ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেনাকুঞ্জে আলোচনার কেন্দ্রে খালেদা জিয়া

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এবার আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

দীর্ঘ এক যুগ পর বৃহস্পতিবার সেনাকুঞ্জের এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও ২০১৮ সালের পর তিনি এই প্রথম প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তার ভাষণে বলেন, খালেদা জিয়াকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে পেরে আমরা গর্বিত।

অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে বিএনপি নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানান তিন বাহিনীর প্রধান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেন। সশস্ত্র বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, আমলা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অনেকে তার সঙ্গে দেখা করে স্মৃতিচারণ করেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে তিনি ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে পৌঁছান। এ সময়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন তাকে অভ্যর্থনা জানান।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য নির্ধারিত আসনে বসেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার পাশেই বসেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা তার আসনে বসে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে কথা বলতে দেখা যায়। আগেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৌঁছান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়াকে অনুষ্ঠানে দেখে কেঁদে ফেলেন তিনি।

এর আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওয়ানা হন। ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান তার সঙ্গে ছিলেন। মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতার শুরুতেই খালেদা জিয়াকে অনুষ্ঠানে স্বাগত এবং অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া আজ এখানে আমাদের মধ্যে উপস্থিত আছেন। এক যুগ ধরে তিনি এই মহাসম্মিলনীতে অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। আজকে সুযোগ পেয়েছেন। আপনাকে এই সুযোগ দিতে পেরেছি বলে আমরা সবাই আনন্দিত এবং গর্বিত।

ড. ইউনূস বলেন, শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও এই বিশেষ দিবসে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই অনুষ্ঠানে আপনাকে বিশেষভাবে স্বাগত জানাচ্ছি। এ সময় খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছাত্র নেতাদের কুশল বিনিময় : অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এ সময়ে তারা কুশল বিনিময় এবং খালেদা জিয়ার খোঁজখবর নেন। ছাত্র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং ছাত্রনেতা সারজিস আলম অন্যতম। বিএনপি চেয়ারপারসন জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

কুশল বিনিময় শেষে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনটি ছবি শেয়ার দিয়ে লেখেন, ‘আপনাকে এই সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।’

সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আবদুল মঈন খানসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির ২৬ নেতাকে সেনাকুঞ্জে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

কুশল বিনিময় করেন জামায়াতের আমির : সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

সেনাকুঞ্জে আলোচনার কেন্দ্রে খালেদা জিয়া

আপডেট টাইম : ১২ ঘন্টা আগে

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এবার আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

দীর্ঘ এক যুগ পর বৃহস্পতিবার সেনাকুঞ্জের এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও ২০১৮ সালের পর তিনি এই প্রথম প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তার ভাষণে বলেন, খালেদা জিয়াকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে পেরে আমরা গর্বিত।

অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে বিএনপি নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানান তিন বাহিনীর প্রধান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেন। সশস্ত্র বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, আমলা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অনেকে তার সঙ্গে দেখা করে স্মৃতিচারণ করেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে তিনি ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে পৌঁছান। এ সময়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন তাকে অভ্যর্থনা জানান।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য নির্ধারিত আসনে বসেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার পাশেই বসেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা তার আসনে বসে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে কথা বলতে দেখা যায়। আগেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৌঁছান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়াকে অনুষ্ঠানে দেখে কেঁদে ফেলেন তিনি।

এর আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওয়ানা হন। ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান তার সঙ্গে ছিলেন। মূল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতার শুরুতেই খালেদা জিয়াকে অনুষ্ঠানে স্বাগত এবং অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া আজ এখানে আমাদের মধ্যে উপস্থিত আছেন। এক যুগ ধরে তিনি এই মহাসম্মিলনীতে অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। আজকে সুযোগ পেয়েছেন। আপনাকে এই সুযোগ দিতে পেরেছি বলে আমরা সবাই আনন্দিত এবং গর্বিত।

ড. ইউনূস বলেন, শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও এই বিশেষ দিবসে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই অনুষ্ঠানে আপনাকে বিশেষভাবে স্বাগত জানাচ্ছি। এ সময় খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছাত্র নেতাদের কুশল বিনিময় : অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এ সময়ে তারা কুশল বিনিময় এবং খালেদা জিয়ার খোঁজখবর নেন। ছাত্র নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং ছাত্রনেতা সারজিস আলম অন্যতম। বিএনপি চেয়ারপারসন জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

কুশল বিনিময় শেষে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনটি ছবি শেয়ার দিয়ে লেখেন, ‘আপনাকে এই সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।’

সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আবদুল মঈন খানসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির ২৬ নেতাকে সেনাকুঞ্জে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

কুশল বিনিময় করেন জামায়াতের আমির : সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন।