ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

তাপসের একরোখা সিদ্ধান্ত ভুগছেন দক্ষিণ ঢাকাবাসী

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের একরোখা সিদ্ধান্তের খেসারত দিচ্ছেন ৮০ হাজার নাগরিক। দেশের ১১টি সিটি করপোরেশন, সকল পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন সনদ দেয় সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। ডিএসসিসি দেয় নিজস্ব সার্ভারের মাধ্যমে। ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি থেকে নেওয়া জন্মসনদ দিয়ে পাসপোর্ট করা যাচ্ছে না। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতেও কাজ দিচ্ছে না দক্ষিণের সনদ। ফলে দক্ষিণের প্রায় ৮০ হাজার নাগরিক এই সনদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।

শুরু থেকেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয় ডিএসসিসির এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছিল। সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এ ব্যাপারে একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েও সমাধান করতে পারেননি। তাপস তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ঢাকা দক্ষিণের জন্ম ও মৃত্যুসনদ সংক্রান্ত কার্যক্রমের সব অর্থ ডিএসসিসির তহবিলে জমা দিতে হবে। এতে বাগড়া দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ যেভাবে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা দেয় সেভাবেই করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু নারাজ ছিলেন তাপস। এ জন্য ঢাকা দক্ষিণে তিন মাস জন্ম ও মৃত্যুসনদ রেজিস্ট্রেশন এবং বিতরণ বন্ধ ছিল। পরে নিজস্ব সার্ভার তৈরি করে ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর থেকে সনদ বিতরণ শুরু করে দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি থেকে বাচ্চার জন্মসনদ নিয়ে চরম সমস্যার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরেছেন শারমিন সুলতানা রত্না নামে একজন। তিনি সমস্যার কথা বর্ণনা করে লিখেছেন, ‘একটা সমস্যায় পড়েছি, বলতে পারেন অবহেলা করে সমস্যাটা তৈরি করেছি। বকাবকি না করে সমাধান দিন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে বাচ্চার জন্মনিবন্ধন করিয়েছি, যা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিচ্ছে না। বাচ্চাকে প্রি-ওয়ানে ভর্তির আবেদন করতে হবে। এখন কাউন্সিলররা না থাকায় নতুন করে আবেদনও করতে পারছি না।’

রত্না একা নন, এ রকম প্রায় ৮০ হাজার সনদ নিয়ে বিপদে পড়েছেন দক্ষিণের বাসিন্দারা। অনেকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ফেরত এসেছেন। তাপসের একরোখা সিদ্ধান্তে ভুগতে হচ্ছে তাদের।

দক্ষিণ সিটির তথ্যানুযায়ী ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর থেকে এ বছর গত ১৫ আগস্ট পর্যন্ত তারা নিজস্ব সার্ভারের মাধ্যমে ৭৮ হাজার ৯৫৬টি জন্মসনদ এবং ১ হাজার ৪৭১টি মৃত্যুসনদ প্রদান করেছে।

দক্ষিণ সিটির সনদ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়া নাগরিকদের বিষয়ে জানতে চাইলে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. যাহিদ হোসেন বলেন, নাগরিকদের দোষ নেই। তারা (ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ) বেআইনিভাবে কাজটা করেছিল। আমরা তাদের বার বার বলেছি- তোমরা এটা বন্ধ কর। তখন করেনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর অটোমেটিক্যালি তারা এসে পড়েছে। যে সকল নাগরিক দক্ষিণ সিটির সার্ভারে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন, আমরা সেই ডাটাগুলো ট্রান্সফার করব। কিন্তু দুটি ডাটার ফরমেট ভিন্ন। এ জন্য আমাদের টেকনিক্যাল টিম কাজ করছে। দক্ষিণের ডাটাকে জাতীয় সার্ভারে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ তাদের তথ্যগুলো আমাদের মূল সার্ভারে নেই। এটা করতে গেলে নিবন্ধন নম্বর পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। সেটা আবার গ্রাহককে জানাতে হবে। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তবে আমরা

চেষ্টা করছি। এমন কিছু করা যাবে না যেন তারা আবার ভোগান্তিতে পড়েন।

সরকার পরিবর্তনের পর গত ১৫ আগস্ট থেকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নাগরিকরাও জাতীয় সার্ভারের মাধ্যমে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন করছেন। তখন থেকে যারা নিয়েছেন তাদের সমস্যা হচ্ছে না। জাতীয় সার্ভারে নতুন করে যুক্ত হওয়ার পর ১৫ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত দক্ষিণ সিটির প্রায় ২৩ হাজার জন্মনিবন্ধন হয়েছে বলে জানা গেছে।

ডিএসসিসিতে মোট ৭৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ওয়ার্ডের বাসিন্দার মধ্যে যারা ডিএসসিসির সার্ভার থেকে জন্ম ও মৃত্যুসনদ নিয়েছেন তারা তা কাজে লাগাতে পারছেন না।

