ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেতাকর্মীদের রেখে স্বার্থপরের মত পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা: রিজভী

নেতাকর্মী, সঙ্গী-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মত শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, কয়েকদিন আগে তারা (আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা) নূর হোসেন দিবসে ঢাকা শহর নাকি উথাল-পাথাল করে দিবে বলে হুমকি দিয়েছিল। ঐদিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কয়েকটি মিছিল করেছে ওদের মতো তো মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারা দেয়নি, তারপরও তো ওদের কোথাও দেখা যায়নি। কই যুবলীগ? কই ছাত্রলীগ? কারণ শেখ হাসিনা তাদেরকে লুটপাটের জন্য তৈরি করেছিলেন। ফরিদপুরের ছাত্রলীগের নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদেরকে বলেছিলেন তোরা যত পারোস লুটপাট কর কিন্তু বিএনপিকে বের হতে দিবি না, বের হলেই হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়বি। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। তার পরিণাম হয় ভয়াবহ তাই হয়েছে। সঙ্গী-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মত পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় জুলাই গণআন্দোলনে চক্ষু হারানো, চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নি¤œবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা আপনার মত একজন রক্ত পিপাসু, নরঘাতক, এক নায়কের আর এই দেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের কোন সুযোগ নেই। আপনি শিশুদের রক্ত পান করা একজন রক্ত পিপাসু নারী। আপনি যে পাপ করেছেন, যে হত্যালীলা চালিয়েছেন এর জন্য হয় আল্লাহর কাছে মাফ চান, না হলে শয়তানের মত চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত হয়ে থাকবেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব জিম্মি করে দিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে। এখন জনগণের একটাই দাবি শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছে সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রকাশ করুন। তিনি দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাই।

রিজভী বলেন, ভারতের আদানি কোম্পানির সাথে বিদ্যুতের একটি অসম চুক্তি করেছে হাসিনা, তিনি আদানির সাথে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তাকে যদি কখনো পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সাথে কোন চুক্তি করেননি। না হলে আদানি কেন হুমকি দিবে?

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার কোন দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত প্রেম। ঐ একটা-ই প্রেম ছিল শেখ হাসিনার। কারন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। সুতরাং তার প্রেম কার সাথে ছিল এইটা জনগণ জানতো এবং বুঝতো।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনাদেরকে তো সমস্ত গণতান্ত্রিক দল, ছাত্র, সংগঠন সমর্থন দিয়েছে কিন্তু আমরা এখনো দেখতে পাই স্বাস্থ্য বিভাগে যারা অন্যায় করেছেন দীর্ঘদিন শুধুমাত্র এটা একটা টেকনিক্যাল খাত এখানে ডাক্তার যিনি হবেন তার যোগ্যতা দিয়ে হবেন তিনি ভালো ডাক্তার কিনা তিনি উন্নতমানের চিকিৎসক কিনা সেটা আওয়ামী লীগ বিবেচনা করেননি। এর আগে বিএনপি করতো কোন ডাক্তারের বাবা, চাচা, মামা, শ্বশুর তাদের কোন পদোন্নতি হয়নি, এখনো তাদের কোথাও পদায়নও করা হয়নি। আওয়ামী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপের চিকিৎসকদেরকে বুধবারও ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করা হয়েছে। এগুলো যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার না দেখে, তাহলে বিপদ তো শুধু আমাদের না, তাদেরও হবে। কোন ফাঁক দিয়ে যদি ওই দানবরা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে তাহলে তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য শুভ হবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যে মার্কেটগুলো, বাজারগুলো এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে আপনারা কি তাদের একজন লোককে ধরেছেন? একটা লোককে গ্রেফতার করেছেন? অথচ আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন তারপরও তো পেঁয়াজ, আলু, চিনি, আটা, সোয়াবিনের দাম কমে না। কারণ সিন্ডিকেটবাজদেরকে আপনারা গ্রেফতার করতে পারেননি। এই বিষয়গুলি আপনারা যদি না দেখেন পরাজিত ফ্যাসিস্টরা তারা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝে মাঝেই আওয়াজ দিবে ভূত পেতœীর মত আওয়াজ দিচ্ছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, বিএনপির ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

