বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের দ্বারা ভাঙচুর হওয়া মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশনটি অক্টোবরের মধ্যে চালু হতে পারে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
ডিএমটিসিএল সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মিরপুর-১০ স্টেশনটি সম্প্রতি চালু হওয়া কাজীপাড়া স্টেশন থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টিভিএম, প্যাসেঞ্জর গেট, কন্ট্রোল রুম, ডিসপ্লে, ক্যামেরাসহ প্রায় সব ধরনের যন্ত্রপাতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেট্রোরেলের স্টেশনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলো প্রোপ্রাইটর আইটেম। এসব উপকরণ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সিস্টেম ও ডিজাইন করা হওয়ায় অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওয়া যায় না। তাই যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনা করে এখন যেসব স্টেশনে তুলনামূলক কম যাত্রীর চাপ রয়েছে, সেসব স্টেশন থেকে কিছু যন্ত্রপাতি এনে সমন্বয় করে মিরপুর-১০ স্টেশন চালু করা হবে।
জানা যায়, মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশনে যাত্রী চাহিদা অনেক। প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে এই স্টেশন থেকে। এই স্টেশন বন্ধ থাকায় আয়ও কমে গেছে ডিএমটিসিএলের। এসব কারণে দ্রুতই মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশনটি চালুর চেষ্টা করছে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি।
ডিএমটিসিএলের সূত্র বলছে, চলতি অক্টোবর থেকে মিরপুর-১০ স্টেশনটি চালু হতে পারে। স্টেশনটি চালু করতে খরচও হবে খুব কম।
উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ এই তিন স্টেশন থেকে গেটসহ কিছু যন্ত্রাংশ এনে মিরপুর-১০ স্টেশনে লাগানো হবে। এ ছাড়া ট্রেনিং সেন্টার থেকেই আপাতত কিছু যন্ত্রাংশ আনা হবে। যেসব যন্ত্রাংশ স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা করে ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনে ব্যবহার করা যাবে, সেগুলোও কেনা হচ্ছে।
ডিএমটিসিএল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব উপকরণ ধার করার কারণে এখন মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশনটি চালু করার জন্য খরচ কম হলেও এটা প্রকৃত খরচ নয়। কারণ যেসব জায়গা থেকে উপকরণ এনে এই স্টেশনটি চালু করা হবে, সেসব জায়গায় পরবর্তীতে যন্ত্রগুলো লাগাতে হবে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে সেগুলো নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানি করার প্রয়োজন পড়বে। তখন প্রকৃত খরচ বলা যাবে। এখন ব্যয়ের কৃচ্ছ্রসাধণ করে ন্যূনতম খরচে স্টেশনটি চালু করতে চায় ডিএমটিসিএল।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়ক উপদেষ্টার নির্দেশনা রয়েছে মিরপুর-১০ স্টেশনটি দ্রুত চালুর। এখন স্টেশনের কাজ চলছে, দ্রুতই চালু করে দেওয়া হবে। যাতে যাত্রীরা অল্প সময়ের মধ্যে এটি ব্যবহার করতে পারেন। এই স্টেশনটিও কম খরচে চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষের ঘটনায় কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে গত ১৮ই জুলাই থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় মেট্রোরেল। তবে গত ২৫ আগস্ট ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন বাদে চালু করা হয় মেট্রোরেল। এরপর গত ২০ সেপ্টেম্বর কাজীপাড়া স্টেশন চালু করা হয়। তবে এই স্টেশনটি চালু করতে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে এখন মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশনটি বন্ধ রয়েছে।