জানা গেছে, স্বতন্ত্র সার্ভারের মাধ্যমে নিবন্ধন সেবা চালু করার পর ১৫ আগস্ট থেকে আবার জাতীয় সার্ভারের মাধ্যমে কাজ চলছে। ডিএসসিসি তাদের যঃঃঢ়ং://নফৎরং.ফংপপ.মড়া.নফ এই সার্ভারের মাধ্যমে নিবন্ধন করত। অন্যদিকে সারাদেশে যে সার্ভারে নিবন্ধন হয়, সেটা হচ্ছে যঃঃঢ়ং://নফৎরং.মড়া.নফ।

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের ফি পরিশোধে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু হয় গত এপ্রিল মাসে। পরে পর্যায়ক্রমে ই-পেমেন্ট বা অনলাইনে ফি পরিশোধ সারাদেশে চালু করে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়। তবে এই ব্যবস্থা চালুর পর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা সরাসরি চলে যাওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজ বন্ধ রাখে ডিএসসিসি। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দাবি, এ খাতে ফি বাবদ আয় সিটি করপোরেশনের তফসিলভুক্ত আয় হিসেবে আলাদা কোডের মাধ্যমে নিজস্ব তহবিলে জমা হতে হবে অথবা তাদের যা ব্যয় হয় তার পুরোটা সরকারকে দিতে হবে। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনে তাদের বছরে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়। ফির টাকা তাদের তহবিলে জমা না হলে বছরে এই পরিমাণ টাকা প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে সরকারের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দক্ষিণ সিটির এক কর্মকর্তা জানান, জাতীয় সার্ভারে বিভিন্ন সময় ‘সার্ভার ডাউন’ বলে নাগরিকদের হয়রানি করা হতো। তাছাড়া সকল কাজ সিটি করপোরেশন করলেও অর্থ যেত সরকারি কোষাগারে। যেহেতু সিটি করপোরেশনের জনবল, কাগজ, কালি খরচ হয় তাই অর্থ তাদেরই পাওয়া উচিত। এ চিন্তা থেকেই মেয়র এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শুরু থেকেই ঝামেলা হচ্ছিল। এ জন্য সাবেক মেয়র পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথেও কথা বলেছিলেন। তিনি থাকলে হয়তো সমাধান করতে পারতেন।

কিন্তু তাপস ও সরকারি অন্য দপ্তরের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের মাঝে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ নাগরিকরা। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, আমরা জাতীয় সার্ভারের সাথে সমন্বয় করে জন্ম ও মৃত্যুসনদ দিচ্ছি। এখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আলাদা কিছু নেই। গত ১৫ আগস্ট থেকে সব কাজ জাতীয় সার্ভারের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ সিটির সার্ভারের কার্যক্রম এখন আর নেই।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

তাপসের একরোখা সিদ্ধান্ত ভুগছেন দক্ষিণ ঢাকাবাসী

আপডেট টাইম : ৩ ঘন্টা আগে

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের একরোখা সিদ্ধান্তের খেসারত দিচ্ছেন ৮০ হাজার নাগরিক। দেশের ১১টি সিটি করপোরেশন, সকল পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন সনদ দেয় সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। ডিএসসিসি দেয় নিজস্ব সার্ভারের মাধ্যমে। ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি থেকে নেওয়া জন্মসনদ দিয়ে পাসপোর্ট করা যাচ্ছে না। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতেও কাজ দিচ্ছে না দক্ষিণের সনদ। ফলে দক্ষিণের প্রায় ৮০ হাজার নাগরিক এই সনদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।

শুরু থেকেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যালয় ডিএসসিসির এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছিল। সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এ ব্যাপারে একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েও সমাধান করতে পারেননি। তাপস তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ঢাকা দক্ষিণের জন্ম ও মৃত্যুসনদ সংক্রান্ত কার্যক্রমের সব অর্থ ডিএসসিসির তহবিলে জমা দিতে হবে। এতে বাগড়া দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ যেভাবে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা দেয় সেভাবেই করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু নারাজ ছিলেন তাপস। এ জন্য ঢাকা দক্ষিণে তিন মাস জন্ম ও মৃত্যুসনদ রেজিস্ট্রেশন এবং বিতরণ বন্ধ ছিল। পরে নিজস্ব সার্ভার তৈরি করে ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর থেকে সনদ বিতরণ শুরু করে দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি থেকে বাচ্চার জন্মসনদ নিয়ে চরম সমস্যার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরেছেন শারমিন সুলতানা রত্না নামে একজন। তিনি সমস্যার কথা বর্ণনা করে লিখেছেন, ‘একটা সমস্যায় পড়েছি, বলতে পারেন অবহেলা করে সমস্যাটা তৈরি করেছি। বকাবকি না করে সমাধান দিন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে বাচ্চার জন্মনিবন্ধন করিয়েছি, যা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিচ্ছে না। বাচ্চাকে প্রি-ওয়ানে ভর্তির আবেদন করতে হবে। এখন কাউন্সিলররা না থাকায় নতুন করে আবেদনও করতে পারছি না।’

রত্না একা নন, এ রকম প্রায় ৮০ হাজার সনদ নিয়ে বিপদে পড়েছেন দক্ষিণের বাসিন্দারা। অনেকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ফেরত এসেছেন। তাপসের একরোখা সিদ্ধান্তে ভুগতে হচ্ছে তাদের।

