিত্র এক মানসিকতা! ছয় ঋতুর দেশ তো, ঋতুও বদলায়, মনমানসিকতাও বদলায়।’

কোটা ও মেধা বিতর্ক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসলে কোটার প্রার্থীদেরও প্রিলিমিনারি, রিটেন, ভাইভা হয়ে আসতে হয়। সেই সময় (চূড়ান্ত ফলে) মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হলে কোটা পাবে। আর সব সময় তো পূরণ হয় না। কোটা আর মেধা নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি করাটা একটা কৌশল। তার মানে কি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি-পুতিরা কেউ মেধাবী না? শুধু রাজাকারের বাচ্চারা, নাতি-পুতিরা মেধাবী? তাই না?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না, যাদের মেধাবী না বলছেন, তাদের হাতে কিন্তু ওরা পরাজিত। যুদ্ধে কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারাই জয়ী হয়েছিল, রাজাকাররা জয়ী হয় নাই। তারা পাকিস্তানিদের পদলেহন করেও পরাজিত হয়েছিল। এই কথাটা মনে রাখা উচিত তারা তো পরাজিত হয়েছিল। তাহলে তাদের মেধাটা কোথায়? তাদের মেধাটা কোথায়, সেটা আমার প্রশ্ন।’

কোটা না থাকায় মেয়েরা পিছিয়ে পড়েছে

২০১৮ সালে কোটা বাতিলের পরিপত্র জারির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৭-১৮ সালের কোটা আন্দোলন চলার সময় কিছু জ্ঞানীগুণী ঘরে বসে মিথ্যা অপপ্রচার রেকর্ড করে ছেড়ে দিত। এ ধরনের ঘটনা দেখে আমি খুবই বিরক্ত হয়ে যাই, তখন এক পর্যায়ে বলি, ঠিক আছে কোটা বাদই দিয়ে দিলাম।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে উদ্দেশ্যটা ছিল, আগে দেখ কোটা বাদ দিলে কী হয়। তো এখন কী অবস্থা হয়েছে? বেশিদূর যাওয়া লাগবে না, এবারই ফরেন সার্ভিসে মাত্র দুজন মেয়ে চান্স পেয়েছে। আর পুলিশ সার্ভিসে মাত্র চারজন মেয়ে চান্স পেয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘২০১৭ ও ১৮ সালের কোটা আন্দোলনে যে মেয়ে ‘নারী কোটা চাই না, মেধা দিয়ে চাকরি করব’ বলেছিল, সে কি চাকরি পেয়েছে, এমনকি বিসিএসে প্রিলিমিনারি পাস করেছে? এ ধরনের কথা যদি না বলত, তাহলে কোথাও না কোথাও একটা চাকরি তো পেত।”

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোটা তুলে দেওয়ার পর ২৩টি জেলার একটা লোকও পুলিশে চাকরি পায়নি। আর শুধু ৪২তম বিশেষ বিসিএসে ডাক্তার নিয়োগ ছাড়া বাকিগুলোতে মেয়েরা পিছিয়ে পড়েছে।’

চীন ২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ প্রদানে রাজি হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ ও বাণিজ্যিক—এই চার ধরনের আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। এই চারটি প্যাকেজের আওতায় চীন বাংলাদেশকে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানে সম্মত হয়েছে।’

চীন ও ভারত সফর নিয়ে সমালোচনাকারীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতে গেলাম দেশ বেচে এলাম, চীনে গেলাম খালি হাতে ফিরে এসেছি। তাঁরা এগুলো জেনে-বুঝে বলেন, নাকি আমাকে হেয় করতে বলেন, বুঝি না। এটা তাঁদের মানসিক অসুস্থতা।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, ‘চীন সফরে ২১টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সাতটি ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমি জানি না, এর পরও যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁরা জেনে-বুঝে করছেন কি না। সব সময় আমার বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথা, গুজব ছড়ায়। আমি গুরুত্ব দিই না। তাঁদের বলতে দিন।’

চীন সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অসুস্থ মেয়েকে রেখে চীন সফরে গিয়েছিলাম। অফিশিয়াল কাজ ১১ তারিখেই শেষ হয়ে যায়। বিকেলে আসার কথা ছিল, সকালে চলে এসেছি। ছয় ঘণ্টায় এত বড় তোলপাড় হবে বুঝিনি। অফিশিয়াল কাজ শেষ হয়ে গেলে আগেও সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে এসেছি। সেখানে বেড়ানোর, শপিং করার নেই। তাই আগেই চলে আসি। সেটাকে রংচং মাখিয়ে কথা বলছে।’

ট্রাম্পের ওপরে হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরে হামলার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি একজন প্রেসিডেনশিয়াল ক্যান্ডিডেট, তাঁর ওপর এ ধরনের হামলা করা, আমরা এটার নিন্দা জানাই অবশ্যই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমেরিকা তাদের গণতন্ত্র নিয়ে অনেক গর্ববোধ করে, অথচ সেখানে দেখা যাচ্ছে—আমরা তো গুলি-বোমা খেয়ে অভ্যস্ত, অনবরত খাচ্ছি, সেখানে একজন অপনেন্টকে এভাবে গুলি করা, তাও আবার সে সাবেক প্রেসিডেন্ট, সে খুব অল্পের জন্য বেঁচে গেছে, কিন্তু তার একেবারে কানের ওপর দিয়ে চলে গেছে, যদি একটু এদিক-ওদিক হতো, সে আর বাঁচত না। এটা আমেরিকার মতো জায়গায় হয় কিভাবে? আমেরিকার মতো সভ্য দেশে, যারা গণতন্ত্রের এত বড় প্রবক্তা, সে দেশে এই ঘটনা ঘটবে কেন? সেটাও তো আমাদের এক প্রশ্ন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা সরকারকে দায়ী করেনি, আর প্রেসিডেন্ট বাইডেনও এটাকে নিন্দা করছে যে এটা গ্রহণযোগ্য না, কাজেই এই এটুক সভ্যতা তার আছে। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের দেশে যে দোষারূপ করার চেষ্টা, তাদের এখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। তবে এই ঘটনাটা সত্যি খুব দুঃখজনক। একমাত্র প্রেসিডেনশিয়াল ক্যান্ডিডেট, তাকে এভাবে হামলা করা বা ইয়ে করা, তারা এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।’