নেতাকর্মীদের রেখে স্বার্থপরের মত পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা: রিজভী

আপডেট টাইম : ০৫:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

নেতাকর্মী, সঙ্গী-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মত শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, কয়েকদিন আগে তারা (আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা) নূর হোসেন দিবসে ঢাকা শহর নাকি উথাল-পাথাল করে দিবে বলে হুমকি দিয়েছিল। ঐদিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কয়েকটি মিছিল করেছে ওদের মতো তো মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারা দেয়নি, তারপরও তো ওদের কোথাও দেখা যায়নি। কই যুবলীগ? কই ছাত্রলীগ? কারণ শেখ হাসিনা তাদেরকে লুটপাটের জন্য তৈরি করেছিলেন। ফরিদপুরের ছাত্রলীগের নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদেরকে বলেছিলেন তোরা যত পারোস লুটপাট কর কিন্তু বিএনপিকে বের হতে দিবি না, বের হলেই হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়বি। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। তার পরিণাম হয় ভয়াবহ তাই হয়েছে। সঙ্গী-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মত পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় জুলাই গণআন্দোলনে চক্ষু হারানো, চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নি¤œবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা আপনার মত একজন রক্ত পিপাসু, নরঘাতক, এক নায়কের আর এই দেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের কোন সুযোগ নেই। আপনি শিশুদের রক্ত পান করা একজন রক্ত পিপাসু নারী। আপনি যে পাপ করেছেন, যে হত্যালীলা চালিয়েছেন এর জন্য হয় আল্লাহর কাছে মাফ চান, না হলে শয়তানের মত চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত হয়ে থাকবেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব জিম্মি করে দিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে। এখন জনগণের একটাই দাবি শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছে সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রকাশ করুন। তিনি দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাই।

রিজভী বলেন, ভারতের আদানি কোম্পানির সাথে বিদ্যুতের একটি অসম চুক্তি করেছে হাসিনা, তিনি আদানির সাথে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তাকে যদি কখনো পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সাথে কোন চুক্তি করেননি। না হলে আদানি কেন হুমকি দিবে?

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার কোন দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত প্রেম। ঐ একটা-ই প্রেম ছিল শেখ হাসিনার। কারন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। সুতরাং তার প্রেম কার সাথে ছিল এইটা জনগণ জানতো এবং বুঝতো।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনাদেরকে তো সমস্ত গণতান্ত্রিক দল, ছাত্র, সংগঠন সমর্থন দিয়েছে কিন্তু আমরা এখনো দেখতে পাই স্বাস্থ্য বিভাগে যারা অন্যায় করেছেন দীর্ঘদিন শুধুমাত্র এটা একটা টেকনিক্যাল খাত এখানে ডাক্তার যিনি হবেন তার যোগ্যতা দিয়ে হবেন তিনি ভালো ডাক্তার কিনা তিনি উন্নতমানের চিকিৎসক কিনা সেটা আওয়ামী লীগ বিবেচনা করেননি। এর আগে বিএনপি করতো কোন ডাক্তারের বাবা, চাচা, মামা, শ্বশুর তাদের কোন পদোন্নতি হয়নি, এখনো তাদের কোথাও পদায়নও করা হয়নি। আওয়ামী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপের চিকিৎসকদেরকে বুধবারও ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করা হয়েছে। এগুলো যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার না দেখে, তাহলে বিপদ তো শুধু আমাদের না, তাদেরও হবে। কোন ফাঁক দিয়ে যদি ওই দানবরা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে তাহলে তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য শুভ হবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যে মার্কেটগুলো, বাজারগুলো এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে আপনারা কি তাদের একজন লোককে ধরেছেন? একটা লোককে গ্রেফতার করেছেন? অথচ আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন তারপরও তো পেঁয়াজ, আলু, চিনি, আটা, সোয়াবিনের দাম কমে না। কারণ সিন্ডিকেটবাজদেরকে আপনারা গ্রেফতার করতে পারেননি। এই বিষয়গুলি আপনারা যদি না দেখেন পরাজিত ফ্যাসিস্টরা তারা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝে মাঝেই আওয়াজ দিবে ভূত পেতœীর মত আওয়াজ দিচ্ছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, বিএনপির ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।