দক্ষিণ সিটির তথ্যানুযায়ী ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর থেকে এ বছর গত ১৫ আগস্ট পর্যন্ত তারা নিজস্ব সার্ভারের মাধ্যমে ৭৮ হাজার ৯৫৬টি জন্মসনদ এবং ১ হাজার ৪৭১টি মৃত্যুসনদ প্রদান করেছে।

দক্ষিণ সিটির সনদ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়া নাগরিকদের বিষয়ে জানতে চাইলে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. যাহিদ হোসেন বলেন, নাগরিকদের দোষ নেই। তারা (ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ) বেআইনিভাবে কাজটা করেছিল। আমরা তাদের বার বার বলেছি- তোমরা এটা বন্ধ কর। তখন করেনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর অটোমেটিক্যালি তারা এসে পড়েছে। যে সকল নাগরিক দক্ষিণ সিটির সার্ভারে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন, আমরা সেই ডাটাগুলো ট্রান্সফার করব। কিন্তু দুটি ডাটার ফরমেট ভিন্ন। এ জন্য আমাদের টেকনিক্যাল টিম কাজ করছে। দক্ষিণের ডাটাকে জাতীয় সার্ভারে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ তাদের তথ্যগুলো আমাদের মূল সার্ভারে নেই। এটা করতে গেলে নিবন্ধন নম্বর পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। সেটা আবার গ্রাহককে জানাতে হবে। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তবে আমরা

চেষ্টা করছি। এমন কিছু করা যাবে না যেন তারা আবার ভোগান্তিতে পড়েন।

সরকার পরিবর্তনের পর গত ১৫ আগস্ট থেকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নাগরিকরাও জাতীয় সার্ভারের মাধ্যমে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন করছেন। তখন থেকে যারা নিয়েছেন তাদের সমস্যা হচ্ছে না। জাতীয় সার্ভারে নতুন করে যুক্ত হওয়ার পর ১৫ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত দক্ষিণ সিটির প্রায় ২৩ হাজার জন্মনিবন্ধন হয়েছে বলে জানা গেছে।

ডিএসসিসিতে মোট ৭৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ওয়ার্ডের বাসিন্দার মধ্যে যারা ডিএসসিসির সার্ভার থেকে জন্ম ও মৃত্যুসনদ নিয়েছেন তারা তা কাজে লাগাতে পারছেন না।

জানা গেছে, স্বতন্ত্র সার্ভারের মাধ্যমে নিবন্ধন সেবা চালু করার পর ১৫ আগস্ট থেকে আবার জাতীয় সার্ভারের মাধ্যমে কাজ চলছে। ডিএসসিসি তাদের যঃঃঢ়ং://নফৎরং.ফংপপ.মড়া.নফ এই সার্ভারের মাধ্যমে নিবন্ধন করত। অন্যদিকে সারাদেশে যে সার্ভারে নিবন্ধন হয়, সেটা হচ্ছে যঃঃঢ়ং://নফৎরং.মড়া.নফ।

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের ফি পরিশোধে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু হয় গত এপ্রিল মাসে। পরে পর্যায়ক্রমে ই-পেমেন্ট বা অনলাইনে ফি পরিশোধ সারাদেশে চালু করে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়। তবে এই ব্যবস্থা চালুর পর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা সরাসরি চলে যাওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজ বন্ধ রাখে ডিএসসিসি। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দাবি, এ খাতে ফি বাবদ আয় সিটি করপোরেশনের তফসিলভুক্ত আয় হিসেবে আলাদা কোডের মাধ্যমে নিজস্ব তহবিলে জমা হতে হবে অথবা তাদের যা ব্যয় হয় তার পুরোটা সরকারকে দিতে হবে। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনে তাদের বছরে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়। ফির টাকা তাদের তহবিলে জমা না হলে বছরে এই পরিমাণ টাকা প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে সরকারের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দক্ষিণ সিটির এক কর্মকর্তা জানান, জাতীয় সার্ভারে বিভিন্ন সময় ‘সার্ভার ডাউন’ বলে নাগরিকদের হয়রানি করা হতো। তাছাড়া সকল কাজ সিটি করপোরেশন করলেও অর্থ যেত সরকারি কোষাগারে। যেহেতু সিটি করপোরেশনের জনবল, কাগজ, কালি খরচ হয় তাই অর্থ তাদেরই পাওয়া উচিত। এ চিন্তা থেকেই মেয়র এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শুরু থেকেই ঝামেলা হচ্ছিল। এ জন্য সাবেক মেয়র পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সাথেও কথা বলেছিলেন। তিনি থাকলে হয়তো সমাধান করতে পারতেন।

কিন্তু তাপস ও সরকারি অন্য দপ্তরের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের মাঝে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ নাগরিকরা। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, আমরা জাতীয় সার্ভারের সাথে সমন্বয় করে জন্ম ও মৃত্যুসনদ দিচ্ছি। এখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আলাদা কিছু নেই। গত ১৫ আগস্ট থেকে সব কাজ জাতীয় সার্ভারের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ সিটির সার্ভারের কার্যক্রম এখন আর নেই।