জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে চায় নির্বাচন সংস্কার কমিশন। তবে এর আগেই নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার কাজ শেষ করতে চান বলে জানিয়েছেন কমিশনের সদস্য তোফায়েল আহমেদ।
আজ শনিবার দুপুরে টেলিভিশন সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা জানান।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘কমিশন যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তাতে স্থানীয় সরকারের পাঁচ স্তরের নির্বাচন ব্যয় অনেক কমে আসবে। বাঁচবে সময়। লাগবে অপেক্ষাকৃত অনেক কম জনবল।
নির্বাচনী রোডম্যাপ সংস্কার শেষ না করে স্থানীয় নির্বাচনে গেলে সংস্কার ঝুলে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন মোট পাঁচটি। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই পাঁচটির মধ্যে তিনটি নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের সমপর্যায়ের আয়োজন করতে হয়। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ এই তিন নির্বাচন দেশজুড়ে হয়। এখন যে অর্থে জেলা পরিষদ আছে সেটি কোনো নির্বাচনই না। এইমুহুর্তে যতো সংস্কার হচ্ছে সেগুলো না করে নির্বাচনে গেলে সংস্কার ঝুলে যাবে। কারণ আমাদের স্থানীয় সরকার কোনো সিস্টেম না। এটা কতগুলো প্রতিষ্ঠানের সমষ্টি। আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান আলাদা আলাদা আইন দিয়ে পরিচালিত হয়। কিন্তু ব্যাপক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নেই। এই সংস্কারের বড় কাজ হবে একটি স্থানীয় সরকারের একটি ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়া। আইয়ুব খান আমলের সিস্টেম মাথায় রেখে ইউনিয়ন পরিষদ হয়েছিল। ইউনিয়ন পরিষদ হওয়ার ১০ বছর পরে উপজেলা পরিষদ হয়েছে। উপজেলা পরিষদ হওয়ার প্রায় আরও ১০ বছর পর জেলা পরিষদ হয়েছে। সিটি করপোরেশন বারবার পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কমপ্রিহেনসিভ লোকাল গভর্মেন্টের জন্য এখন মোক্ষম সময়। কারণ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকারের বেশিরভাগ সংগঠন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন নতুন ছবি আঁকার সময়। একটি কমপ্রিহেনসিভ আইন হবে, তার ভেতরে সব প্রতিষ্ঠান চলে আসবে এবং একটি শিডিউল দিয়ে সবগুলো নির্বাচন করতে পারবো। পাশের রাজ্যগুলোতেও সরাসরি মেয়র, চেয়ারম্যান নির্বাচন হয় না। পার্লামেন্টারি সিস্টেমে কাউন্সিলর এবং মেম্বার নির্বাচিত হয়। কাউন্সিলর এবং মেম্বাররা পরিষদে গিয়ে এক্সিকিউটিভ কমিটি নির্বাচন করেন। দেশেও সে ধরনের সিস্টেম চালু করতে চাই। তাহলে নির্বাচন অনেক ব্যয় ও সময়সাশ্রয়ী হবে। এতো জনবল লাগবে না।’
এর আগে সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রথমপর্বে টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কমিশন। বিকেলে মতবিনিময় করবে নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে ধারাবাহিক সংলাপে রয়েছে এই কমিশন। প্রথম ধাপে কমিশন মতবিনিময় করেছে প্রিন্ট মিডিয়ার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সম্পাদকদের সঙ্গে।